(বাঁ দিকে) মোবাইল জমা রাখা হচ্ছে জয়ী প্রার্থীদের। কার্যালয়ের গেটে তালা। সাদা পর্দায় ঢাকা। সিউড়িতে বুধবার। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
এত দিন এই রাজ্য এর ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে এসেছে। কিন্তু, এ বার পশ্চিমবঙ্গেও ‘রিসর্ট রাজনীতির’ ছায়া! জয়ী প্রার্থীদের রাজ্যের শাসক-শিবিরে চলে যাওয়া থেকে ‘বাঁচাতে’ রিসর্ট না-হলেও দলীয় কার্যালয়কেই আপাতত হাতিয়ার করেছে বীরভূম জেলা বিজেপি। সেই বিজেপি, যাদের বিরুদ্ধে রাজ্যে রাজ্যে দল ভাঙানোর অভিযোগে সরব কংগ্রেস-সব বিভিন্ন বিরোধী দল। গেরুয়া শিবিরের এই কাণ্ডকে কটাক্ষ করেছে শাসকদল।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে সিউড়িতে থাকা বিজেপির জেলা কার্যালয়কে। কার্যালয়ে প্রবেশের মূল দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। দরজার বাইরে থেকে যাতে ভিতরের কিছু যাতে দেখা না যায়, তার জন্য ঝোলানো হয়েছে সাদা কাপড়। প্রার্থীদের মোবাইল ফোন নিয়ে নিজেদের হেফাজতেই রেখেছে বিজেপি। এক কথায়, যেন দুর্গে পরিণত হয়েছে বিজেপির জেলা কার্যালয়। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, জয়ী প্রার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই এমন ব্যবস্থা। যদিও দলেরই একাংশের বক্তব্য, জয়ীরা যাতে দলবদল করে তৃণমূলে যোগ দিতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা৷
বীরভূম জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলে বিরোধীদের থেকে অনেক এগিয়ে তৃণমূল। কিন্তু, ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী হয়েছে পদ্ম-শিবির। সেগুলির মধ্যে এমন একাধিক পঞ্চায়েত রয়েছে, যেখানে এক বা দু’জন প্রার্থী বিজেপি থেকে তৃণমূলে এলেই পাল্টে যাবে সমীকরণ। পাশাপাশি জেলায় ১৬টি পঞ্চায়েত এখনও ত্রিশঙ্কু অবস্থায় রয়েছে৷ সেখানেও বিজেপির প্রার্থীরা পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন৷ ফলে, ফল প্রকাশের পর থেকেই আর ঝুঁকি নেননি দলের নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, জয়ী প্রার্থীদের তৃণমূলের তরফ থেকে হুমকি এবং আর্থিক প্রলোভন দেওয়া হচ্ছে৷
মুখে দলীয় কর্মীদের উপরে আস্থা থাকার কথা বললেও শেষ পর্যন্ত দলবদল ঠেকাতে পারবে কি না, তা নিয়ে বিজেপি সন্দিহান। সে কারণেই জয়ী প্রার্থীদের নিয়ে আসা হয়েছে দলীয় কার্যালয়ে। যত দিন না পর্যন্ত বোর্ড গঠন হচ্ছে, তত দিন তাঁদের কার্যালয়েই রাখা হবে বলে দলের নেতারা জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরেও প্রত্যাহার আটকাতে এই একই ব্যবস্থা নিয়েছিল বিজেপি। তাতে খানিকটা সফলও হয়েছিল বলে দলের নেতাদের দাবি। তবে, সে ক্ষেত্রে এ বারের মতো কড়াকড়ি ছিল না। বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি বাবন দাস বলেন, ‘‘আমাদের জয়ী প্রার্থীদের ভয় দেখিয়ে বা টাকা দিয়ে তৃণমূল কিনতে পারবে না৷ কিন্তু, তাঁদের বা তাঁদের পরিবারের উপরে যাতে কোনও রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক আক্রোশ না-নেমে আসে, তার জন্যই এই ব্যবস্থা। বিশেষত, বিজয়ী মহিলা প্রার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।”
যদিও তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের কাছে যে পরিমাণ সংখ্যা আছে, তাতে জেলায় আমাদের আর কারও প্রার্থী ভাঙিয়ে আনার দরকার নেই। আর টাকা দিয়ে বিজেপির প্রার্থী কেনার ইচ্ছা বা ক্ষমতা কোনওটাই আমাদের নেই।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘পুরোটাই ওদের অমূলক ধারণা, কল্পনার উপর দাঁড়িয়ে আছে। আসলে ওদের নিজেদেরই দলের প্রার্থীদের উপরে বিশ্বাস নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy