বিষ্ণুপুরের গির্জা খোলা হবে এক সপ্তাহ পরে। ছবি: শুভ্র মিত্র
স্বাস্থ্যবিধি ও দূরত্ব মেনে কাল, সোমবার থেকে ধর্মস্থান খোলার ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য সরকার। সরকার বলেছে, এক সঙ্গে দশ জনের বেশি ঢুকতে পারবেন না। তবে দরজা খুলে গেলে ভিড় কতটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, তা নিয়ে সন্দিহান ধর্মস্থান পরিচালকদের অনেকেই। এই পরিস্থিতিতে আলোচনায় বসছেন তাঁরা।
রঘুনাথপুর থানার মৌতোড় গ্রামের কালী মন্দিরের অন্যতম সেবাইত তথা পরিচালন কমিটির সদস্য সুব্রত ভট্টাচার্য জানান, প্রতিদিনই মন্দিরে পুজো দেওয়ার জন্য প্রচুর ভক্তের আবেদন ফেরাতে হচ্ছ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা মনে করছি, পরিস্থিতি আর একটু স্বাভাবিক হলেই পুরোদস্তুর মন্দির খোলা উচিত।” পুঞ্চা ব্লকের বুধপুর গ্রামের শিব মন্দিরের অন্যতম সেবাইত বাবলু বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পুলিশের সঙ্গে আলোচনার পরে, তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন।
বাঘমুণ্ডির লহরিয়া শিবমন্দিরের পরিচালন কমিটির সদস্য নিবারণচন্দ্র মাহাতো জানাচ্ছেন, মন্দির খোলার বিষয়ে পরিচালন সদস্যেরা একমত হতে পারেননি এখনও। তিনি বলেন, ‘‘রবিবার মন্দিরে কমিটির বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” পুরুলিয়া শহরের বড়কালী মন্দিরের পক্ষে রাজু রায় বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে মন্দির কী ভাবে খোলা সম্ভব, তা জানতে চাইব পুলিশের কাছে।”
বাঁকুড়ার প্রাচীন এক্তেশ্বর শিব মন্দির কমিটির অন্যতম সদস্য উজ্জ্বল ঠকুর বলেন, “সোমবার থেকে মন্দির খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে কী ভাবে ভক্তদের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মানা হবে তা নিয়ে আলোচনায় বসছি আমরা।”
বিষ্ণুপুরের ষাঁড়েশ্বর মন্দির কমিটির সম্পাদক খোকন চৌধুরী বলেন, “সোমবার থেকেই মন্দির খুলবে। মন্দিরে স্যানিটাইজার থাকবে। ভক্তদের ভিতরে ঢুকতে গেলে মাস্ক পরতেই হবে। সামাজিক দুরত্ব যাতে বজায় থাকে সে দিকে নজর রাখব।”
তবে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের জয়রামবাটি মাতৃমন্দির কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র স্বামী যুগেশ্বরানন্দ বলেন, “বেলুড় মঠের তরফে পনেরো দিন পরে মাতৃমন্দির খোলার জন্য বলা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে সরকারি নির্দেশ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরিকাঠামো গড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা।”
বাঁকুড়া জেলা ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মৌলানা সরিফুল ইসলাম জানান, সোমবার থেকে জেলার সমস্ত মসজিদই খুলতে চলেছে। তিনি বলেন, “সমস্ত মসজিদ কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে লোক জমায়েতের ক্ষেত্রে ও প্রার্থনার সময়ে সরকারি নিয়মনীতি মেনে চলতে হবে। প্রতিটি মসজিদে সাবান ও স্যানিটাইজার রাখতে বলা হয়েছে। প্রত্যেকে নিজ নিজ আসন নিয়ে এবং মাস্ক পরে মসজিদে আসবেন। প্রার্থনার পরে হাত মেলানো বা কোলাকুলি করা চলবে না।”
তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে মসজিদ তাঁরা খুলতে চাইছেন না বলেই জানাচ্ছেন পুরুলিয়া শহরের বড় মসজিদের পরিচালন কমিচির সভাপতি ওয়াহিদ আনসারি। এখন ওই মসজিদে পরিচালন কমিটির ন’জনকে দৈনিক নমাজ পড়ার অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। মসজিদ পুরোপুরি খুলে দেওয়ার পরে ভিড় নিয়ন্ত্রণ কতটা করা যাবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ওয়াহিদ আনসারিরা বলেন, ‘‘পরিস্থিতি আরও একটু স্বাভাবিক হওয়ার পরে, মসজিদ খোলার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করব আমরা।”
একই কথা বলছেন ঝালদার হুসেনডি-বাগানডি ইদগাহ কমিটির সম্পাদক শেখ হোসেন আহমেদ। তাঁর কথায়, ‘‘মসজিদ খুললে ভিড় হবেই। এই অবস্থায় সেটা কোনও ভাবেই কাঙ্খিত নয়।” তবে বিধিনিষেধ মেনে তাঁরা মসজিদ খুলবেন বলে জানাচ্ছেন রঘুনাথপুরের বালিচুড়ার মসজিদর ইমাম মহম্মদ আব্দুল হালিম। তিনি জানান, কোনও ভাবেই দশ জনের বেশি লোককে মসজিদে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
বাঁকুড়া শহরের তিনটি ও বিষ্ণুপুরের একটি চার্চও এখনই খোলা হচ্ছে না বলে জানান রেভারেন্ট সুমন্ত নাড়ু। তিনি জানান, চার্চ খোলা হবে আগামী ৭ জুন। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে চার্চ বন্ধ ছিল। তাই খোলার আগে প্রস্তুতি প্রয়োজন। তা ছাড়া, আমরা সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি ও রাজ্য সরকারের নিয়ম মেনেই কাজ করতে চাই। তাই একটু বিলম্ব হচ্ছে।”
পুরুলিয়ার আদ্রার সেক্রেড হার্ট চার্চের ফাদার লিনাস কিনডো বলেন, ‘‘চার্চ খোলার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy