প্রায় সকলের পরনে কালো পোশাক। কারও কারও মুখে প্রতিবাদের চিহ্ন— কালো কাপড়ের মাস্ক। কালো রঙের প্রতীকী কফিনও রয়েছে কয়েক জনের কাঁধে। আর সেই সঙ্গে স্লোগান, ‘জাস্টিস ফর ইন্ডিজেনাস পিপ্ল’ (মূলবাসীদের ন্যায়বিচার)!
হিংসাবিধ্বস্ত মণিপুরেও এ বার পৌঁছে গেল ‘জাস্টিস’ স্লোগান। সৌজন্যে, ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম), আইটিএলএফ-সহ কুকি-জ়ো জনজাতিদের আরও কয়েকটি সংগঠন। আড়াই দশক আগে দিল্লিতে মডেল জেসিকা লালের খুনের মামলা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে ভারত জুড়ে উঠেছিল ‘জাস্টিস ফর জেসিকা’ স্লোগান।
বাম জমানায় তিলজলার যুবক রিজওয়ানুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনা, জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়ায় নাবালিকা আসিফাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরেও শোনা গিয়েছিল সেই স্লোগান। হালফিলে আরজি কর-কাণ্ডের পরেও একই স্লোগান শুনেছে বাংলা তথা গোটা দেশ। এ বার উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রথম বার শোনা গেল সেই ‘জাস্টিসের’ দাবি।
আরও পড়ুন:
গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে ধারাবাহিক ভাবে জাতিহিংসার ঘটনা ঘটে চলেছে মণিপুরে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলির মধ্যে রয়েছে পাহাড়ি এলাকার মিশ্র জনবসতি সম্পন্ন জেলা চূরাচাঁদপুর। সেখানেই সোমবার দেখা গিয়েছে জাস্টিসের দাবিতে কুকিদের এই মিছিল। গোষ্ঠীহিংসায় নিহত পরিজনদের স্মরণে নকল কফিন ছিল সেই মিছিলে। যদিও কুকি-জ়ো জনজাতিরা মণিপুরের মূলনিবাসী কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আদতে মায়ানমার এবং মিজ়োরাম থেকে মণিপুরের পাহাড়ে তাঁদের আগমন।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৩ মে জনজাতি ছাত্রদের কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত দুশোর বেশি সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।