প্রিয়াঙ্কা সিংহ রায়। নিজস্ব চিত্র
গালে চড়। নাকের তলায় মোক্ষম ‘পাঞ্চ’। সঙ্গে কয়েকটা ‘কিক’। রাস্তাতেই কুপোকাত তিন বীরপুঙ্গব!
সাঁইথিয়ার প্রিয়াঙ্কা সিংহ রায় বলে দিচ্ছে, ‘‘নিজের সামর্থ্য কতটা জানি। তাই ভয় পাইনি। বিশ্বাস ছিল, ওই তিনটে ছেলেকে একাই ঘায়েল করতে পারব। করে দেখিয়েও দিয়েছি।’’
মঙ্গলবার উচ্চ মাধ্যমিক শুরু। সোমবার বিকেলে পাড়ার বোনকে সাইকেলে চাপিয়ে বেরিয়েছিল পরীক্ষার্থী প্রিয়াঙ্কা। অভিযোগ, মাঝ পথে সাইকেল আটকে তিন যুবক তাকে কটূক্তি করে। সে প্রতিবাদ করায় হাত ধরে বলে, ‘একটু পাশে চল’। ভড়কে না গিয়ে বোনকে সাইকেলটা দিয়ে এগিয়ে যায় প্রিয়াঙ্কা। ছেলেগুলো জানত না, প্রিয়াঙ্কা তায়কোয়ন্দো-র ব্লু-বেল্ট। ছ’বছর ধরে সে এই মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। মিনিট পাঁচ-ছ’য়েকের মধ্যেই তিন যুবককে কাহিল করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় ওই পরীক্ষার্থী। সাঁইথিয়ারই বাসিন্দা ওই তিন যুবকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ তাদের আটক করে জেরা করছে।
প্রিয়াঙ্কার বাবা নির্মল সিংহ রায় সাঁইথিয়া পুরসভার কর্মী। জেলা থেকে রাজ্য, এমনকী বীরভূম জেলা পুলিশ আয়োজিত প্রতিযোগিতায় সোনার পদক পেয়েছে এই সাহসিনী। তার মা সুলেখাদেবী বলেন, ‘‘আমি জানতাম, ওই তিনটেকে কাবু করতে মেয়েই যথেষ্ট। তবু ঘটনা জেনে ওর কাছে চলে গিয়েছিলাম। লোক জমে গিয়েছিল। গণপিটুনি ঠেকাতে আমিই বলি, ওদের পুলিশের হাতে তুলে দিন।’’ এই ঘটনায় অন্য মেয়েরাও আত্মরক্ষার পাঠ নিতে নতুন করে উৎসাহ পাবে, আশা প্রিয়াঙ্কার প্রশিক্ষক লক্ষ্মীনারায়ণ ভকতের।
প্রিয়াঙ্কা বড় হয়ে পুলিশ হতে চায়। চায়, পথেঘাটে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা ছেলেদের শায়েস্তা করতে। তার কথায়, ‘‘ওদের যা মেরেছি, তাতে ফের কারও সঙ্গে অসভ্যতা করার আগে পাঁচ বার ভাববে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy