Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

মদের ঠেক উচ্ছেদে পথে এসডিপিও

একটি ওয়ার্ডে একটি মদের ঠেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে পদক্ষেপ করতে দিন কুড়ি পার করে দিয়েছিল পুলিশ। তবে অভিযোগকারীনীর পরিবার আক্রান্ত হওয়ার পরে শনিবার সকাল থেকেই পুলিশের সক্রিয়তা দেখল বিষ্ণুপুর শহর। এ দিন বিষ্ণুপুরের এসডিপিও-র নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী শহর জুড়ে অভিযান চালিয়ে বেআইনি মদের ঠেক ভেঙে দেয়।

বিষ্ণুপুর শহরে পুলিশের চোলাই বন্ধের অভিযান। —নিজস্ব চিত্র

বিষ্ণুপুর শহরে পুলিশের চোলাই বন্ধের অভিযান। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৬ ০২:৪২
Share: Save:

একটি ওয়ার্ডে একটি মদের ঠেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে পদক্ষেপ করতে দিন কুড়ি পার করে দিয়েছিল পুলিশ। তবে অভিযোগকারীনীর পরিবার আক্রান্ত হওয়ার পরে শনিবার সকাল থেকেই পুলিশের সক্রিয়তা দেখল বিষ্ণুপুর শহর। এ দিন বিষ্ণুপুরের এসডিপিও-র নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী শহর জুড়ে অভিযান চালিয়ে বেআইনি মদের ঠেক ভেঙে দেয়। যা দেখে অনেকেই বলছেন, এই কাজ পুলিশ আগে করলে শহর জুড়ে চোলাইয়ের কারবারের এ রকম রমরমা হত না। আক্রান্ত হতেন না বৃদ্ধা পুষ্পরানিদেবী।

বিষ্ণুপুরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আরতি লক্ষ্মণ তাঁর বাড়ির ঠিক উল্টো দিয়ে একটি মদের ঠেক চলছে বলে চলতি মাসের আট তারিখ থেকে পুলিশ এবং প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ ওই ঠেকে রেড করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সকালের মধ্যে ঝুপড়ি ভেঙে দিতে বলে সে যাত্রা ফিরে গিয়েছিল পুলিশ। অভিযোগ, তার পরেই ঠেকের লোকজন আরতিদেবীর বাড়িতে চড়াও হয়। সরকারি ইঞ্জিনিয়ার আরতিদেবী সেই সময় কর্মসূত্রে বাইরে ছিলেন। তাঁর দাদা মাধববাবুকে মারধর করে দুষ্কৃতীরা। ছেলেকে বাঁচাতে এলে মাধববাবুর মা পুষ্পরানিদেবীর মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। তাঁকে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে পুলিশ এসে দু’জনকে গ্রেফতার করে।

ঘটনার পরেই বেআইনি মদের ঠেক তুলতে পুলিশের নিজে থেকে অভিযান না করা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন এলাকার বাসিন্দারা। বেআইনি মদের ঠেকে বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করে যদি সরকারি কর্মীর পরিবারকেই আক্রান্ত হতে হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ অন্যায়ের প্রতিবাদ করবেন কোন ভরসায়, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আরতিদেবীও। এ দিন শহরের বিভিন্ন পাড়ায় গিয়ে এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) লাল্টু হালদার স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। বেআইনি মদের ঠেকের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি। এলাকার মহিলাদের সংগঠিত হত বলেন। আশ্বাস দেন, পুলিশ তাঁদের পাশে থাকবে। নিজের মোবাইল ফোনের নম্বর দিয়ে প্রয়োজনে সরাসরি তাঁকে ফোন করতে বলেন এসডিপিও।

এ দিন পুলিশি অভিযান শুরু হয় শহরের বালিধাবড়া এলাকা থেকে। পরে বিষ্ণুপুর হাসপাতাল লাগোয়া কুড়চিবন, মাধবগঞ্জের বদিরপুকুর, কাটানধারের বাউরিপাড়া এলাকাতেও চলে তল্লাশি। ঠেক ভেঙে চোলাই মদ নষ্ট করে দেন পুলিশ কর্মীরা। বেআইনি ভাবে বিক্রি করার জন্য রাখা বেশ কিছু দেশি এবং বিলিতি মদের বোতলও উদ্ধার হয়। সেগুলিও নর্দমা ঢেলে নষ্ট করে দেওয়া হয়। এসডিপিও বলেন, ‘‘আমরা পৌঁছতেই ঠেকের লোকজন দৌড়ে পালিয়ে গিয়েছে। ফলে কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।’’ এর পরেও অবৈধ মদের কারবার বন্ধ না হলে ফের অভিযানে নামা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তবে আগেও শহরের মহিলারা মদের ঠেকের বিরুদ্ধে সংগঠিত হয়ে পথে নেমছিলেন একাধিকবার। বছর খানেক আগে মহকুমাশাসক পলাশ সেনগুপ্তের নেতৃত্বে চোলাই বিরোধী অভিযানও হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অবরেসবরে পুলিশি অভিযানের পরে কিছুদিন ঠেক বন্ধ থাকে। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই ছবিটা ফের একই হয়ে যায়। এ দিনের অভিযানের পরে তাই শহরের বাসিন্দাদের অনেকেই নিয়মিত পুলিশি নজরদারির দাবি করেছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal liquor shop
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE