Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
সাঁওতালডিহি কোল ওয়াশারি

অন্য কয়লা আসছে কেন, বিক্ষোভ

ভারত কোকিং কোল লিমিটেডের (বিসিসিএল) অধীন সাঁওতালডিহির ভোজুডি কোল ওয়াশারিতে শুক্রবার বিক্ষোভ দেখাল শ্রমিক সংগঠনগুলির যুক্ত মঞ্চ। তাদের অভিযোগ, ঠিকা শ্রমিকদের বর্ধিত হারে মজুরি দিচ্ছে না কোল ওয়াশারি কর্তৃপক্ষ এবং ‘পরিকল্পিত ভাবে’ ওয়াশিরি বন্ধ করার চেষ্টা করছে বিসিসিএল। বিক্ষোভের পরে সংগঠনগুলির তরফে কোল ওয়াশারির প্রজেক্ট অফিসারকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিসিসিএল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাঁওতালডিহি শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:২৫
Share: Save:

ভারত কোকিং কোল লিমিটেডের (বিসিসিএল) অধীন সাঁওতালডিহির ভোজুডি কোল ওয়াশারিতে শুক্রবার বিক্ষোভ দেখাল শ্রমিক সংগঠনগুলির যুক্ত মঞ্চ। তাদের অভিযোগ, ঠিকা শ্রমিকদের বর্ধিত হারে মজুরি দিচ্ছে না কোল ওয়াশারি কর্তৃপক্ষ এবং ‘পরিকল্পিত ভাবে’ ওয়াশিরি বন্ধ করার চেষ্টা করছে বিসিসিএল। বিক্ষোভের পরে সংগঠনগুলির তরফে কোল ওয়াশারির প্রজেক্ট অফিসারকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিসিসিএল।

ঝাড়খণ্ড সীমানায় রয়েছে এই কোল ওয়াশারি। ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন খনি থেকে কয়লা এনে এখানে পরিশোধন করে সেই কয়লা বিসিসিএল বিক্রি করে ইস্পাত কারখানা ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে। কোকিং কোল নামের এই উন্নতমানের কয়লা এনে এখানে পরিশোধন করার পরে তিনটি পর্যায়ের কয়লা মেলে। তার মধ্যে ‘ওয়াশ কয়লা’ পাঠানো হয় ইস্পাত কারখানায়। ‘মিডলিং’ কয়লা যায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে। আর তৃতীয় শ্রেণির ‘রিজেকশন’ কয়লা স্থানীয় ভাবে কয়লা ডিপোগুলিতে বিক্রি করে বিসিসিএল। এই ‘রিজেকশন’ কয়লার উপরেই ভরসা করে চলে রঘুনাথপুর মহকুমা-সহ পুরুলিয়ার জেলার বিভিন্ন ইটভাটা ও হার্ডকোক কারখানাগুলি। অভিযোগ, বর্তমানে এই কোল ওয়াশারিতে কোকিং-এর বদলে নন কোকিং কোল নিয়ে আসা হচ্ছে। সেই কয়লা পরিশোধন করে পাঠানো হচ্ছে বিদ্যুৎকেন্দ্রে। কিন্তু কোকিং কোল না আসায় মিলছে না ‘রিজেকশন’ কয়লা। ফলে, সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং কয়লার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরা।

সাঁওতালডিহির কোল ওয়াশারিকে বাঁচিয়ে এলাকার আর্থিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই শুক্রবার আন্দোলনে নামা হয়েছে বলে দাবি শ্রমিক সংগঠনগুলির। ইতিমধ্যেই ওয়াশারির এআইটিইউসি, সিআইটিউ, আইএনটিইউসি এবং জেএমএস-- এই চার শ্রমিক সংগঠন মিলে তৈরি করেছে ‘ভোজুডি কোল ওয়াশারি সংগ্রামী যুক্ত মোর্চা’। এ দিন এই মোর্চার উদ্যোগেই বিক্ষোভ হয়। যুক্ত মোর্চার অভিযোগ, বিসিসিএল ‘পরিকল্পিত ভাবে’এই ওয়াশারি বন্ধ করার রাস্তায় হাঁটছে। সেই কারণেই ওয়াশারির গুরুত্ব কমিয়ে দিয়ে এখানে নন কোকিং কোল পাঠানো হচ্ছে। তাদের আরও দাবি, বিসিসিএল কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনগুলির মধ্যে আলোচনায় আগেই স্থির হয়েছিল, ওয়াশারির ঠিকা শ্রমিকরা বর্ধিত হারে মজুরি পাবেন। কিন্তু পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও সেই মজুরি তাঁরা পাচ্ছেন না।

যুক্ত মোর্চা তথা এআইটিইউসি-র নেতা দিলীপকুমার মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “এই কোল ওয়াশারির উপরে এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়ন নির্ভরশীল। অথচ, বিসিসিএল কর্তৃপক্ষ ধাপেধাপে ওয়াশারি বন্ধ করতে চাইছেন। সেই কারণেই ওয়াশারির গুরুত্ব কমাতে এখানে কোকিং কোল পাঠানো বন্ধ করা হয়েছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে গোটা অঞ্চলে।” সিটুর পুরুলিয়ার জেলা সভাপতি নিখিল মুখোপাধ্যায় বলেন, “একটা কোল ওয়াশারি যেখান থেকে মূল আয় করে, সেই ওয়াশ কোল তৈরির প্রক্রিয়াও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে এখানে। বিসিসিএল কর্তৃপক্ষ এই ওয়াশারি বন্ধ করার চক্রান্ত করছেন বলেই এই ওয়াশারির গুরুত্ব কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”

বিসিসিএল কর্তৃপক্ষর অবশ্য দাবি, ঝাড়খণ্ডে বিসিসিএলের কয়লাখনিগুলিতে স্থানীয় সমস্যার জন্য কোকিং কোল পাওয়া যাচ্ছে না বলেই সাঁওতালডিহিতে সেই কয়লা পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। সাঁওতালডিহির কোল ওয়াশারির প্রজেক্ট অফিসার রাজেন্দ্রপ্রসাদ যাদব বলেন, “এই ওয়াশারি বিসিসিএল কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দিতে চাইছেন বলে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তার কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই। আসলে ধানবাদে বিসিসিএলের যে খনিগুলিতে ওই ধরনের কয়লা মেলে, কিছু সমস্যার জন্য সেখানে কয়লা তোলা সম্ভব হচ্ছে না বলেই কোকিংয়ের বদলে আমরা নন কোকিং কোল এনে বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ করছি।” শ্রমিকদের বর্ধিতহারে মজুরির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

santaldih coal bccl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE