পুরভোটের ফল প্রকাশের পরে বামফ্রন্টের পাশাপাশি তাদের দলের অস্তিত্ব নিয়েও জেলা জুড়ে প্রশ্ন উঠেছিল। হারের ধাক্কা সামল দিতে এবং সংগঠনকে নতুন করে সাজাতে দুই নেতাকে বহিঃষ্কার করলেন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি। শনিবার দুপুরে আইএনটিইউসি প্রভাবিত রামপুরহাট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সংগঠনের অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ও আনারুল হক নামে দুই নেতাকে বহিষ্কারের কথা জানান জিম্মি। কারণ, হিসেবে তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন, তৃণমূলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পুরসভা ভোটের সময় দলীয় প্রার্থীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করিয়েছেন, আর এক জন তৃণমূল নেতারা বুথ দখল করছে দেখেও নীরব ভূমিকা পালন করেছেন।
প্রসঙ্গত, রাজ্যে পালা বদলের সাঙ্গে সঙ্গে হয়তো হারানো মাটি আবার ফিরে পাবে কংগ্রেস। এমনটাই আশা করেছিলেন জেলার রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে কংগ্রেসের অনেক নেতাকর্মীই। কিন্তু ফল প্রকাশের পরে তার উল্টো ছবি ধরা পড়েছে। চারটি পুরসভার মোট ৭৩টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র সাতটি আসন। অন্য দিকে, বিজেপি পেয়েছে ন’টি আসন। এই ফলের পরে যোগ্য নেতৃত্বের অভাব রয়েছে কি না তা নিয়ে দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দলের এআইসিসি’র সদস্য সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায় তো বলেই ফেলছেন, ‘‘আমাদের জেলার অস্তিত্বও চরম সঙ্কটে। তার প্রধান কারণ, অবশ্যই যোগ্য নেতৃত্বের অভাব। পাশাপাশি ক্ষমতার লোভ, আখের গোছানো থেকে শাসক দলের চোখ রাঙানির ভয় এ সব তো আছেই।’’
হয় তো সে কারণেই বিরুপ নেতাদের শিক্ষা দিতে দুই নেতাকে বহিষ্কার করলেন জেলা সভাপতি। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা দলের রামপুরহাট মহকুমা সভাপতি গোপালচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় টাকার বিনিময়ে দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। আগামী তিনপুরুষ তাঁর পরিবার থেকে কাউকে প্রার্থী তো কংগ্রেস করবেই না, অন্য রাজনৈতিক দলও তা ভাববে।’’
কী বলছেন জেলা কংগ্রেসের সভাপতি জিম্মি। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল প্রার্থীকে সুবিধা করে দেওয়ার জন্য ৯ নম্বর তাঁর বোনকে প্রার্থী করেও পরে কংগ্রেসের রামপুরহাট কমিটির সদস্য তথা ১ ব্লক প্রাক্তন সভাপতি সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় টাকা নিয়ে নাম তুলে নিয়েছেন। অন্য দিকে, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী আনারুল হক তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদও করেনি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমরা মনে করেছি তৃণমূলের কাছে বিকিয়ে যাওয়ার জন্য ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে আমাদের প্রার্থী কম ভোট পেয়েছেন। তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে তো বটেই পাড়ার কিছু শুভবুদ্ধি সম্পন্ন লোকের সঙ্গেও বেইমানি করেছেন। কিছুদিনের মধ্যেই যখন দু’জনেই তৃণমূলে যোগ দেবেন, তখনই আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার হয়ে যাবে। দলবিরোধী কাজের তাঁদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’’
বহিষ্কৃত নেতা সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার কিছু বলার নেই। কংগ্রেস দলটা তো কারও পারিবারিক সম্পত্তি নয়।’’ তিনি পাল্টা দাবি করেছেন, ‘‘আমি যে টাকা নিয়েছি তা প্রমাণ করে দেখাক। পারিবারিক কারণে বোনকে প্রার্থী পদ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছিলাম।’’ অন্য দিকে, আনারুল ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ‘‘প্রথমত আমাকে শো-কজ না করে বহিষ্কার করা হয়েছে এতে আমি দুঃখ পেয়েছি। তবে আমার যদি কোনও দলের সঙ্গে কোনওরকম আঁতাত থাকে তা হলে সেটা প্রমাণ করে দেখাক। আসলে জেলা সভাপতিকে একদিনের জন্য আমার প্রচারে আমি পাইনি। সে জন্য তাঁর কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলাম। তাই তিনি আমার প্রতি বদলা নিলেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy