Advertisement
E-Paper

এক কিলোমিটারের মধ্যে বাঘিনি, তবু ধরতে ব্যর্থ বন দফতর! ঘোল খাইয়ে উধাও হয়ে যাচ্ছে জ়িনত

বন দফতর সূত্রে অবশ্য খবর, তারা জ়িনতকে লাগাতার অনুসরণ করেই চলেছে। পিছু পিছু তারাও পুরুলিয়ার জঙ্গলে এসে পৌঁছেছে। বাঘিনিকে ধরতে রবিবার সকাল থেকেই নানা রকম চেষ্টা চালাচ্ছে তারা।

পুরুলিয়ার জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে জ়িনত।

পুরুলিয়ার জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে জ়িনত। —প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:৩৪
Share
Save

শনিবার সকালে সাময়িক ভাবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল ঠিকই। কিন্তু সন্ধ্যা থেকে আবার জ়িনতের গলার রেডিয়ো কলারের সঙ্কেত মিলতে শুরু করে। ‘স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক’ ব্যবহার করে বনকর্মীরা জানতেও পারছেন যে, আশপাশে এক কিলোমিটারের মধ্যেই কোথাও রয়েছে ওই বাঘিনি! কিন্তু কিছুতেই নাগাল পাওয়া যাচ্ছে না। যার ফলে শনিবার রাতেই ঝাড়গ্রামের তেলিঘানার জঙ্গল থেকে পুরুলিয়ার কুইলাপালের জঙ্গলে এসে হাজির হয়েছে সে।

বন দফতর সূত্রে অবশ্য খবর, তারা জ়িনতকে লাগাতার অনুসরণ করেই চলেছে। পিছু পিছু তারাও পুরুলিয়ার জঙ্গলে এসে পৌঁছেছে। বাঘিনিকে ধরতে রবিবার সকাল থেকেই নানা রকম চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। শুধু এ রাজ্যের বন দফতরই নয়, জ়িনতকে ধরতে হন্যে হয়ে খুঁজে চলেছেন পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের বনকর্মীরা। সব মিলিয়ে মোট ছ’টি রেডিয়ো কলার ট্র্যাকিং অ্যান্টেনা ব্যবহার করে খোঁজা হচ্ছে বাঘিনিকে।

পুরুলিয়ার ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, ‘‘জঙ্গলেই রয়েছে ওই বাঘিনি। জনসাধারণের আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। বাঘিনি এবং সাধারণ মানুষের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, আমরা সেই চেষ্টাই চালাচ্ছি। আমাদের কর্তব্য ওই বাঘিনিকে আবার সুস্থ অবস্থায় ওর জায়গায় ফিরিয়ে দেওয়া। আমাদের ১৫টিরও বেশি দল ওর উপর নজরদারি চালাচ্ছে। আমরা স্যাটেলাইট মনিটরিং চালাচ্ছি। এ ছাড়া থার্মাল ইমেল স্ক্যানিং ড্রোন দিয়েও নজরদারি চালানো হচ্ছে।’’

শুক্রবার দিনের আলো ফোটার আগে ঝাড়খণ্ড সীমানা পেরিয়ে বেলপাহাড়ি বনাঞ্চলের শিমুলপালের কটুচুয়ার জঙ্গলে ঢুকে পড়েছিল জ়িনত। শুক্রবার রাতে জানা গিয়েছিল, সে সিঙ্গাডোবার জঙ্গল হয়ে ঢাঙ্গিকুসুমের দিকে চলেছে। পরে অবশ্য দিক পরিবর্তন করে বাঘিনি চলে যায় কাকড়াঝোরের জঙ্গলে। বন দফতর সূত্রে খবর, এর পর ট্র্যাকিং অ্যাপ থেকে জানা যায়, শনিবার ভোরের আগে জ়িনত কাকড়াঝোরের একটি হোমস্টে লাগোয়া জঙ্গলপথ দিয়ে জুজারধরার জঙ্গলের দিকে গিয়েছে। সকালে জুজারধরায় বাঘিনির ‘লোকেশন’ও পেয়েছিল বন দফতর। তার পর গভীর জঙ্গলে ঘাপটি মেরে ছিল সে। বেলার দিকে জিপিএস ট্র্যাকারে দেখা যায়, কাকড়াঝোরের লাগোয়া ভুলাভেদার জঙ্গলে বাঘিনিটি রয়েছে।

কিন্তু বেলপাহাড়ির উঁচু-নিচু পাহাড়ি এলাকা ও ঘন জঙ্গলে বার বারই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছিল। ফলে জ়িনতের গতিবিধি জানতে বেগ পেতে হচ্ছিল। ‘জিপিএস ট্র্যাকার’ মাঝেমধ্যে খেই হারিয়ে ফেলায় আনা হয় ‘থার্মাল ইনফ্রারেড ড্রোন ক্যামেরা’। এর সাহায্যে গভীর জঙ্গলে অতিবেগুনি রশ্মি পাঠিয়ে তাপমাত্রার হেরফেরের ভিত্তিতে জীবন্ত বন্যপ্রাণীর অবস্থান বোঝা যায়। রবিবার ওই বিশেষ ড্রোন ক্যামেরাও ওড়ানো হয়।

গত ১৫ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের তাড়োবা-আন্ধারি ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে তিন বছরের জ়িনতকে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পে (টাইগার রিজ়ার্ভ, সংক্ষেপে বা এসটিআর) আনা হয়েছিল। কয়েক দিন ঘেরাটোপে রেখে পর্যবেক্ষণের পরে রেডিয়ো কলার পরিয়ে ২৪ নভেম্বর তাকে সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ছাড়া হয়েছিল। বন দফতর সূত্রে খবর, সেখান থেকেই ঝাড়খণ্ডের দিকে হাঁটা দেয় জ়িনত। সিমলিপাল থেকে গুরবান্দা হয়ে সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে ঝাড়খণ্ডে পৌঁছে গিয়েছিল সে। সেখানে জামশেদপুর বন বিভাগের চাকুলিয়া রেঞ্জের জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছিল তাকে। এর পর চাকুলিয়া রেঞ্জের রাজাবাসার জঙ্গল পেরিয়ে চিয়াবান্ধি এলাকা থেকে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি থানার অন্তর্গত কটুচুয়ার জঙ্গলে ঢুকে পড়ে জ়িনত। তার পর সেখান থেকে পুরুলিয়া।

purulia Tiger

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}