এ বার চাঁদা তোলা হয়নি। কারণ জানে না কচিকাঁচারা। তবে সরস্বতী পুজোর অঞ্জলি দেবে বলে সোমবার সকাল থেকে স্কুলে গিয়েছিল তারা। কিন্তু ঠাকুর কোথায়? স্কুলে পুজো হচ্ছে না, এই খবর মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়ে। বোলপুরের নিচু বাঁধগোড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভিড় করেন অভিভাবকেরা। বিক্ষোভ, উত্তেজনার মধ্যে স্কুলে পুজোর আয়োজন আর হয়নি। স্কুলে যায় পুলিশ। শেষমেশ স্কুলগেটের বাইরে সরস্বতীর মূর্তি এনে পুজো করলেন অভিভাবকেরা। অঞ্জলি দিল কচিকাঁচারা। তবে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি এ নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন বীরভূম জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার সকাল থেকে বোলপুরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিচু বাঁধগোড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ভিড় জমে যায়। কেন সরস্বতী পুজো বন্ধ, প্রশ্ন নিয়ে স্কুলে হাজির হন কচিকাঁচাদের অভিভাবকেরা। কিন্তু প্রধানশিক্ষক এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি বলে অভিযোগ। অভিভাবকদের দাবি, প্রতি বছর সরস্বতী পুজো হয় স্কুলে। এ বার হঠাৎ কেন পুজো বন্ধ, তার কোনও জবাব নেই কর্তৃপক্ষের কাছে! ঘেরাও হন প্রধানশিক্ষক। গন্ডগোলের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বীরভূম জেলা প্রাথমিক সংসদের চেয়ারম্যান। পুলিশ এবং তাঁর হস্তক্ষেপে ঘেরাওমুক্ত হন প্রধানশিক্ষক।
জেলা প্রাথমিক সংসদের চেয়ারম্যানও জানেন না, কেন স্কুলে পুজো বন্ধ। তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেক বছরই তো স্কুলটিতে পুজো হত। এসে দেখলাম, গত বারের সরস্বতীর মূর্তি রয়েছে স্কুলে। স্কুলের রীতি, চলতি বছর পুজোর সময় গত বারের ঠাকুর বিসর্জন দেওয়া হয়। কিন্তু এ বার কেন পুজো হয়নি, জানি না। বিষয়টি নিয়ে আমরা বৈঠকে বসব। অভিভাবকেরা নানা অভিযোগ করলেন। সকলকে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানাতে বলেছি। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি মিটিং ডেকেছি।’’ তিনি আরও জানান, সোমবার স্কুল ছুটি। স্কুলে সরস্বতী পুজো করতেই হবে, এমন বাধ্যবাধকতা নেই। তবে স্কুলে সরস্বতীর আরাধনার একটি রীতি রয়েছে। সেটা কেন এ বার ভাঙা হল, তা নিয়ে খোঁজখবর করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, বিক্ষোভের সময়ে স্কুলগেটে তালা দেওয়া ছিল। প্রতিমা এনে গেটের সামনে রেখে পুজোর আয়োজন করেছিলেন অভিভাবকেরা। স্থানীয়দের দাবি, স্কুলে সরস্বতী পুজো বন্ধ রাখা তাঁদের সমীচীন বলে মনে হচ্ছে না। শেষমেশ বোলপুর থানার পুলিশের উপস্থিতিতে স্কুলগেটের বাইরে পুজোর পর বাড়ি ফেরেন সকলে। স্কুলের তরফে অবশ্য পুজো বন্ধ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।