শতাব্দী প্রাচীন সিউড়ি স্টেশন চত্বরে মনুমেন্টাল ফ্ল্যাগ-স্ট্যান্ড গড়ার কাজ শুরু হবে। নিজস্ব চিত্র
১০০ ফুট উঁচু স্তম্ভ। তার উপরে থাকবে জাতীয় পতাকা। শতাব্দী প্রাচীন সিউড়ি স্টেশন চত্বরে এমন মনুমেন্টাল ফ্ল্যাগ-স্ট্যান্ড গড়ার কাজ শুরু হচ্ছে দিন কয়েকের মধ্যেই।
রেল সূত্রের খবর, দেশের বিভিন্ন জেলার হেডকোয়ার্টার স্টেশন, দর্শনীয় বা ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন কিছু বাছাই স্টেশনে মনুমেন্টাল ফ্ল্যাগ-স্ট্যান্ড তৈরি করা হচ্ছে। সেই তালিকায় সিউড়ি রয়েছে। শুধু জাতীয় পতাকা লাগানোর স্ট্যান্ড নয়, প্ল্যাটফর্মে লাগানো হবে স্টেনলেস স্টিলের তৈরি প্রচুর চেয়ার। পচনশীল ও কঠিন বর্জ্য ফেলার জন্য পৃথক রংয়ের বেশ কিছু ডাস্টবিনও থাকবে স্টেশন চত্বরে। মাসখানেকের মধ্যেই সে কাজ সম্পন্ন হবে।
জেলা সদরের বাসিন্দা এবং নিত্যযাত্রীদের বড় অংশের কথায়, ‘‘জেলা সদরের স্টেশন সাজতে ব্যবস্থা নিচ্ছে রেল, সেটা ভাল কথা। কিন্তু, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টি আগে দেখুক রেল। কারণ, সার্ধশতবর্ষ প্রাচীন সিউড়ি স্টেশন ও জেলা সদরের বাসিন্দারাই সবচেয়ে অবহেলিত।’’ তাঁদের কথায়, কলকাতায় সকাল সকাল পৌঁছনোর মতো এবং কলকাতায় কাজ সেরে সন্ধ্যায় ফেরার মতো ট্রেন না থাকা, দূরপাল্লার একাধিক ট্রেন এই স্টেশনের উপর দিয়ে গেলেও, সেগুলির অধিকাংশের স্টপ না থাকা, ফুড বা টি-স্টল না থাকা সহ নানা অসুবিধা রয়েছে। গত এক দশক ধরে সেই দাবিতে কখনও রেলমন্ত্রী, কখনও জেনারেল ম্যানেজার, ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার, স্থানীয় সংসদ কারও কাছে আবেদন জানাতে বাকি নেই। তার পরেও সুরাহা হয়নি।
অক্টোবরে সিউড়ি স্টেশন পরিদর্শনে আসা ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারকে ফের মৌখিক ভাবে দাবি জানিয়েছেন শহরবাসী। গত সোমবার ব্যবসায়ী তথা নিত্যযাত্রী জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সৌমিত্র সিংহেরা ফের আসানসোল গিয়ে একগুচ্ছ দাবিপত্র দিয়ে এসেছেন। কিন্তু, তা নিয়ে এখনও কোনও ইতিবাচক সাড়া নেই। জয়ন্তবাবুরা বলছেন, ‘‘পূর্বরেলের অণ্ডাল-সাঁইথিয়া শাখায় রয়েছে সিউড়ি স্টেশন। পরিকাঠামো খারাপ নয় স্টেশনের। টিকিট বিক্রির হারও বেশ ভাল। লোকাল প্যাসেঞ্জার, এক্সপ্রেস ও দূরপাল্লার বেশ কয়েকটি ট্রেন থাকলেও জেলা সদর থেকে কলকাতায় ১০টার মধ্যে পৌঁছনোর ট্রেন নেই। সকাল বেলায় হাওড়া যাওয়ার একমাত্র ট্রেন, সকাল ৬টা বেজে ২৫ মিনিটে ময়ূরাক্ষী এক্সপ্রেস। যেটি সাড়ে ১১টা নাগাদ হাওড়া পৌঁছয়। বিকেল ৪টে বেজে ২০ মিনিটে ফেরে।’’ ওই সীমিত সময়ে কলকাতায় কাজ সেরে ফেরা সম্ভব হয় না। বাস রয়েছে। কিন্তু, ভাড়া অনেক বেশি। সময়ও বেশি লাগে। হাওড়া যাওয়ার দ্বিতীয় ট্রেনটি দুপুর দেড়টা নাগাদ হুল ও বিকেল ৫টা বেজে ১৫ মিনিটে প্রান্তিক হয়ে সিউড়ি-হাওড়া এক্সপ্রেস। রাতে কলকাতা থেকে ফেরার কোনও ট্রেন নেই। সকালবেলায় হাওড়াগামী ও সন্ধ্যায় হাওড়া থেকে সিউড়ি ফেরার ট্রেন দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। মালদা, দিঘার মতো বেশ কয়েকটি ট্রেনের স্টেপ দেওয়ার আর্জিও রাখা হয়েছে।
শুধু সিউড়ি নয়। প্রায় একই দাবি নিয়ে মাস দেড়েক আগে দুবরাজপুর স্টেশন ম্যানেজারের মাধ্যমে আসানসোল ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারের কাছে দাবি সম্বলিত আবেদনপত্র দিয়েছিল দুবরাজপুর নাগরিক সমিতি। সমিতির দাবি ছিল, ট্রেনের সময়সারণির পরিবর্তন ও দূরপাল্লার অন্তত দুটি ট্রেন থামুক দুবরাজপুর স্টেশনে। আসানসোল ডিভিশনের রেলের জনসংযোগ আধিকারিক রাহুল রঞ্জন জানাচ্ছেন, সিউড়ি ও দুবরাজপুর থেকে যে দাবি জানানো হয়েছে সেগুলি রেলের বিবেচনায় রয়েছে। কত দ্রুত সেই দাবি মানা সম্ভব সেটা বলা জানা যাচ্ছে না।
রেল সূত্রের খবর, সিউড়ি স্টেশনে পরিকাঠামোগত ঘাটতি না থাকলেও দুবরাজপুরের প্ল্যাটফর্মটি লম্বায় সামান্য ছোট। ডাবল লাইন সম্প্রসারণের কাজ শেষ হয়েছে বহু আগে। কাজ শেষ লাইনের বৈদ্যুতিকরণেরও। অথচ, পরিষেবায় উন্নতি হয়নি। দুটি স্টেশনে যাত্রী সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। অভাব শুধু ট্রেনের। সকলের আপত্তির জায়গা সেটাই। বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় জানিয়েছেন, দুবরাজপুর ও সিউড়ি শহরের বাসিন্দাদের দাবি নিয়ে বহুবার রেলমন্ত্রী ও আধিকারিকদের জানিয়েছি। কিন্তু, আশ্বাস মিললেও কাজ হয়নি। আবার জানাবেন বলেও জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy