Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

‘অসুর’ বৃষ্টিতে কাজ থমকে মণ্ডপ, মূর্তির

সিউড়ি একের পল্লি ক্লাবে এ বারের থিমে হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি। মণ্ডপের বাইরে পুতুল নাচের ছবি। বৃষ্টিতে থমকে যায় মণ্ডপ সাজানোর কাজ।

আবরণ: সকাল থেকে চলছে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। প্রতিমা বাঁচাতে ভরসা পলিথিনের চাদর। বুধবার সিউড়ির কলেজপাড়ায়। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

আবরণ: সকাল থেকে চলছে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। প্রতিমা বাঁচাতে ভরসা পলিথিনের চাদর। বুধবার সিউড়ির কলেজপাড়ায়। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি ও মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৪২
Share: Save:

পুজো আর হাতেগোণা কয়েক দিন। শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা পুজো কমিটি, থিম আর্টিস্ট থেকে কুমোরটুলিতে। এমনই সময় ‘অসুর’ হয়ে দেখা দিল বৃষ্টি। মঙ্গলবারের পরে বুধবারও জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রচণ্ড বৃষ্টি নামে। তাতে চিন্তায় পড়েছেন শিল্পী থেকে পুজো উদ্যোক্তারা।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই আকাশের মুখ ছিল ভার। দুপুরেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয় বৃষ্টি। সন্ধায় তা থামলেও, গভীর রাতে ফের বৃষ্টি নামে। বুধবার সকাল থেকেই শুরু হয় বৃষ্টি। সন্ধ্যাতেও হয় ঝিরঝির বৃষ্টি। তারে জেরে কাজ থমকে যায় জেলার বি‌ভিন্ন পুজো মণ্ডপে।

সিউড়ি একের পল্লি ক্লাবে এ বারের থিমে হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি। মণ্ডপের বাইরে পুতুল নাচের ছবি। বৃষ্টিতে থমকে যায় মণ্ডপ সাজানোর কাজ। ক্লাব সদস্য অমিত মজুমদার বলেন, ‘‘বৃষ্টিতে কাজ তো বন্ধ হলই, মণ্ডপের বাইরের অনেক সাজও নষ্ট হয়েছে। ফের সে সব জিনিস কিনে তৈরি করতে হচ্ছে।’’ একই রকম বিপাকে সিউড়ির চৌরঙ্গি, সবুজ সঙ্ঘ, বর্ণালী, ছয়ের পল্লি-সহ অন্য অনেক পুজো কমিটিই।

ছয়ের পল্লি ক্লাবের বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘এ ভাবে বৃষ্টি চললে কী করে কাজ হবে। মণ্ডপের বাইরের দিকের কাজ বন্ধ। ভিতরের কাজ চললেও গতি কমেছে।’’ বোলপুর অ্যাথলেটিক্স অ্যান্ড কালচার অ্যাসোসিয়েশনের পুজোও বৃষ্টিতে পড়েছে সমস্যায়। একই অবস্থা রামপুরহাট, সাইথিয়া, দুবরাজপুর-সহ জেলার অন্যান্য এলাকার পুজো কমিটিগুলির।

বৃষ্টির জেরে ভিড় কমেছে পুজোর বাজারেও। দোকানদারেরা অনেকেই জানান, এমনিতেই এ বার কেনাকাটা অন্য বারের তুলনায় কম। কিন্তু গত কয়েক দিন দোকানে দোকানে কিছুটা ভিড় জমলেও মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টিতে তা কমেছে। এক দোকানদারের কথায়, ‘‘এ বছর পুজোর বাজার এমনিতেই খারাপ। তার উপর বৃষ্টি। ক্রেতারা বাড়ি থেকে বেরতে পারলে তবে তো বাজার করবেন।’’

পুজোর আগে দু’দিনের বৃষ্টিতে চিন্তায় মহম্মদবাজার ব্লকের রঘুনাথপুর গ্রামের মৃৎশিল্পীরাও। তাঁরা জানান, বিশ্বকর্মা পুজোর পরে জোরকদমে শুরু হয়েছে দুর্গাপ্রতিমা তৈরির কাজ। তার মধ্যেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। তাতে থমকেছে মূর্তিতে রংয়ের কাজ। মৃৎশিল্পী নিতাই সূত্রধর ও অশোক সূত্রধর জানান, অন্য বছর বিশ্বকর্মা পুজো ও দুর্গাপুজোর মধ্যে অনেক সময় থাকে। কিন্তু এ বার এগিয়েছে পূজোর তারিখ। এমন পরিস্থিতিতে টানা বৃষ্টিতে বেড়েছে সমস্যা। দু’দিন ধরে বন্ধ রংয়ের কাজ। তাঁদের আশঙ্কা, আরও কয়েক দিন এমন ভাবে বৃষ্টি চললে রংয়ের কাজ শেষ করতে দুর্ভোগ বাড়বে। তাঁরা জানান, বৃষ্টি থেকে বাঁচাতে মূর্তিগুলি এক জায়গায় জড়ো করে ত্রিপল দিয়ে ঢাকতে হয়েছে। তাঁরা বলছেন, ‘‘বৃষ্টি থামলেই রাত জেগেও রংয়ের কাজ শেষ করতে হবে।’’

শ্রীনিকেতন আবহাওয়া অফিসের হিসেবে, গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৪২.৪ মিলিমিটার। আগামী কাল, বৃহস্পতিবারও আকাশ মেঘলা থাকার সম্ভাবনা। পূর্বাভাস রয়েছে বৃষ্টিরও। তাতে মণ্ডপে মণ্ডপে চিন্তা বেড়েছে কয়েক গুণ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy