ভারত-ছাড়ো আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং শহিদদের স্মৃতিতে দেশজুড়ে বছরভর নানা অনুষ্ঠান পালনের দাবি তুলল ১৯৪২-শহিদ স্মারক কমিটি। সোমবার, আন্দোলনের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বোলপুরের কালিকাপুরে শহিদ দিবস পালন ও স্মরণের অনুষ্ঠানে এই দাবি ওঠে। এই মর্মে খুব শীঘ্রই রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থও হতে চলেছেন তাঁরা।
১৯৪২ সালের অগস্টে ভারত-ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দেন মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী। গাঁধীর ডাকে ৯ অগস্ট থেকে দেশ জুড়ে শুরু হয় আন্দোলন। অন্যাথা হয়নি বোলপুরেও। শহিদ স্মারক কমিটির কথায়, ওই সময় বোলপুরে উৎপাদনে মন্দা চলছিল। ব্রিটিশ সেনারা ওই সময়ে সাহায্য তো দূর, এলাকাবাসীর কাছ থেকে জোর করে খাদ্যশস্য ছিনিয়ে নিয়ে বোলপুর স্টেশন চত্বরে মজুত করে। সেই খাদ্যশস্যের দখল নিতে বোলপুর-সহ আশেপাশের সর্বস্তরের মানুষরা প্রতিবাদে পথে নামেন। তখনই গুলি চলে। তাতে শহিদ হন তারাপদ গুঁই ও জটা মাঝি।
দুই শহিদের স্মৃতিতে ফি বছর এই দিনটিতে নানা অনুষ্ঠান হয় বোলপুরে। ১৯৯৫ সালে গঠন হওয়া ৪২-এর শহিদ স্মারক কমিটির উদ্যোগে সোমবার বোলপুরে একই ভাবে পালিত হয় নানা অনুষ্ঠান। ভারত-ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দিয়ে শহিদ হওয়া ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। নানা কথায় স্মরণ করা হয় সেই দিনের। কালিকাপুরেও হয় অনুষ্ঠান।
কেন বছরভর স্মরণ অনুষ্ঠান জরুরি, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন ওই কমিটির সভাপতি আনন্দ সেন। তিনি বলেন, ‘‘ইতিহাসের স্বার্থে এবং সে দিনের আন্দোলনের কথা জানতে ও চর্চা জারি রাখতে ওই স্মরণ জরুরি বলে আমাদের মত।’’ তিনি জানান, শুধু বীরভূমে নয়, দেশ জুড়ে ওই অনুষ্ঠান পালনের জন্যে রাষ্ট্রপতির কাছেও আমরা আর্জি রাখব। একই ভাবে তা রাখা হবে দল-মত নির্বিশেষে সমস্ত মানুষের কাছে। কমিটির সম্পাদক বিষ্ণুনাথ মুখোপাধ্যায় আরও জানান, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও ওই অনুষ্ঠানে শরিক হতে আর্জি জানানো হচ্ছে। এই মর্মে তাঁদের কাছে আমন্ত্রণও পাঠাচ্ছে কমিটি।
ওই শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে কমিটির সদস্য-সদস্যাদের পাশাপাশি এলাকার বহু স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবারের লোকজন হাজির ছিলেন। ছিলেন সে দিনের ঘটনায় বোলপুরের শহিদ গুঁই পরিবারের সদস্যরাও। স্টেশনের শহিদ স্মারক স্তম্ভে মালা দিয়ে কালিকাপুরের শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়। ২৯ অগস্টের গুরুত্ব এবং শহিদদের দেশপ্রেমের ও অবদানের কথা তুলে ধরেন খুজুটিপাড়া কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ বিষ্ণু রায়। ওই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন বিশ্বভারতীর বাংলার অধ্যাপক অমল পালও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy