বৃহস্পতিবার সিমলাপালে ছবিটি তুলেছেন উমাকান্ত ধর।
প্রচারের দিন যত গড়াচ্ছে, ধীরে-ধীরে তত পোক্ত হচ্ছে শ্রীমতী দেববর্মার ‘হোমওয়ার্ক’। প্রথমে যেখানে শুধু পরিচয়-পর্ব চলছিল, সেখানে এ বার চুঁইয়ে ঢুকতে রাজনৈতিক কথাও।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা নাগাদ সারেঙ্গার মিশন ময়দানে কর্মিসভা করতে এসেছিলেন মুনমুন সেন। গত দু’দিনে যেমন বারবার মা সুচিত্রা সেনের কথা বলেছেন, এ দিনও তার ব্যত্যয় হয়নি। কিন্তু জঙ্গলমহলের সভায় এ দিন ঢুকে পড়ল দু’টাকা কেজি চাল বা ছাত্রীদের সাইকেলের প্রসঙ্গও।
সারেঙ্গার সভামঞ্চ থেকে শ্রীমতী বললেন, “রাতারাতি কিছু হয় না, এক বছর-দু’বছরে নয়। তাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক করেছেন।” সরকারের সাফল্য বোঝাতে গিয়ে কথা তুললেন সাইকেলে চেপে মেয়েরা শাড়ি পরে, সালোয়ার কামিজ পড়ে স্কুলে যাচ্ছে (ছাত্রীদের সাইকেল দেওয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতার অন্যতম কর্মসূচি ছিল)। দু’টাকা কেজি দরে গরিব মানুষ চাল পাচ্ছে। এলাকার উন্নতি হচ্ছে। মাওবাদীদের কথাও বাদ গেল না। মুনমুনের মতে, “এক সময়ে এই এলাকার মানুষ মাওবাদীদের আতঙ্কে থাকতেন। এখন ওরা আর ভয় দেখায় না, কেউ ভয় পায় না, সবাই জানে যে আর বিপদ হবে না।”
দুপুরে সারেঙ্গায়, বিকেলে সিমলাপালের বিক্রমপুরে এবং সন্ধ্যায় তালড্যাংরায় তিনটি সভা করেন মুনমুন। প্রতিটি সভাতেই উপচে পড়েছিল ভিড়। রাস্তার মোড়ে-মোড়ে অসংখ্য মানুষ ভিড় করেছিলেন। সারেঙ্গা থেকে বিক্রমপুর, সেখান থেকে তালড্যাংরা, সর্বত্রই একই ছবি। তালড্যাংরায় মার্কেট কমপ্লেক্সের মাঠে রীতিমত ঠেলাঠেলি হয়েছে। বাড়ির-দোকানের ছাদে ওঠে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকেছে উৎসুক জনতা। বক্তৃতার মাঝে হাততালি পড়েছে অহরহ।
এত গরমেও ভিড় দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েন মুনমুন। তবে এত দিন যে শুধু অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে হাজির করে এসেছেন, এ দিন যেন তার থেকে কিছুটা তফাতে গিয়ে রাজনৈতিক সত্ত্বাটা বেরিয়ে আসে। সারেঙ্গায় মুনমুন জানান, আগে ঠিক এই মাঠেই যাত্রা করতে এসেছেন। কিন্তু সে দিনের ভিড় থেকে এই ভিড় আলাদা। তাঁর কথায়, “যাত্রা করতে এসে এত লোক দেখিনি। কিন্তু ভোট চাইতে এসে দেখছি এত ভিড়! এলাকায় শান্তি ফিরেছে, তাই মানুষ নির্ভয়ে আসছেন। এক জন মহিলা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কাজ করেছেন।”
এর পরেই জনতার উদ্দেশ্যে শ্রীমতির আর্তি, “আমার প্রতিপক্ষকে ন’বার সুযোগ দিয়েছেন, এ বার আমাদের একটু সুযোগ দিন। কাজ করব, অনেক কাজ হবে, অনেক উন্নতি হবে। একটা ভোট শুধু আমাকে দেবেন, জোড়াফুলে দেবেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেবেন।” যা শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে চওড়া হাসেন এলাকার এক প্রবীণ নেতা “শুধু মহানায়িকার মেয়ে হয়েই থেকে যাচ্ছেন না আমাদের প্রার্থী। আস্তে-আস্তে রাজনীতির পাঠটাও রপ্ত করে নিচ্ছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy