Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

গুলি-কাণ্ডে এলাকার জামাই গ্রেফতার

পুলিশের দাবি, সোমবার রাতে ঝাড়খণ্ডের গামারিয়া থেকে গ্রেফতার করেছে অভিযুক্ত রাজকুমার মাহাতোকে।

আদালতে অভিযুক্ত। নিজস্ব চিত্র

আদালতে অভিযুক্ত। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা  
নিতুড়িয়া শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৪৫
Share: Save:

অভিযুক্ত নিতুড়িয়ার গুলিবিদ্ধ দু’জনের পূর্ব-পরিচিত বলে আগেই দাবি করেছিল পুলিশ। দু’জনের সঙ্গে কথা বলে ওই ব্যক্তি সম্পর্কে প্রাথমিক কিছু তথ্যও এসেছিল তদন্তকারীদের হাতে। কিন্তু তাকে গ্রেফতার করা যাচ্ছিল না। অবশেষে সেই গুলি-কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল নিতুড়িয়া থানার পুলিশ।

পুলিশের দাবি, সোমবার রাতে ঝাড়খণ্ডের গামারিয়া থেকে গ্রেফতার করেছে অভিযুক্ত রাজকুমার মাহাতোকে। পুলিশ জানিয়েছে, পেশায় গাড়ি চালক রাজকুমার ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলা জেলার গামারিয়া এলাকার বাসিন্দা। তার শ্বশুরবাড়ি পারবেলিয়ায়। মঙ্গলবার তাকে রঘুনাথপুর আদালতে তোলা হয়। বিচারক ধৃতকে সাত দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে এ দিন ধৃত আদালতে দাবি করেছে, তাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ন’টা নাগাদ গুলিবিদ্ধ হন নিতুড়িয়ার পারবেলিয়া তিন নম্বর কলোনির বাসিন্দা কুড়ির মুকেশ হাড়ি ও ষোলো বছরের পারভেজ আনসারি। সন্ধ্যায় দুই বন্ধু গিয়েছিলেন গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে দামোদর নদের পাড়ে। সেখান থেকে কিছুটা দূরে ইটভাটায় দু’জনকে গুলিবিদ্ধ করা হয়। বর্তমানে তাঁরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি আছেন দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে।

ঘটনার পরেই পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া জানিয়েছিলেন যে দুষ্কৃতী ওই দু’জনকে গুলি করেছে, সে তাঁদের পুর্ব পরিচিত। সূত্রের খবর, তদন্ত শুরুর পরেই পুলিশ রাজকুমারের নাম পেয়েছিল। তবে দুই গুলিবিদ্ধের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাঁদের সঙ্গে বিশদে কথা বলতে পারছিলেন না তদন্তকারী অফিসার। তবে এক জন রাজকুমারের কথা জানিয়েছিলেন। তাঁর ফোন থেকেই রাজকুমারের ফোন নম্বরও পাওয়া যায়। সেই সূত্র ধরেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তবে গামারিয়াতে রাজকুমারকে পাওয়া যাচ্ছিল না।

সূত্রের খবর, তদন্তের জন্য দু’টি বিশেষ দল গঠন করেছিল পুলিশ। রাজকুমারের সন্ধানে সেই দল দু’টির সদস্যেরা গিয়েছিলেন বিহারের পটনা ও ঝাড়খণ্ডের টাটায়। কিন্তু সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত গামারিয়াতে ওই ব্যক্তি ফিরেছে খবর পাওয়ার পরেই সোমবার রাতে সেখানে অভিযান চালায় একটি দল।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কেন ওই দুই কিশোরকে গুলি করেছিল ধৃত যুবক? পুলিশের দাবি, রাজকুমারের শ্বশুরবাড়ি পারবেলিয়ায়। এখানে প্রায়শই সে আসত। সেই সুবাদেই পরিচয় হয়েছিল মুকেশ ও পারভেজের সঙ্গে। পরে ঘনিষ্ঠতাও বাড়ে।

জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, দুই কিশোরের সঙ্গে রাজকুমারের বিবাদের শুরু টাকা দেওয়াকে কেন্দ্র করে। কিছু কেনার জন্য দু’দফায় মুকেশ ও পারভেজকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়েছিল রাজকুমার। কিন্তু দুই কিশোর টাকা নিয়েও সেই জিনিস দিচ্ছিল না। পুলিশের দাবি, ঘটনার আগে সন্ধ্যায় রাজকুমারই পাড়ার ক্লাবে মুকেশের খোঁজে গিয়েছিল। সেখান থেকেই সে জানতে পারে, মুকেশ ও পারভেজ দামোদরের পাড়ে রয়েছে। কিছু পরে সেখানে হাজির হয় রাজকুমার।

জেলা পুলিশের ওই আধিকারিকের দাবি, ‘‘টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে বচসা বাধে। সেই সময়েই মুকেশ ও পারভেজকে গুলি করেছিল রাজকুমার।” তবে ঘটনায় ব্যবহৃত হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটি ধৃত ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, রাজকুমারকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করে আগ্নেয়াস্ত্রটির সন্ধান যেমন করা হবে, তেমনই কী কেনার জন্য সে ওই দু’জনকে টাকা দিয়েছিল— তাও জানার চেষ্টা করা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Shot At Nituria
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy