খেলার মাঠে বসেছিল জুয়ার আসর। সেই সঙ্গে মদও বিক্রি করা হয়। বাসিন্দারা দুর্ঘটনার পরেই এই অভিযোগ তুলেছিলেন। এ বার একই অভিযোগ তুললেন জেলা পরিষদের কর্মধ্যক্ষ তথা জেলা তৃণমূল নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এ দিকে ওই মাঠ নিয়ে মামলা চলার মধ্যেও কী ভাবে ওই মাঠে খেলা চলল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে এলাকায়।
মানবাজার থানার মাকড়কেন্দি গ্রামের মাঠে শনিবার ও রবিবার আন্তঃরাজ্য ফুটবল টুর্নামেন্ট চলে। রবিবার বেলায় বাঁশের গ্যালারি ভেঙে প্রসেনজিত্ মাহাতো নামে এক বালক মারা যায়। বাঁশ ও কাঠের তলায় চাপা পড়ে ১৯ জন আহত হন। এর জেরে ক্ষিপ্ত দর্শকেরা মাঠে তাণ্ডব চালান। ওই রাতেই পুলিশ সংস্থার সম্পাদক পরশুরাম মাহাতোকে গ্রেফতার করে তাঁর বিরুদ্ধে ৩২৩, ৩২৫, ৩০৪ ধারার মামলা রুজু করেছে। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পর জানতে পেরেছে, মাত্র দু’সপ্তাহের মধ্যে গ্যালারিটি তৈরি করা হয়েছিল। অনভিজ্ঞতা ও গ্যালারি তৈরির দক্ষ কর্মী না থাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। মূল খুঁটিগুলি আলগা ছিল। মাটির তেমন গভীরে পোঁতা হয়নি। ফলে অনেক বেশি দর্শক গ্যালারিতে উঠে পড়ায় তা ভেঙে পড়ে।
সোমবার মানবাজার থানায় গিয়ে স্থানীয় বিধায়ক সন্ধ্যারানি টুড বিনাঅনুমতিতে অতবড় জমায়েত হচ্ছে জেনেও পুলিশ কেন চুপ করে ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন করেন। পরে তিনি বলেন, “পুলিশ দুর্ঘটনার আগে ব্যবস্থা নিলে হয়তো দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।” তাঁর সঙ্গেই ছিলেন সুজয়বাবু। তিনি অভিযোগ করেন, “ওই মাঠে ভিনরাজ্য থেকে ঝান্ডি (এক প্রকার জুয়া) দল এসেছিল। পুলিশ তাদের সাথেও রফা করেছিল।” পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীরকুমার বলেন, “আমরা তদন্তে সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখছি।”
এ দিকে, স্থানীয় ভালুবাসা গ্রামের বাসিন্দা বিধান রায় মাহাতো, বিশ্ববিকাশ রায় মাহাতো দাবি করেছেন, “তিন বছর আগে মানভূম খেড়িয়া কল্যাণ সমিতির নামে গ্রামেরই বাসিন্দা পরশুরাম মাহাতো এবং আরও কয়েকজন আমাদের পৈতৃক ওই মাঠে খেলা করাতে চেয়েছিলেন। ভাল উদ্যোগ বলে বাবা-কাকা আপত্তি করেননি। কিন্তু পরে জানা যায়, ওখানে ঝান্ডি ও মদের আসর বসানো হয়। পরের বছর খেলা করাতে গেলে আমরা আপত্তি জানাই। আপত্তি অগ্রাহ্য করায় মামলা করি। ওই মামলা এখনও চলছে।” আয়োজক সংস্থার কর্তারাও মামলার কথা মেনে নিয়েছেন। তবে জুয়া বা মেশার আসর বসার কথা মানতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy