Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Chatna Mukutmanipur Railway

ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেলপথের দাবিতে মিছিল ব্লকে ব্লকে

ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেলপথ প্রকল্প রূপায়ণের দাবি দীর্ঘদিন ধরে তুলে আসছেন স্থানীয় মানুষজন। ২০০৪ সালে ওই রেলপথ তৈরির প্রকল্প অনুমোদন করে রেল মন্ত্রক।

দাবি নিয়ে পথে। ছাতনা ও (ডান দিকে) খাতড়ায় রবিবার।

দাবি নিয়ে পথে। ছাতনা ও (ডান দিকে) খাতড়ায় রবিবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খাতড়া, বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:২০
Share: Save:

ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ অবিলম্বে শুরুর দাবিতে জেলার পাঁচটি ব্লকে মিছিল করল ‘বাঁকুড়া-মুকুটমণিপুর ভায়া ছাতনা রেলপথ স্থাপন আন্দোলন কমিটি’। রবিবার বাঁকুড়ার ছাতনা, বাঁকুড়া ১, ইঁদপুর, হিড়বাঁধ, খাতড়ায় কমিটির তরফে মিছিল হয়। তবে প্রতি ক্ষেত্রে মিছিলে নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছে জেলা সিপিএমের নেতাদের। ছাতনায় মিছিলের নেতৃত্ব দেন সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি, দলের রাজ্য কমিটির সদস্য অভয় মুখোপাধ্যায়, সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কিঙ্কর পোশাক প্রমুখ। অন্য জায়গাতেও কোথাও সিপিএমের স্থানীয় এরিয়া কমিটির সম্পাদক, কোথাও আবার দলেরই সক্রিয় নেতাদের মিছিলের পুরোভাগে দেখা গিয়েছে। ‘অরাজনৈতিক’ মিছিলে সিপিএম নেতাদের এমন উপস্থিতিতে শুরু হয়েছে চর্চা।

ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেলপথ প্রকল্প রূপায়ণের দাবি দীর্ঘদিন ধরে তুলে আসছেন স্থানীয় মানুষজন। ২০০৪ সালে ওই রেলপথ তৈরির প্রকল্প অনুমোদন করে রেল মন্ত্রক। ২০০৬ থেকে শুরু হয় জমি অধিগ্রহণ। ২০০৯ পর্যন্ত সেই কাজ চললেও তার পরে খেই হারিয়ে যায়। এ দিন সেই প্রসঙ্গ টেনে সিপিএমের জেলা সম্পাদক অজিত ঘটনার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য, দুই সরকারকেই দুষেছেন। তাঁর কথায়, “প্রয়াত বাঁকুড়ার প্রাক্তন সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া রেলের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে সরতেই প্রকল্পটি নিয়ে নাড়াচাড়া বন্ধ হয়ে যায়। সরকারি ভাবে ২০১১ সালের পরে থেকে প্রকল্পটি নিয়ে আর কোনও আলোচনাই হয়নি।” তাঁর আক্ষেপ, “বাঁকুড়ার সাংসদ কেন্দ্রের মন্ত্রী। আর রানিবাঁধের বিধায়ক রাজ্যের মন্ত্রী হলেও তাঁরা প্রকল্পটির জন্য কোনও কাজ করলেন না। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার, কারও মাথাব্যথা নেই। ওই প্রকল্পের জন্য যাঁরা জমি দিয়েছিলেন, তাঁরা অত্যন্ত হতাশ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জেলার বড় উন্নয়ন হত।”

বছর দুয়েক আগে যদিও বাঁকুড়ার সাংসদ তথা কেন্দ্রের শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার ছাতনায় রেলপ্রকল্পের জন্য অধিগৃহীত জমি পরিদর্শন করে জানিয়েছিলেন, ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেলপথ গড়তে ৮০০ একর জমি দরকার। তার মধ্যে ৫১৭ একর অধিগৃহীত হয়েছে। বাকি জমি অধিগ্রহণের জন্য রাজ্য সরকারের সাহায্য চেয়েছিলেন তিনি। এ দিন সুভাষ দাবি করেন, “রাজ্য সরকার জমি অধিগ্রহণ করে রেলকে না দেওয়ায় প্রকল্প আটকে রয়েছে। ২০২৩-২৪ সালের বাজেটের আগেই রাজ্যকে এ নিয়ে পদক্ষেপের আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ হয়নি। রাজ্যে যখন সিপিএমের সরকার ছিল, তখনই অজিতবাবুরা পুরো জমি অধিগ্রহণ করে রেলকে দিলে কোনও সমস্যাই হত না।” আগামী দিনে প্রকল্পের বাস্তবায়নে রাজ্য সরকারের উপরে চাপ তৈরির কথা জানান তিনি। রানিবাঁধের বিধায়ক জ্যোৎস্না মান্ডির তবে দাবি, “রেল কেন্দ্রের বিষয়। ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেলপথের জন্য কেন্দ্রের তরফে কোনও সাহায্য রাজ্যের কাছে চাওয়া হয়নি।”

এ দিকে, লোকসভা নির্বাচনের আগে স্থানীয় বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে ‘অরাজনৈতিক’ ভাবে আন্দোলনের কৌশল নিয়েছে সিপিএম, মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। অজিত অবশ্য বলেন, “সমস্ত স্তরের মানুষই চান ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেলপথ গড়ে উঠুক। তাই সকলেই যাতে আন্দোলনে শামিল হতে পারেন, সেই লক্ষ্যে পৃথক কমিটি গড়ে আন্দোলন হচ্ছে।” জ্যোৎস্নার কটাক্ষ, “সিপিএম বিজেপির ‘বি টিম’। ওদের আন্দোলন করা মানায় না।” বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলেরও দাবি, “সিপিএম ও তৃণমূল লোকসভা নির্বাচনের জন্য জোট গড়েছে। ওরা বিরোধী-ভোট ভাগ করে তৃণমূলকে সুবিধা দিতে চায়। মানুষ ওদের কথায় গুরুত্ব
দেবেন না।”

অন্য বিষয়গুলি:

bankura Khatra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy