রামপুরহাটে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
সভা করতে আসতে পারেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। আগামী ১৪ ডিসেম্বর প্রস্তাবিত সেই সভার জন্য রামপুরহাট রেল স্টেশন সংলগ্ন মাঠকে বেছে নিয়েছে বীরভূম জেলা বিজেপি। তাদের দাবি, শহরের কোনও বড় মাঠ তাদের জনসভার জন্য ছাড়তে রাজি নয় প্রশাসন।
সভাস্থল কোথায় হবে, তা ঠিক করতে শুক্রবার রামপুরহাটের স্টেশন সংলগ্ন মাঠে ঘুরে দেখেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘১৪ ডিসেম্বর গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার যে তৃতীয় পর্ব শুরু হবে, সেটা রামপুরহাট থেকে হবে। আমাদের সর্বভারতীয় সভাপতির এখানে সভা করবার পরিকল্পনা আছে।’’ তাঁর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গে কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত রাজ্য সরকারের অসহযোগিতায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাঠে কখনও খেলার নামে, কখনও নির্মাণকাজের নামে, কখনও বা নিরাপত্তার যুক্তি দেখিয়ে বিজেপি-কে সভার অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। সেই কারণেই তাঁরা এখানে রেলের মাঠে সভা করতে বাধ্য হচ্ছেন। এই মাঠটি বড় মাপের সভা করার পক্ষে যথেষ্ট ছোট বলেও দাবি শমীকের।
৭ এবং ৯ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করছে কোচবিহার এবং সাগরের রথ। ১৪ ডিসেম্বর তারাপীঠ থেকে শুরু হওয়ার কথা তৃতীয় রথের যাত্রা। বিজেপি সূত্রের খবর, তারাপীঠ থেকে রথযাত্রার কর্মসূচি ছিল ৫ ডিসেম্বর। সেখানে থাকার কথা ছিল অমিত শাহের। কিন্তু রাজস্থান ও তেলঙ্গানায় বিধানসভা ভোটের প্রচারকাজে ব্যস্ত থাকবেন বলে তারাপীঠে রথযাত্রার কর্মসূচি পিছিয়ে দেওয়া হয়। ১৪ তারিখ তারাপীঠে পুজো দিয়ে রথ বিভিন্ন জেলা ঘুরবে।
রথযাত্রার সূচনাতেই জনসভা করার কথা সর্বভারতীয় সভাপতির। বিজেপি-র মহকুমা পর্যবেক্ষক কালীদাস পালের দাবি, তাঁরা প্রথমে ওই সভার জন্য মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার মাঠ গাঁধী ময়দান চেয়ে আবেদন করেছিলেন ক্রীড়া
সংস্থার সম্পাদকের কাছে। তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও রাজনৈতিক সভার জন্য মাঠ দেওয়া যাবে না। মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘আবেদনপত্র পাওয়ার পরে মহকুমাশাসকের (পদাধিকার বলে যিনি সংস্থার সভাপতিও) সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। কিন্তু ক্রীড়া সংস্থার সিদ্ধান্তই হল, সরকারি কোনও অনুষ্ঠান ছাড়া রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত কারণে মাঠ দেওয়া যাবে না।’’
কালীদাস বলেন, ‘‘আমরা এর পরে রামপুরহাট হাইস্কুলের মাঠ চেয়ে মৌখিক আবেদন করেছিলাম স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে। পরে জানতে পারি, ওই মাঠে তখন মেলা হবে। তাই শেষ পর্যন্ত আমরা রেলের ময়দানকেই সভাস্থল হিসাবে বেছেছি।’’ স্থানীয় বিধায়ক তথা কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘ফাটা কলসির আওয়াজ বেশি। মাঠ নিয়ে ক্রীড়া সংস্থা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।’’
রথযাত্রা ঘিরে এরই মধ্যে জেলায় তৃণমূল এবং বিজেপি-র চাপানউতোর তুঙ্গে উঠেছে। বিজেপি-র রথযাত্রার আগে তাঁদের খোল-কীর্তনের দল রাস্তা পরিক্রমা করবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বিভিন্ন সভায় তিনি হুমকি দিচ্ছেন, রথযাত্রাই হবে বিজেপি-র ‘শেষযাত্রা’! সেই প্রসঙ্গে শমীকের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘উনি ঠিকই তো বলেছেন। কারণ উনি জানেন, গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার পরে হয়তো তাঁর দলবলই শামিল হয়ে যাবে বিজেপিতে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy