সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষকে ঢুকতে বাধা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সমর্থকদের। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্নাতকস্তরের প্রথম বর্ষের পরীক্ষার আবেদন জানাতে পারেননি জনাকয়েক ছাত্রছাত্রী। তাঁদের নতুন করে অবেদনপত্র পূরণের সময় দিতে হবে। সেই সঙ্গে অনলাইনে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়ার সরলীকরণ করতে হবে। মূলত এই দুই দাবিতে কলেজের দরজায় তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখাল টিএমসিপি। ঢুকতে দেওয়া হল না কলেজের অধ্যক্ষ এবং অধ্যাপকদেরও। শুক্রবার সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের ঘটনা।
তৃতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষার আবেদন পত্র পূরণ না করতে পারায় একই ভাবে গত ২৯ এপ্রিল কলেজ বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল টিএমসিপি। প্রশ্ন উঠছে কেন বারবার দাবি দাওয়া জানাতে কলেজ বন্ধ করার ঘটনা ঘটছে? এ নিয়ে কলেজের ছাত্রছাত্রীদের একাংশের মধ্যেও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ সমস্ত কলেজের স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের পরীক্ষার আবেদন পত্র পূরণের দিন ধার্য হয়েছিল চলতি মাসের ৮ জুন। সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজর জনা ২০ ছাত্রছাত্রী কোনও কারণে ওই সময়ের মধ্যে তাঁদের আবেদন পত্র পূরণ করে জমা দিতে পারেননি। টিএমসিপি সদস্যদের দাবি, পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই তাঁদের পুনরায় আবেদন করার সুযোগ দেওয়ার আর্জি জানাতে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তাঁদের দাবি মানা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
টিএমসিপি সদস্যদের আরও দাবি, সরলীকরণ করতে হবে অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়াও। যুক্তি হিসাবে ছাত্র সংগঠনের সদস্যেরা বলছেন, আবেদনপত্র পূরণে সামান্য ত্রুটি বিচ্যুতি হলে চূড়ান্ত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কলেজে ভর্তি হতে চাওয়া ছাত্রছাত্রীদের। এ ছাড়া কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি মাত্র রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যঙ্কের শাখায় ভর্তি ফি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। তাতে সমস্যায় পড়ছেন পড়ুয়ারা।
অধ্যক্ষ মৃণালকান্তি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট সময়ে আবেদনপত্র পূরণ না করতে পারলে তা সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ারই গাফিলতি। তবু ভবিষ্যতের কথা ভেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় আর আবেদনের দিন দিতে নারাজ। এ ক্ষেত্রে আমাদের আর কী করণীয়?’’ অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে সমস্যার অভিযোগও তিনি মানতে চাননি। তিনি জানান, ওই রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের সব শাখা থেকেই কলেজে ভর্তির আবেদনের ফি জমা দেওয়া যাচ্ছে। কাজেই সমস্যা নেই। তাঁর কথায়, ‘‘দাবিদাওয়া যাই থাক, কলেজের দরজা বন্ধ করে দিয়ে শিক্ষকদের ঢুকতে না দেওয়া ঠিক কাজ নয়।’’
শিক্ষা-স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও তেমনই মনে করেন। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধা বা দাবি থাকতেই পারে। কিন্তু সেই দাবিকে সামনে রেখে কলেজে বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না। সরকারের এমনই সিদ্ধান্ত।’’ তিনি জানান, এ ব্যাপারে তিনি কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন। ছাত্রেরাও তাঁর কাছে বক্তব্য জানাতে পারে। এর পরে তিনি এ নিয়ে পদক্ষেপের কথা ভাববেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy