বিজেপির বিক্ষুব্ধ ওই নেতা-কর্মীরা দলের শহর কমিটির সভাপতি স্বপ্নেশ দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। ফাইল চিত্র
শহরে এসে বিজেপির সাংসদ দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করে জনসংযোগ করে গেলেন। অথচ, সেখানে ডাক পেলেন না শহরে দলের এক মাত্র কাউন্সিলর-সহ শাখা সংগঠনের নেতা ও বেশ কয়েকটি বুথের সভাপতিরা। সোমবার রঘুনাথপুরে বিজেপির সাংসদ সুভাষ সরকারের ওই দলীয় কর্মসূচি ঘিরে ক্ষোভ ছড়িয়েছে দলের শহরের নেতা-কর্মীদের একাংশের মধ্যে। তাঁরা দলের শহর কমিটির প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছেন। বিজেপির বিক্ষুব্ধ ওই নেতা-কর্মীরা দলের শহর কমিটির সভাপতি স্বপ্নেশ দাসের বিরুদ্ধে নিজের পছন্দসই নেতা-কর্মীদের নিয়ে দল পরিচালনা করা তথা পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছেন। যদিও তিনি অভিযোগ মানেননি।
বাঁকুড়ার বিজেপির সাংসদ সুভাষবাবু বলেন, ‘‘খুব কম সময়ের মধ্যেই রঘুনাথপুরের কর্মসূচি ঠিক হয়েছিল। ফলে, সবাইকে ডাকা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীকালে যখন যাব তখন সবাইকে ডেকে নেব। আমাদের দলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই।’’
যদিও জেলা বিজেপির অভ্যন্তরের খবর, লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই রঘুনাথপুর শহরে বিজেপির অভ্যন্তরে দলীয় কর্মসূচি নিয়ে বিবাদ শুরু হয়েছে। সদস্য সংগ্রহ অভিযানে দলের শহর সভাপতি-সহ তাঁর ঘনিষ্ঠেরা তৎপর নন বলে আগে থেকেই অভিযোগ তুলছিলেন বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী। তাঁদের দাবি, জেলার অন্যত্র যে ভাবে নেতারা বাড়ি বাড়ি ঘুরে সদস্য সংগ্রহ অভিযান করেছেন, সেই ছবি দেখা যায়নি রঘুনাথপুর শহরে।
বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর এক নেতার অভিযোগ, ‘‘শহর সভাপতি সবাইকে নিয়ে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নামেননি বলেই এই হাল হয়েছে।” রঘুনাথপুরে যে সদস্য সংগ্রহের হার কিছুটা কম, তা স্বীকার করে নিয়েছেন এই কর্মসূচির দায়িত্বে থাকা বিজেপির পুরুলিয়া জেলার সম্পাদক রবীন সিংহ গোপ। তবে দলীয় কোন্দলের জন্য সদস্য সংগ্রহ কম হয়েছে, তা মানতে চাননি তিনি। তাঁর দাবি, ‘‘রঘুনাথপুরে এলাকায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে সন্ত্রাসের ছবি দেখে অনেকেই ভয়ে প্রকাশ্যে বিজেপিতে যোগ দিতে চাইছেন না।”
সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি নিয়ে তৈরি হওয়া বির্তকের মধ্যেই নতুন করে সামনে এসেছে সাংসদের জনসংযোগ কর্মসূচিতে দলেরই কাউন্সিলর-সহ অনেকের ডাক না পাওয়ার ঘটনা। সোমবার রঘুনাথপুরে যান বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ। কিন্তু সেখানে দেখা যায়নি নির্বাচনের আগে তাঁর সঙ্গে প্রচারে থাকা দলেরই বেশ কিছু নেতা-কর্মীকে। যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া দলের এক মাত্র কাউন্সিলর মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া বর্ষীয়ান নেতা বিষ্ণুচরণ মেহেতা, শ্রমিক সংগঠন বিজেএমটিইউ-র জেলা সভাপতি কাজলকৃষ্ণ সিংহ-সহ অনেককেই।
মৃত্যুঞ্জয়বাবু ও কাজলকৃষ্ণবাবুদের দাবি, সাংসদ যে রঘুনাথপুরে আসছেন, সেটাই তাঁদের জানানো হয়নি। বস্তুত, লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই দলের শহর কমিটির একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী-সহ তাঁর অনুগামীরা। মঙ্গলবার মৃত্যুঞ্জয়বাবু দাবি করেন, ‘‘রঘুনাথপুর শহরে দলের কাজকর্ম চলছে ছন্নছাড়া ভাবে। দলের যারা শুভাকাঙ্ক্ষী, তাঁদের দলের কাজ থেকে ব্রাত্য করে রাখা হচ্ছে।” কাজলবাবুর আক্ষেপ, ‘‘নির্বাচনের প্রচারে উদয়াস্ত খাটলাম। অথচ সাংসদ শহরে এলেন সেই খবরটা পর্যন্ত আমাদের দেওয়া হল না।”
তবে দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই বলে পাল্টা দাবি করছেন বিজেপির শহর সভাপতি। তাঁর দাবি, ‘‘সাংসদ রঘুনাথপুরের আসছেন সেই খবরটা আমরা পেয়েছিলাম মাত্র এক দিন আগে। ফলে, সেই কর্মসূচি নিয়ে কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক প্রচার করা সম্ভব হয়নি। সাংসদের কর্মসূচিতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা সকলেই ছিলেন। যাঁরা দলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন না, তাঁরাই আসেননি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy