খেলা: দোলের আগে নানুরের রামণ্ডি গ্রামে দুই খুদে। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
রাত পেরোলেই রংয়ের খেলায় মাতবে শান্তিনিকেতন। বসন্ত উৎসবে সামিল হতে আসছেন পর্যটকেরাও। শান্তিনিকেতন-সহ বোলপুরে তা-ই এখন সাজো সাজো রব। হরেক রংয়ের আবিরের দোকান ভরেছে বোলপুরের রাস্তাঘাটে। অনেকে ভ্যানে করে বিক্রি করছেন রং, আবির। কেউ গড়েছেন অস্থায়ী ছোট্ট দোকান।
বিক্রেতারা জানান, আগে রং পাওয়া যেত চার-পাঁচ রকমের। সবুজ, গোলাপি, হলুদ, লাল, কমলা রংয়ের আবিরই শুধু বিক্রি করতেন তাঁরা। এখন তার সঙ্গে জুড়েছে আকাশি, সাদা, বেগুনি, খয়েরিও। সবুজ, গোলাপিরই আবার তিন-চারটে আলাদা প্রকৃতির রং মিলছে বাজারে।
আবির বিক্রেতা গীতা সিংহ অন্য সময় ফল বিক্রি করেন বাজারে। এখন ফল বিক্রির ভ্যানেই বেচছেন কলকাতার বড়বাজার থেকে নিয়ে আসা হরেক রংয়ের আবির। তিনি বলেন, ‘‘আগের বছর সাদা রংয়ের আবির পেয়েছিলাম। কী রকম চাহিদা হবে ভেবে বেশি কিনিনি। কিন্তু সাদা আবিরের চাহিদাই ছিল বেশি। তাই এ বার সাদাই বেশি নিয়েছি।’’ বসন্ত উৎসব রংয়ের উৎসব, সেখানে সাদার চাহিদা কী ভাবে এমন বাড়ল, তা ভেবে পাচ্ছেন না বিক্রেতারাও।
রংয়ের বাহার যেমন বেড়েছে। সঙ্গে বেড়েছে আবিরের দামও। বিক্রেতা গোপাল দাস জানান, আগে বড়বাজার থেকে ১০ কিলোগ্রাম আবিরের প্যাকেট তিনশো টাকায় পাওয়া যেত। এখন সেটারই দাম বেড়ে হয়েছে ৮০০ টাকা। তাই খুচরো বিক্রির ক্ষেত্রেও আবিরের দাম বাড়াতে হয়েছে। ‘‘দাম বাড়লেও ক্রেতার সংখ্যা কিন্তু কমেনি। আগেও সব আবির বিক্রি হয়ে যেত, এখনও বিক্রি হয়ে যায়’’— বললেন আবির বিক্রেতা খোকন ঘোষ। শুধুমাত্র আবিরই নয়, দোকানগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে হরেক রকমের পিচকারি, মুখোশ ও চুল। নকশা ও গুণগত মানের উপর ভিত্তি করে সেগুলির বিভিন্ন দাম রয়েছে। কোনওটির দাম ১০ টাকা তো কোনওটি ১৫০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, এখনও পর্যন্ত আবিরের চাহিদাই বেশি। অথচ আগে আবিরই কম বিক্রি হত। বেশি বিক্রি হত রং। বিক্রেতাদের একাংশের বক্তব্য, এখন মানুষ অনেক সচেতন, তাছাড়া রং মাখলে তা ওঠাতে কিছু দিন সময় লাগে। সে কারণেই মানুষ আবিরের দিকে ঝুঁকেছেন বলে ধারণা বিক্রেতাদের। তবে বসন্ত উৎসবের দিন কিছুটা রং বিক্রি হবে বলে আশাবাদী তাঁরা। কারণ পরের দিনই রয়েছে হোলি। শান্তিনিকেতনেও এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। সঙ্গীতভবনে রোজ চলছে অনুষ্ঠানের মহড়া। আশ্রমমাঠে তৈরি হচ্ছে মঞ্চ। জনসংযোগ কার্যালয় বিশেষ ক্ষেত্রে গেটে ঢোকার পাস দিতে শুরু করেছে মঙ্গলবার থেকে। পলাশ নিধন নিয়ে জারি হয়েছে বাড়তি সতর্কতা। পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে পৌষমেলার মতোই বীরভূম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বসন্ত উৎসবের রুট ম্যাপের একটি ভিডিও তৈরি করা হয়েছে। যেটি ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে। নিরাপত্তা বিষয়েও শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে মগ্ন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy