এই মূর্তি ঘিরেই বিতর্ক। ফাইল চিত্র।
বাঁকুড়ায় বিরসা মুন্ডার মূর্তি-বিতর্ক অব্যাহত। পোয়াবাগানের ওই ‘আদিবাসী শিকারির মূর্তি’কে বিরসা মুন্ডার মূর্তি মনে করে পুষ্পার্ঘ্য দেওয়ায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে আদিবাসীরা তাঁকে চিঠি পাঠাতে চলেছেন—এমনই দাবি করলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের একাংশের কাছে এমনই দাবি করেন শ্যামলবাবু। তাঁর দাবি, “বাঁকুড়া শহরের উপকণ্ঠে পোয়াবাগানে একটি আদিবাসী শিকারীর মূর্তিকে ভগবান বিরসা মুন্ডার মূর্তি ভেবে পুষ্পার্ঘ্য দেন কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এতে আদিবাসী মানুষজন ক্ষুব্ধ। ৫০ হাজার আদিবাসী মানুষ ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দেবেন। আদিবাসী সমাজের বিভিন্ন সংগঠনও চিঠি দেবে।”
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘আগের বিরসা মুন্ডার ছোট মূর্তি ভেঙে যখন জেলা প্রশাসন বড় মূর্তি বসিয়েছিল, তখন এই আদিবাসীরা কেন চুপ করেছিলেন? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যখন মূর্তিটি বিরসা মুন্ডার বলেছেন, তখন মূর্তিটি তাঁরই।’’
তবে ‘অখিল ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদ’-এর বাঁকুড়া জেলা সভাপতি সুনীলকুমার মান্ডি বলেন, “কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ভুল স্বীকারের দাবিতে আমরা চিঠি দেওয়ার বিষয়ে ভাবছি। বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনের তরফে একটিই চিঠি দেওয়া হবে। এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত শীঘ্রই নেওয়া হবে।” ওই মূর্তি বিরসা মুন্ডার বলেই দাবি করেছেন বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার। এ দিন তিনি দাবি করেন, “জঙ্গলমহলে তৃণমূল জমি হারিয়েছে। তাই ভিত্তিহীন বিষয়ে বিতর্ক তুলে আদিবাসী মানুষের মন পেতে চাইছে। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হবে না।”
গত ৫ নভেম্বর দলীয় কর্মসূচিতে বাঁকুড়ায় আসেন শাহ। পোয়াবাগানে বাঁকুড়া-পুরুলিয়া ৬০ এ জাতীয় সড়কের পাশে আগে তৈরি করা এক আদিবাসী পুরুষের মূর্তির নীচে রাখা বিরসা মুন্ডার ছবিতে তিনি মালা দেন। পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন ওই আদিবাসী পুরুষের মূর্তিতে।
তবে আদিবাসী মানুষের একাংশ ওই মূর্তি বিরসা মুন্ডার নয় বলে দাবি করেন। তৃণমূল নেতাদের উপস্থিতিতে ওই মূর্তি চত্বর দুধ-গঙ্গাজল দিয়ে শুদ্ধকরণ করা হয়। পরে বিজেপি নেতৃত্বের উপস্থিতিতে আদিবাসী মানুষের একাংশ মূর্তিটিকে বিরসা মুন্ডার বলে দাবি করে গোবর জল ছিটিয়ে শুদ্ধ করেন। এরই মধ্যে সোমবার তৃণমূল নেতৃত্ব জানান, পোয়াবাগান এলাকায় চল্লিশ ফুটের বিরসা মুন্ডার মূর্তি তৈরি করা হবে। তা আখেরে আদিবাসী-মন পেতে তৃণমূলের চেষ্টা বলে কটাক্ষ করছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy