রবিবার রামপুরহাটের কর্মিসভায় আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।
যত হুমকি বীরভূমে!
প্রথমে পুলিশের উপরে বোম মারা বা নির্দল প্রার্থীদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া দিয়ে যার শুরু। তার পরে শোনা গেল হাত কেটে নেওয়ার হুমকি। আর এ বার একেবারে চোখ গেলে দেওয়ার হুমকি!
তবে এই হুমকির কথা তৃণমূলের অনুব্রত মণ্ডল বা বিজেপি-র দুধকুমার মণ্ডলের মুখে শোনা যায়নি। বরং চোখ গেলে দেওয়ার কথা বলে বিতর্কে এ বার রাজ্যের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিমন্ত্রী, রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুব্রত বা দুধকুমারের মতো তিনিও হুমকি দিয়েছেন দলের কর্মিসভায়।
পুরভোটের প্রস্তুতিতে রবিবার রামপুরহাটের রক্তকরবী মঞ্চে দলীয় কর্মীদের নিয়ে সভা করেন আশিসবাবু। ভোটে জেতার পরে এলাকার উন্নয়নের দিকে নজর না দেওয়ার অভিযোগ দলের বেশ কিছু কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে উঠেছে। সেই প্রসঙ্গে এ দিন কর্মিসভায় মন্ত্রী বলেন, “আমরা এক এক জন প্রার্থী। মনে রাখবেন, আমরা যদি ‘কিং’ হই, তা হলে ‘কিং মেকার’ থাকে একশো জন। সবাই রাজা হয় না। এক জন রাজাকে তৈরি করে একশো জন। অনেকেই অভিযোগ করেন, রাজা তো তৈরি করে দিলাম। কিন্তু রাজা তো আমাদের দিকে তাকাচ্ছে না!” এর পরেই আঙুল তুলে তাঁর হুমকি, “শুনে রাখুন, যারা তাকাচ্ছে না বা তাকায়নি, তাদের চোখ গেলে দেব এ বার!”
রামপুরহাট কলেজের বাংলার শিক্ষক আশিসবাবুর মুখে এমন হুমকি শুনে থতমত খেয়ে গিয়েছিলেন দলীয় কর্মীরা। কারণ বীরভূমের রাজনীতিতে আশিসবাবুর বরাবরের ভাবমূর্তি সৎ ও নরম মনের নেতা হিসাবে। গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে পাড়ুইয়ে প্রকাশ্য সভায় পুলিশকে বোম মারার কথা বলেছিলেন তৃণমূলেরই বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ওই মন্তব্যের জেরে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। অনুব্রত’র পথেই হেঁটে গত বছর রামপুরহাটে কর্মিসভায় বিরোধীদের হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল। পরে অবশ্য তিনি ক্ষমা চান।
তৃণমূলের কর্মীদের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, “অনুব্রত বা দুধকুমারের মতো নেতা হুমকি দিলে তা-ও বোঝা যায়। তা বলে আশিসবাবু! তিনি হঠাৎ কেন এমন মন্তব্য করতে গেলেন, বোঝা যাচ্ছে না।” এর আগে তাঁর মুখে কোনও ধরনের কু-মন্তব্য শোনা যায়নি। সিপিএমের জেলা সম্পাদক রামচন্দ্র ডোমের কটাক্ষ, “আশিসবাবু এক জন অধ্যাপক ছিলেন। তাঁর মুখেও ভাষার এমন দৈন্যতা কেন? আসলে উনি অনুব্রত ও দুধকুমারের সংস্কৃতিই বহন করছেন!”
কী বলছেন আশিসবাবু নিজে?
মন্ত্রীর দাবি, তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, “কেউ যদি উল্টো মানে করেন তা হলে বুঝতে হবে, তাঁরা বাংলা ভাষাটা বোঝেন না। গত পুরভেোটে যাঁদের প্রার্থী করা হয়েছিল, তাঁরা নিজেদের ওয়ার্ডে ঠিক মতো কাজ করেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের এ বার মনোনয়ন না দেওয়ার অর্থে এ কথা আমি বলেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy