ডাকঘর মোড় থেকে শ্রীনিকেতনের কালিসায়র মোড় পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তায় চলাচলের জন্য তৈরি হবে সাইকেল ট্র্যাক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে গাড়ির দূষণ রুখতে সাইকেল চালানোয় বিশেষ উৎসাহ দেবে কর্তৃপক্ষ। চালু করা হবে ‘পাবলিক সাইকেল সেরিং সিস্টেম’ নামে একটি প্রকল্প। যার মাধ্যমে এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে যাওয়ার জন্য সাইকেল মিলবে। সোমবার রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ওই রাস্তা পাওয়ার পরে বিশ্বভারতী এমনই সব প্রকল্প নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে।
এত দিন ছিল ডাকঘর মোড় থেকে শ্রীনিকেতনের কালিসায়র মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি ছিল রাজ্যের পূর্ত দফতরের হাতে। শান্তিনিকেতনের উপাসনা মন্দির, ছাতিমতলা, উত্তরায়ণ কমপ্লেক্স ও রবীন্দ্রভবন, কলা ও সঙ্গীত ভবন সবই এ সমস্ত জায়গাগুলিই পড়ে এই রাস্তার ধারে। রাস্তার দু’ ধারে রয়েছে প্রখ্যাত শিল্পীদের বহু শিল্পকর্ম। ফি দিন হাজার পড়ুয়া ও দেশি-বিদেশি পর্যটক আনাগোনা করেন ওই রাস্তায়। এমন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার ওপর নানা যানবাহন চলাচলের ফলে দুর্ঘটনা যেমন হচ্ছিল তেমনই ধুলো ও ধোঁয়ায় শিল্পকর্ম নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করছিলেন বিশেষজ্ঞ মহল। দখল হয়ে যাচ্ছিল ওই রাস্তার নানা অংশ। কোনওরকম ব্যবস্থা নিতে হলে নির্ভর করতে হত স্থানীয় প্রশাসনের ওপর।
এখন বিশ্বভারতীর মালিকানায় ওই রাস্তা আসার ফলে, ওই রাস্তায় প্রয়োজনীয়ও ব্যবস্থা নিতে পারবে কর্তৃপক্ষ। ধুলো ও কালো ধোঁয়া থেকে বাঁচবে শিল্প-সামগ্রী। মোটর চালিত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণও হবে। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্ত বলেন, “মোটর চালিত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে আমরা ওই রাস্তায় সাইকেল ট্র্যাক বানাচ্ছি। মানুষের স্বাভাবিক চলাচলে যাতে অসুবিধে না হয়, তার জন্যও থাকছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।”
বিশ্বভারতীর যুগ্ম কর্মসচিব (সম্পত্তি) অশোক মাহাত বলেন, “ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের উদ্যোগে ওই রাস্তায় সাইকেল ট্র্যাক বানানো হবে। দুর্ঘটনা রোখা, শিল্পকর্ম এবং গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দূষণ থেকে বাঁচানো-সহ আশ্রমিক পরিবেশ অটুট থাকবে।” বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, আপাতত যান নিয়ন্ত্রণ করে, ওই রাস্তায় দুটি সাইকেল ট্র্যাক বানানো হবে। কালিসায়র মোড়ের দিকে যাওয়া এবং ডাকঘর মোড়ের দিকে ফেরার জন্য দুটি আলাদা ট্র্যাক থাকবে। একই রাস্তার ওপর পথচলতি মানুষ, যানবাহন এবং সাইকেল ট্র্যাকের মধ্যে যাতে কোনও অসুবিধে না হয় তার জন্য ইতিমধ্যেই রাস্তায় প্রয়োজনীয় সম্প্রসারণের আলোচনা হয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে। বিশ্বভারতীর বিদ্যালয় স্তরের পড়ুয়াদের বাইক চালানো আগেই নিষিদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতীর মধ্যে বিভিন্ন ভবনে নানা কাজে আশা লোকজন এবং ইচ্ছুক দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য সাইকেলের ব্যবস্থা করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বিস্তর।
স্বপনবাবু বলেন, “ভারত সরকারের নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে আলোচনা হয়েছে। ‘পাবলিক সাইকেল সেরিং সিস্টেম’ নামে ওই প্রকল্প বিশ্বভারতী এলাকার মধ্যে চালু করা নিয়ে চিন্তা, ভাবনাও আমরা করছি।” কর্তৃপক্ষের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বিশ্বভারতীর বিভিন্ন মহল। কর্মীসভার দাবি, ‘‘সাধু উদ্যোগ। স্বাগতযোগ্য।” বিশ্বভারতীর অধ্যাপকদের একটি সংগঠন ভিবিউফার পক্ষে সম্পাদক বিকাশ চন্দ্র গুপ্তও স্বাগত জানিয়েছেন এই প্রস্তাব। প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের একাধিক সংগঠনও স্বাগত জানিয়েছে এমন উদ্যোগকে। কলাভবনের অধ্যাপক শিশির সাহানা বলেন, ‘‘খুবই ভাল উদ্যোগ। দীর্ঘ দিন আমরা সচেষ্ট হয়েছিলাম। বিদেশে আছে, এখানে হলে খুবই ভাল।’’ বাংলা বিভাগের ছাত্র সুপ্রিয় পাত্র বলেন, ‘‘শুধু ওই রাস্তায় নয়। গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পায়ে হেঁটে বা সাইকেলে যাতায়াত চালু করলে খুবই ভাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy