এই সেই উদ্ধার হওয়া ব্যানার। —নিজস্ব চিত্র
এ বার তৃণমূলের কার্যালয়ের কাছেই সিপিআই (মাওবাদী) নামাঙ্কিত পোস্টার পড়ল। এক সময়ের মাওবাদী উপদ্রুত হিসেবে পরিচিত, পুরুলিয়ার বলরামপুরে।
রবিবার সকালে, সিপিআই (মাওবাদী)-র দশম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর প্রথম দিনেই বলরামপুরের উরমা এলাকায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে তিন-চারশো মিটার দূরে হাটতলা এলাকায় ওই ব্যানার ও পোস্টারগুলি দেখতে পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ সেগুলি দ্রুত সরিয়ে দেয়। তবে, যে এলাকা থেকে এগুলি উদ্ধার হয়েছে, সেই রাস্তা দিয়েই উরমা থেকে ঘাটবেড়ো-কেরোয়া পঞ্চায়েত এলাকায় যেতে হয়। এই ঘাটবেড়া-কেরোয়া এক সময় ছিল মাওবাদীদের মুক্তাঞ্চল। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ব্যানারে মাওবাদীদের ‘গণমুক্তি গেরিলা ফৌজ’কে (পিএলজিএ) ‘গণমুক্তি ফৌজে’ (পিএলএ) পরিণত করতে ফৌজে ভর্তি হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। দিন কয়েক আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলপাহাড়িতে উদ্ধার হওয়া মাওবাদী নামাঙ্কিত ব্যানারেও একই আহ্বান জানানো হয়েছিল। শনিবার সকালে আবার পুরুলিয়ার আড়শাতেও ‘মাওবাদী’ পোস্টার-ব্যানার মিলেছে।
পুলিশ ও গোয়েন্দাদের একটা অংশ জানাচ্ছেন, সম্প্রতি জঙ্গলমহলের কিছু এলাকায় মাওবাদীদের আনাগোনা বেড়েছে। গত বুধবার ঝাড়খণ্ডের ঘাটশিলার চেকাম জঙ্গলে মাওবাদীদের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর গুলির লড়াইয়ে প্রাণ হারান কোবরা জওয়ান বিকাশ সূত্রধর। যে এলাকায় সে দিন গুলির লড়াই বেধেছিল, সেখান থেকে পুরুলিয়ার বান্দোয়ান মাত্র ৭ কিলেমিটার দূরে। আর বেলপাহাড়ির দূরত্ব ৫ কিলোমিটার। ওই সংঘর্ষের পরে পরেই বেলপাহাড়ি, আড়শা ও বলরামপুরের মতো এক সময়ের মাওবাদী উপদ্রুত এলাকা থেকে পরের পর পোস্টার ব্যানার উদ্ধার হওয়াটা পুলিশ-গোয়েন্দাদের চিন্তা বাড়িয়েছে।
বলরামপুরের উরমা পুরুলিয়া জেলা সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতোর নিজের এলাকা। এলাকায় থাকলে উরমার তৃণমূল কার্যালয়েই সাধারণত বসেন তিনি। উরমা তাঁর নিজের বাড়ির পঞ্চায়েত এলাকাও। যদিও পার্টি অফিসের কাছে ব্যানার-পোস্টার উদ্ধারকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ সৃষ্টিধরবাবু। তিনি বলেন, “মাওবাদীরা যদি মানুষের ভালর জন্য রাজনীতি করছে, তা হলে তারা মানুষের কাছে আসুক, মানুষের সামনে তাদের কথা বলুক। অন্ধকারে থেকে লুকিয়ে পোস্টার দিচ্ছে কেন?” আর রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতোর বক্তব্য, “একটা অশুভ শক্তি শান্ত জঙ্গলমহলের পরিবেশকে নষ্ট করতে চাইছে। মানুষই এর প্রতিরোধ করবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy