ক্ষুব্ধ ডেউচার জমিদাতারা। — ফাইল চিত্র।
প্রয়োজন রাজ্য পুলিশের রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের নিয়মে সামান্য সংশোধন। আর সেই জটেই মাসের পর মাস আটকে রয়েছে জুনিয়র কনস্টেবল পদে চাকরি পাওয়া। মহম্মদবাজারে প্রস্তাবিত মহম্মদবাজারের ডেউচা পাঁচামি দেওয়ানগঞ্জ হরিণশিঙা কয়লা খনি প্রকল্পে জমিদাতা ৩৯টি পরিবার মনোনীত সদস্যদের দাবি তেমনটাই। তা নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভও।
জমিদাতা পরিবারগুলি মনোনীত সদস্যদের অভিযোগ, ‘‘প্রকল্পে জমি দিয়েছে আমাদের পরিবার। তখন আমাদের বয়স ১৮ ছুঁতে কিছুদিন বাকি ছিল। কথা দেওয়া হয়েছিল, বয়স ১৮ হলেই সরকারি চাকরি পাব। কিন্তু ১৮ ছোঁয়ার পর কখনও জেলাশাসক, কখনও পুলিশ সুপার কখনও পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের (পিডিসিএল) আবদারপুর অফিসে যাচ্ছি। কিন্তু কোথাও সদুত্তর পাচ্ছি না।’’ তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘চাকরি না দেওয়া হলে জমি ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’’ ডেউচা পাঁচামিতে খনি গড়ার দায়িত্বে থাকা সংস্থা পিডিসিএলের এমডি পি বি সেলিম বলছেন, ‘‘ওঁদের তো মেন্টেন্যান্স অ্যালাওয়েন্স পাওয়ার কথা।’’ কিন্তু ওই জমিদাতাদের ক্ষোভ, তাঁদের ১৮ বছর বয়স হয়ে যাওয়ায় সেই ভাতাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
বুধবারও পাঁচামি থেকে ৩৯ জন জেলাশাসকের কাছে আসেন। জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে সবটা জানিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি করা হয়েছে। নির্দেশ পেলেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।’’ পি বি সেলিমের আশ্বাস, ‘‘একটা ছোট্ট বিষয় রয়েছে। দিন পনেরোর মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ডেউচা পাঁচামিতে প্রস্তাবিত কয়লা খনির জন্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সদস্যদের জুনিয়র কনস্টেবল পদে চাকরি দেওয়ার জন্য গত বছর ৭ ফেব্রুয়ারি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকার। সেখানে পুরুষ ও মহিলাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, উচ্চতা ও শারীরিক সক্ষমতা ইত্যাদি বিভিন্ন মাপকাঠির পাশাপাশি উল্লেখ করা ছিল ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি যাঁদের বয়স ১৮ থেকে ৪৫ তাঁরাই জুনিয়র কনস্টেবল হতে পারবেন। তারপর দফায় দফায় জমিদাতা মনোনীত সদস্যদের চাকরি হয়েছে। যাঁরা শারীরিক সক্ষমতায় বা মাপকাঠিতে আসতে পারেননি তাঁদের অনেকে রাজ্য সরকারের গ্রুপ ডি পদে চাকরি পেয়েছেন। আটকে গিয়েছেন তাঁরা, যাঁদের বয়স ১ জানুয়ারি ২০২২ সালের পর ১৮ বছর হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, ১৮ বছর হলে চাকরি দেওয়া হবে সিদ্ধান্ত হলেও পিআরবি যতক্ষণ না ২০২২ সালের ১ জানুয়ারির পর যাঁদের ১৮ হবে— এই বিধি সংশোধন করছেন ততক্ষণ কিছু করা যাচ্ছে না।
এঁদেরই একজন অর্পণ রুজ। বাবা অভিজিৎ রুজ নিশ্চিতপুর মৌজায় ৫৮ শতক জমি প্রস্তাবিত কয়লা খনি গড়তে সরকারকে দান করেছেন। দেওয়ানগঞ্জ মৌজায় জমি গিয়েছে সৌম্যজিৎ সালুইদের। দেওয়ানগঞ্জ মৌজায় ৬৬ শতক জমি গিয়েছে শৌভিক ঘোষদের। বৈশাখী বাগদিদের জমি গিয়েছে কেন্দ্রপাহাড়িতে। তালিকাটা দীর্ঘ। সমস্যা একটাই, জমি দিলেও সকলেই তখন নাবালক ছিলেন বলে চাকরি পাননি।
এখন প্রত্যেকই সাবালক। কেউ স্নাতক স্তরে পড়ছেন, কেউ এ বার উচ্চ মাধ্যমিক দিচ্ছেন। কেউ বা স্রেফ অপেক্ষায়। জানালেন, ‘‘কাজে মন দিতে পারছিনা। উদ্বেগ হচ্ছে বাকিরা চাকরি পেলেও আমরা কেন পাব না? কিছু করতে হলে প্রশাসন করুক। মাসের পর মাস ঘোরাচ্ছে কেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy