Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

পুলিশ যদি আসে, তটস্থ লক্ষ্মীসাগর

কোনও গাড়ি গ্রামে ঢুকছে শুনলেই পুলিশের গাড়ি কি না তা নিয়ে ফিসফাস শুরু হয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যা নামলেই বাড়ির পুরুষেরা অনেকেই ঘর থেকে বেরিয়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিমলাপাল শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৭ ১২:৩০
Share: Save:

কোনও গাড়ি গ্রামে ঢুকছে শুনলেই পুলিশের গাড়ি কি না তা নিয়ে ফিসফাস শুরু হয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যা নামলেই বাড়ির পুরুষেরা অনেকেই ঘর থেকে বেরিয়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছেন। দু’দিন ধরে পুলিশের সঙ্গে লড়াইয়ের পরে এখন পুলিশের ধরপাকড়ের ভয়ে কুঁকড়ে রয়েছে সিমলাপালের লক্ষ্মীসাগর এলাকার বাসিন্দারা।

এলাকায় লাগাতার লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে জনজীবনের ছন্দটাই যেন কেটে গিয়েছে এখানকার বাসিন্দাদের। পুলিশ কর্মীদের হেনস্থা করার অভিযোগে সোমবার রাতে এলাকার ন’জনকে এবং মঙ্গলবার সিমলাপালে পুলিশ কর্মীকে মারধর, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করা-সহ বিভিন্ন ধারায় আরও বহু মানুষকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যাদের মধ্যে ৩৬ জনকে বুধবার খাতড়া আদালতে তোলা হলে দু’দিনের জেল হাজতের নির্দেশ হয়েছে। অন্যদিকে, ১৩ জনকে বাঁকুড়া জুভেনাইল আদালতে তোলা হয়। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী হওয়ায় জুভিনাইল আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেছে।

এই ঘটনায় গোটা গ্রাম থমথমে। এলাকাবাসীরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার রাতেও পুলিশ গ্রামে এসে অনেকের খোঁজে তল্লাশি চালায়। পুলিশি ধরপাকড় চলবে আঁচ করে বুধবারও এলাকা সন্ত্রস্ত হয়ে ছিল। অনেকেই ভয়ে গ্রামছাড়া।

এই পরিস্থিতির জন্য অবশ্য লক্ষ্মীসাগরের বাসিন্দারা পুলিশের দিকেই আঙুল তুলছেন। এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দার কথায়, “একটু হাওয়া দিলেই এখানে সকাল থেকে রাত টানা লোডশেডিং হয়ে থাকে। দিনের পর দিন এই সমস্যা নিয়েই চলতে হচ্ছে আমাদের। সেই ক্ষোভ থেকেই আন্দোলনে নেমেছিলেন তাঁরা। পুলিশ জোর করে অবরোধ তুলতে না গেলে এই অবস্থা হতো না।” এ দিন বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “ওই এলাকায় নতুন করে কেউ গ্রেফতার হয়নি। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।”

এই ঘটনায় লক্ষ্মীসাগরের এলাকাবাসীর পক্ষেই দাঁড়িয়েছে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সংগঠন অ্যাবেকা। সংগঠনের জেলা সম্পাদক স্বপন নাগের বক্তব্য, “বিদ্যুৎ দফতরের পরিষেবার মান খুবই খারাপ। লোডশেডিং-এর সমস্যা এই এলাকায় দীর্ঘ দিনের। স্থানীয় বাসিন্দারা ন্যায্য দাবি নিয়েই আন্দোলনে নেমেছিলেন।”

বিদ্যুৎদফতর অবশ্য এলাকায় লোডশেডিং-এর সমস্যা নেই বলেই দাবি করছে। বিদ্যুৎ দফতরের খাতড়ার ডিভিশনাল ম্যানেজার সুদীপ দাস মোদকের কথায়, “লোডশেডিং-এর সমস্যা একেবারেই নেই। ঝড়বৃষ্টিতে বিদ্যুতের খুঁটি উল্টে গিয়েছিল বহু জায়গায়। আবার কিছু কিছু এলাকায় তারের উপর গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।” তাঁর দাবি, এইসব কারণেই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। লক্ষ্মীসাগরে বিদ্যুৎ পরিষেবার মানোন্নয়নের জন্য ময়না এলাকায় একটি নতুন সাবস্টেশন গড়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি আরও একটি নতুন লাইনের মাধ্যমেও লক্ষ্মীসাগরে বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়ার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

police Simlapal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE