Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ, ধৃত ৫৫

পুলিশ ও গ্রামবাসীর দ্বন্দ্বে দু’দিন ধরে তেতে উঠল সিমলাপাল ও লক্ষ্মীসাগর পোস্ট অফিস এলাকা। পুলিশ কর্মীদের উপর হামলা ও সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগে দু’দিনে ৫৫ জন গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রামবাসীও পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠি চার্জের পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন।

তাণ্ডব: সিমলাপালে ভাঙচুর চলে জনতার ভাড়া করে আনা বাসে। —নিজস্ব চিত্র।

তাণ্ডব: সিমলাপালে ভাঙচুর চলে জনতার ভাড়া করে আনা বাসে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিমলাপাল শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৭ ০১:৪১
Share: Save:

পুলিশ ও গ্রামবাসীর দ্বন্দ্বে দু’দিন ধরে তেতে উঠল সিমলাপাল ও লক্ষ্মীসাগর পোস্ট অফিস এলাকা। পুলিশ কর্মীদের উপর হামলা ও সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগে দু’দিনে ৫৫ জন গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রামবাসীও পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠি চার্জের পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন।

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার। লাগাতার লোডশেডিং-এর প্রতিবাদে সোমবার দিনভর এলাকার মানুষজন লক্ষ্মীসাগর পোস্ট অফিস মোড়ের সামনে সিমলাপাল-খাতড়া রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। পুলিশ অবরোধ তুলতে গিয়ে বারবার অবরোধকারীদের সঙ্গে আলোচনা চালালেও আন্দোলন থেকে সরেননি গ্রামবাসী। দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে। তারমধ্যেই পুলিশ কর্মীদের হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগে ওই রাতেই ন’জন গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার তাঁদের খাতড়া আদালতে তোলা হলে ধৃতেরা জামিন পাননি। তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়।

ঘটনা আরও গড়ায়। গ্রেফতারির প্রতিবাদে এ দিন গ্রামবাসী সিমলাপাল ব্লক অফিস ঘেরাও করে স্মারকলিপি দিতে যায়। অভিযোগ, সেই সময় ব্লক অফিসে মোতায়েন থাকা পুলিশ কর্মীদের উপরে গ্রামবাসী চড়াও হয়। ভাঙচুর চালানো হয় পুলিশের গাড়িতে। এই ঘটনায় একজন মহিলা কনস্টেবল জখম হন। তাঁকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। গ্রামবাসীর অভিযোগ, সিভিক ভলান্টিয়াররা গ্রামবাসীর উপর নির্বিচারে লাঠি চালায়। গ্রামবাসীর গাড়িও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ।

তেতে উঠে উত্তেজিত জনতা সিমলাপাল থানার সামনে জড়ো হয়ে পুলিশ কর্মীদের দিকে ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করে। বেশ কিছুক্ষণ সিমলাপাল থানার সামনে পুলিশ ও জনতা খণ্ড যুদ্ধ চলে। পুলিশকর্মীরা ঘটনাস্থলেই জনা কুড়ি গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন গ্রামবাসী বলেন, “দিনের পর দিন টানা লোডশেডিং হচ্ছে এলাকায়। এরই প্রতিবাদে পথ অবরোধে নেমেছিলাম আমরা। পুলিশ জোর করে আমাদের অবরোধ তুলতে চেষ্টা করছিল। এ দিনও পুলিশ কর্মীরা ব্লক অফিসে আমাদের উপরে চড়াও হয়।” জেলা পুলিশ সুপার সুখেন্দু হিরা বলেন, ‘‘এ দিনের গণ্ডগোলে ৪৬ জনকে ধরা হয়েছে।’’

তবে দুপুরে সিমলাপাল থানায় গ্রামবাসী ও পুলিশের মধ্যে আলোচনার পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। ধৃত গ্রামবাসীদের আজ বুধবার খাতড়া আদালতে তোলার কথা। এই ঘটনার জন্য গ্রামবাসীর পক্ষের আইনজীবী চঞ্চল রায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, “গোটা ঘটনায় পুলিশ ধৈর্যহীনতার পরিচয় দিয়েছে।” খাওতড়ার এসডিপিও বিশপ সরকার বলেন, “পুলিশকর্মীদের উপর হামলা ও সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার অভিযোগে কিছু গ্রামবাসীকে ধরা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Simlapal Electricity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE