Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

অটোর উপরে ভাঙল দেওয়াল, মৃত দুই

রঘুনাথপুর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বালিচুড়ার বাসিন্দা বছর তিরিশের সোনু খান রঘুনাথপুর-আদ্রা রুটে অটো চালান। এ দিন সকাল থেকেই টানা বৃষ্টি হওয়ায় একটু দেরি করে ন’টা নাগাদ অটো নিয়ে রঘুনাথপুরের স্ট্যান্ডে যাচ্ছিলেন তিনি।

ঘটনাস্থল: রঘুনাথপুরের নন্দুয়াড়া এলাকায়। —নিজস্ব চিত্র।

ঘটনাস্থল: রঘুনাথপুরের নন্দুয়াড়া এলাকায়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৭ ০৭:১০
Share: Save:

বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় জল-কাদায় ভরা গর্তে আটকে গিয়েছিল অটোর চাকা। আটোচালকের ফোন পেয়ে এগিয়ে এসেছিলেন বন্ধু ও পড়শিরা। সবাই মিলে অটোটিকে ঠেলে বের করতে যখন ব্যস্ত, তখনই পাশের বড় একটি দেওয়াল হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল তাঁদের উপরে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল এক কিশোর ও অটোর মালিক। জখম হলেন পাঁচ জন। তাদের মধ্যে একজন মহিলা।

মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে রঘুনাথপুরের নন্দুয়াড়া এলাকায় ডমন সায়র নামের পুকুরের পাশে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হল ফৈয়াজ খান (১২)ও অটোর মালিক সিকান্দার মির্জা (৩০)। মৃত ও আহতরা সকলেই রঘুনাথপুর শহরের বাসিন্দা।

রঘুনাথপুর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বালিচুড়ার বাসিন্দা বছর তিরিশের সোনু খান রঘুনাথপুর-আদ্রা রুটে অটো চালান। এ দিন সকাল থেকেই টানা বৃষ্টি হওয়ায় একটু দেরি করে ন’টা নাগাদ অটো নিয়ে রঘুনাথপুরের স্ট্যান্ডে যাচ্ছিলেন তিনি। ডমন সায়রের পাশের রাস্তা এমনিতেই সংকীর্ণ। টানা বৃষ্টিতে পুকুরের জল রাস্তায় উঠে এসে পড়ায় পাশের দেওয়াল ঘেঁষে অটো চালাচ্ছিলেন তিনি। কাঁচা রাস্তার মাঝামাঝি গর্তে আটকে যায় অটোর পিছনের চাকা।

নিজে প্রথমে চেষ্টা করেও অটোটি সরাতে না পেরে ফোন করে বালিচুড়া থেকে বন্ধুদের ডাকেন। সবাই মিলে অটোটিকে কাদা থেকে বের করার সময় পাশের প্রায় ৩০ ফুট চওড়া, পনেরো ফুট উঁচু দেওয়ালটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অটোর মালিক তথা চালক সোনু খান, শেখ সইরুল, সাহেব খান, গুড্ডু খান। দুর্ঘটনার সময়ে ডমন সায়রে স্নান করতে যাছিলেন নন্দুয়াড়ার বাসিন্দা মালতি বাউরি নামের বছর চল্লিশের এক মহিলা। দেওয়াল চাপা পড়ে তিনিও আহত হন। আহতদের সবাইকে ভর্তি করানো হয় রঘুনাথপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। পরে সোনু, সাহেব ও গুড্ডুকে পাঠানো হয় বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে।

রঘুনাথপুর হাসপাতালে অটো চালক সোনু আক্ষেপ করছিলেন, ‘‘দেরি হওয়ায় তাড়াতাড়ি যাচ্ছিলাম। জল-কাদায় গর্তটা বুঝতে পারিনি। তার মধ্যে দুটো টাকা আটকে গিয়েছিল। কিন্তু ভাবতে পারনি, এর পরে কী ভয়ানক ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। এমন জানলে কে ওঁদের ডাকত?’’

দুর্ঘটনা সময়েই অদূরে রাস্তা পরিষ্কার করছিলেন কয়েকজন যুবক। পুকুরে স্নান করতে এসেছিলেন বেশ কয়েকজন। দেওয়াল ভেঙে পড়ার শব্দে তাঁরা ছুটে যান। তাঁদের মধ্যে শিবাশিস মাজি বলেন, ‘‘হঠাৎ হুড়মুড়িয়ে কিছু ভেঙে পড়ার জোরালো আওয়াজের পরেই আর্তনাদের শব্দ কানে আসে। ছুটে গিয়ে দেখি অটোর উপরে পুরো দেওয়ালটাই ভেঙে পড়েছে।’’ তাঁরা উদ্ধারে নামেন। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছন দমকলের কর্মী ও পুলিশ। সবাই মিলে তাঁদের উদ্ধার করেন। কিন্তু ততক্ষণে মৃত্যু হয় দু’জনের। ঘটনাস্থলে যান মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর) দেবময় চট্টোপাধ্যায় ও এসডিপিও অভিজিৎ চৌধুরী।

আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের জন্য পুরসভার তরফে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করা হবে।” শহরের বহু পুরনো দেওয়ালগুলি কী অবস্থায় আছে, তার মধ্যে কতগুলো বিপজ্জনক তা পুরসভা খতিয়ে দেখবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন পুরপ্রধান।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy