জলছবি: বৃষ্টি ভেজা দুপুর। শনিবার সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র
ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে মাটিও তেমন ভেজেনি। অভিযোগ, তাতেই ময়ূরেশ্বরে ফিরল বিদ্যুৎ পরিষেবার পুরনো রোগ। লোডশেডিং-এ সারা রাত অন্ধকারে ডুবে রইল বিস্তীর্ণ এলাকা। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, বিদ্যুৎ পরিষেবার এমন হাল ওই এলাকায় এই প্রথম নয়।
দীর্ঘদিন ধরেই একপশলা বৃষ্টি হলেই ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এলাকার অনেকে মজা করে বলেন— ‘তার ভিজলেই বিদ্যুৎ উধাও হয়।’ বিদ্যুৎ দফতরের তাতে কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।
বিদ্যুৎ দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়ূরেশ্বরের কোটাসুর সাবস্টেশন থেকে চারটি ফিডারের মাধ্যমে প্রায় শ’পাঁচেক গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। তার মধ্যে বাসুদেবপুর ফিডারকে দু’টি ভাগে ভাগ করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। একটি ভাগে কলেশ্বর, গিধিলা সহ বিভিন্ন গ্রাম হয়ে বিদ্যুৎ পৌঁছয় কুলিয়াড়া গ্রামে। অন্য ভাগে বাসুদেবপুর, বটনগর সহ বিভিন্ন গ্রাম হয়ে কুলিয়াড়া লাগোয়া লোকপাড়া গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অধিকাংশ সময় দেখা যায় একপশলা বৃষ্টি পরে কুলিয়াড়া গ্রামে বিদ্যুৎ থাকলেও লোকপাড়া সহ অন্য গ্রাম দীর্ঘক্ষণ অন্ধকারে ডুবে যায়। এ বারেও তার অন্যথা হয়নি। শুক্রবার রাতে ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হতেই লোডশেডিং হয়ে যায়। শনিবার সকালে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়।
এই পরিস্থিতির জন্য বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন এলাকার বেশিরভাগ বাসিন্দা। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন দীর্ঘদিনের পুরনো। অধিকাংশ জায়গায় ছেড়া তারে জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। সামান্য ঝড়েই সেই তার ছিড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
আবার অনেক জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে ফাটল রয়েছে চিনামাটির ‘কাপ-ডিসে’। সামান্য বৃষ্টি হলেই সে সব ফাটল দিয়ে জল ঢুকে শর্ট-সার্কিট হয়ে যায়। তার জেরেও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়। লোকপাড়ার তপন রায়, নিতাই কোনাইয়ের বক্তব্য— ‘‘বিদ্যুৎ দফতর সরবরাহ লাইনের সংস্কারের পরিবর্তে জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালায়। তার ফল ভুগতে হয় আমাদের। পশলা বৃষ্টি হলেই দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় থাকতে হয়।’’
ময়ূরেশ্বর গ্রুপ ইলেকট্রিক সাপ্লাইয়ের স্টেশন ম্যানেজার রাজেন্দ্রনাথ পাল বলেন, ‘‘জোড়াতালি সংস্কারের অভিযোগ ঠিক নয়। যখন যেমন প্রয়োজন হয় তেমনই সংস্কার হয়। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহের উন্নতির জন্য বাসুদেবপুর ও ষাটপলশা ফিডারকে দু’টি ভাগে ভাগ করা হচ্ছে। আশা করা যায় তাতে পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy