মানবাজার বাইপাস। —নিজস্ব চিত্র।
রাস্তা সংস্কার-সহ একাধিক দাবিতে পথে নামল সিপিএম। যার জেরে রবিবার সকাল থেকে বেলা পর্যন্ত মানবাজারের ইন্দকুড়িতে তাদের পথ অবরোধে জেরবার হলেন মানুষজন। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে বিডিও প্রতিকারের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।
রবিবার সকাল ৮টা থেকে সিপিএমের নেতা ও কর্মীরা মানবাজারের ইন্দকুড়িতে ১০০ মিটারের ব্যবধানে দু’টি মোড়ে পথ অবরোধ করেন। ফলে পুরুলিয়া-বাঁকুড়া সহ দূরপাল্লার গাড়ি আটকে যায়। যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। প্রথমে পুলিশ এসে অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানায়। তাতে কাজ না হওয়ায় বিডিও আসেন। রাস্তা সংস্কার-সহ একাধিক অভিযোগের প্রতিকারের আশ্বাস দিলে বেলা ১১টা নাগাদ অবরোধ ওঠে।
এ দিন ইন্দকুড়িতে গিয়ে দেখা গেল সিপিএমের শতাধিক কর্মী হাতে, গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে দলীয় ঝান্ডা নিয়ে অবরোধে সামিল হয়েছেন। প্ল্যাকার্ডে লেখা তৃণমূল নেতাদের মদতে ভিন্ রাজ্যে বালি পাচার বন্ধ করতে হবে। মানবাজার বাইপাস অবিলম্বে সংস্কার করতে হবে, পঞ্চায়েতের কাজে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে ইত্যাদি।
অবরোধ স্থলে থাকা মানবাজারের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সাম্যপ্যারী মাহাতো অভিযোগ করেন, ‘‘স্থানীয় নদী ঘাট থেকে অবাধে বালি লুঠ করা হচ্ছে। বালি মাফিয়াদের সঙ্গে তৃণমূলের পঞ্চায়েত ও ব্লকস্তরের নেতারা যুক্ত হয়েছেন। তৃণমূলের জেলার এক শীর্ষ নেতার মদতে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাকে করে ভিন্ রাজ্যে বালি পাচার হচ্ছে। অবিলম্বে বালি পাচার বন্ধ না হলে আমরা বড় আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।’’ স্থানীয় সিপিএম নেতা প্রদীপ চৌধুরী, সজল চক্রবর্তীদের অভিযোগ, মানবাজার বাইপাসের অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। কিন্তু তা সংস্কারের কোনও উদ্যোগ নেই। অথচ শহরের যানজট এড়ানোর জন্য এই রাস্তা ব্যবহার করা হয়। প্রতিদিন শতাধিক বালি ভর্তি ট্রাক যাতায়াতের ফলে এই রাস্তা বিপজ্জনক ভাবে ভেঙে পড়েছে। উদাহরণ টেনে প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘শুক্রবার রাতে এই রাস্তায় গর্তে পড়ে একটি বালিভর্তি ডাম্পার ফেঁসে যাওয়ায় শনিবার দুপুর অবধি ওই রাস্তা বন্ধ ছিল। শনিবার রাতে ফের আর একটি ট্রাক রাস্তার গর্তে পড়ে ফেঁসে যায়। রবিবার সারাদিন ওই রাস্তায় যান চলাচল ফের বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বালি, পাথর ভর্তি ট্রাক, বাস-সহ সমস্ত গাড়ি মানবাজারের চৌমাথা দিয়ে যাতায়াতের ফলে যানজট বেড়ে গিয়েছে। পথচারী থেকে বাসিন্দারা নাকাল হয়েছেন। প্রশাসনের কোনও ভূমিকাই চোখে পড়েনি।’’ তাই মানুষের স্বার্থে তাঁরা অবরোধে সামিল হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
মানবাজার ১ বিডিও সায়ক দেবও স্বীকার করেছেন, ‘‘ইন্দকুড়ি থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত বাইপাসের অবস্থা বিপজ্জনক। তবে ওই রাস্তা জেলা পরিষদের। রাস্তাটি সংস্কারের জন্য জেলায় কয়েকবার চিঠি দিয়েছি। আবার জানাব।’’ বালি পাচার নিয়ে তার প্রতিক্রিয়া, স্থানীয় ভাবে যে টুকু করা সম্ভব তা করা হয়। তবে এই বিষয়টি যাতে জেলা প্রশাসনও নজর দেয়, সে জন্য তিনি জানাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। বালি পাচার নিয়ে তৃণমূলের জেলা নেতা তথা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এ নিয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে আমরা দলীয় ভাবে অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজনে রাজ্য কমিটির নেতাদেরও গোচরে আনব।’’ তাঁর আশ্বাস, ওই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য শীঘ্রই জেলা পরিষদের অর্থ কমিটির বৈঠক ডেকে প্রয়োজনীয় অর্থ অনুমোদন করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy