জলাধারের উপরে তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের নির্দেশিকা। নিজস্ব চিত্র
জলাধারের পরিবেশ বাঁচাতে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপে আশা দেখছেন পাখিপ্রেমীরাও। সম্প্রতি সাঁতার কাটা, মাছ ধরা ইত্যাদি নিষিদ্ধি করে জলাধারের উপরে বোর্ড লাগিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। পরিবেশপ্রেমীদের আশা, এই নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে মানা হলে তা পরিযায়ী পাখিদেরও রক্ষা করবে।
শীতের শুরুতে পরিয়ায়ী পাখিরা জেলার যে জলাশয়গুলিতে তাদের আস্তানা তৈরি করে সেই তালিকায় রয়েছে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নীল নির্জন জলাধারও। এ বারও তারা হাজির হয়েছে। পরিবেশপ্রেমীদের আশা, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে পাখির সংখ্যাও। তবে পুরোপুরি পর্যটন কেন্দ্র না হওয়া সত্ত্বেও গোটা শীতকাল জুড়ে শান্ত জলাধারকে ঘিরে পিকনিক পার্টির ভিড়, ফাঁসজাল ফেলে মাছ ধরা, চোরাশিকারের অভিযোগ উঠছিল গত কয়েক বছর ধরে। এমন নানা কারণে ক্রমশ কমছিল ভিনদেশী অতিথিদের সংখ্যাও। সম্প্রতি জলাধারের উপরে তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের লাগানো কয়েকটি বোর্ড দেখে খানিকটা আশ্বস্ত পরিবেশপ্রেমীরা। ওই বোর্ডগুলিতে ইংরেজিতে লেখা, সাঁতার কাটা, নৌকা চালানো, মাছ ধরা নিষিদ্ধ এই জলাধারে।
জেলার বিভিন্ন জলাশয়ে আসা পাখিদের যাতে উত্ত্যক্ত করা না হয়, চোরাশিকার করা না হয় তা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই প্রচার চালাচ্ছে বন দফতর।এ বারও তা শুরু হবে। তার আগে এমন বোর্ড দেওয়াকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে বন দফতর। বীরভূমের অতিরিক্ত ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার বিজনকুমার নাথ বলছেন, “বিষয়টি যদি সত্যিই পালিত হয়, তাহলে পরিয়াযী পাখিদের জন্য সুখবর।’’
শীতের শুরুতেই সুদূর সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, তিব্বত থেকে উড়ে রাজ্যের বিভিন্ন জলাশয়ে ভিড় করত পরিযায়ীর দল। সিউড়ির তিলপাড়া জলাধার, নীলনির্জন জলাধার ও বোলপুরের বল্লভপুরও সেই তালিকায় রয়েছে। এক সময় জেলার শান্ত বিস্তীর্ণ ওই জলাধারগুলি ছিল পরিয়াযী পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। দেখা মিলত বড়ি হাঁস (বারহেডেজ গুজ), ব্রাহ্মণী হাঁস (রুডি শেলডাক), খুন্তে হাঁস (সোভেলার) বা রাঙামুড়ি হাঁস, কমন কুট, গ্রিব-সহ বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখির। শুধুই পরিযায়ী পাখি নয়, সরাল, বালিহাঁস, নানা জাতের পানকৌড়ি, জলপিপি, জলময়ূরের মতো প্রচুর বাংলার পাখিও ভিড় জমাত জলাশয়ে।
বন দফতরের কর্মীরাই জানাচ্ছেন, গত দু’বছর ধরে সেখানেই ক্রমশ কমছিল পাখিদের সংখ্যা। তার অন্যতম প্রধান কারণ জলাশয় জুড়ে পাতা মাছ ধরার ফাঁস জাল। ডিজে বক্স বাজিয়ে পিকনিক পার্টির তাণ্ডবেও পাখি আসা কমে যায়। এ সব ঠেকাতেই গত দু’বছর ধরে প্রচার চালাচ্ছিল বন দফতর। শীতের অতিথি পাখিগুলিকে যাতে মেরে ফেলা বা তাদের বিরক্ত করা না হয় সে জন্যই প্রচার চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয় দু’বছর আগে থেকেই। তাতে কিছুটা ফল হয়েছে বলেও দাবি বনকর্মীদের। জেলার পরিবেশপ্রেমীদের আশা, এ বার বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের নির্দেশ যথাযথভাবে মানা হলে পাখিদের সংখ্যা আরও বাড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy