প্রতীকী চিত্র
করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে স্বাবলম্বী করতে ভর্তুকিযুক্ত ঋণদান প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। যার পোশাকি নাম ‘কর্মসাথী’। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের আবেদনপত্র বিলি প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। কিন্তু আবেদনপত্র নিতে তেমন উৎসাহ দেখা যাচ্ছে না বাঁকুড়া জেলায়। এ জন্য ওই প্রকল্পের প্রচারে খামতিকেই দায়ী করছেন অনেকে।
বাঁকুড়া জেলা শিল্প দফতর সূত্রের খবর, মূলত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে উদ্যোগীদের সাহায্য করতেই কর্মসাথী প্রকল্পে নেওয়া হয়েছে। তবে এই প্রকল্পে ফুলচাষ, উদ্যানপালন, ফলের বাগান, আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ-সহ কেনা-বেচা ব্যবসাতেও (ট্রেডিং) ঋণ দেওয়া হবে। উপভোক্তা কী ধরনের ব্যবসার জন্য ঋণ চাইছেন ও তার পরিকল্পনার রূপরেখা জেনেই ঋণের অর্থ নির্ধারণ করা হবে। দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, সর্বোচ্চ দু’লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ মিলবে। তার মধ্যে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি মিলবে। বার্ষিক সুদ খুব বেশি হবে না। ওই ভর্তুকির পাশাপাশি, নিয়মিত ঋণ পরিশোধে মোট সুদেও ছাড় মিলবে ৫০ শতাংশ। ঋণ মিলবে কেবল সমবায় ব্যাঙ্ক থেকেই। দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, এই প্রকল্পে আবেদন পদ্ধতি খুবই সরল। ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স না থাকলেও আবেদন করা যেতে পারে। বিভিন্ন মহলের দাবি, করোনা পরিস্থিতিতে সব থেকে বেশি ধাক্কা খেয়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এই প্রকল্পের দৌলতে তাঁরা নতুন করে ব্যবসা সাজানোর সুযোগ পাবেন। যদিও জেলা শিল্প দফতর সূত্রে খবর, গত সোমবার থেকে জেলা শিল্প দফতরে এই প্রকল্পের আবেদনপত্র বিলি শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত মেরেকেটে ৪০টি আবেদনপত্র বিলি হয়েছে।
এত রকম সুবিধা থাকলেও কেন এই প্রকল্পে আশানুরূপ সাড়া মিলছে না? প্রকল্পটির তেমন প্রচার হচ্ছে না বলেই দাবি বিভিন্ন মহলের। বাঁকুড়া শহরের মাচানতলার চা বিক্রেতা শ্রীবাস দে মোদক বলেন, “দীর্ঘ লকডাউনে ব্যবসা বন্ধ ছিল। আনলক পর্বেও বাজার জমেনি। ক্রেতারা দোকানে আসতে ভয় পাচ্ছেন। পরিস্থিতি এমনই যে ব্যবসার মাল কেনার টাকাও উঠছে না। এই অবস্থায় সুলভে সরকারি ঋণ পেলে ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে পারব। কিন্তু কর্মসাথী প্রকল্পের বিষয়ে আমার জানাই ছিল না।” বাঁকুড়ার কিসানমান্ডির ফুল ব্যবসায়ী চন্দন গঙ্গোপাধ্যায়ও বলেন, “কর্মসাথী প্রকল্পে এত সুবিধা আছে জানাই ছিল না। অবশ্যই ঋণের জন্য আবেদন করব।”
বাঁকুড়া জেলা শিল্প আধিকারিক সমীরকুমার পান্ডা বলেন, “সদ্য প্রকল্পটি চালু হয়েছে। বাঁকুড়ায় এই প্রকল্পের প্রচারে নানান জায়গায় ফ্লেক্স, ব্যানার টাঙানো হবে। আরও নানা ভাবে প্রকল্পের প্রচার চালাচ্ছি।” ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোগপতিদের প্রকল্পটি নিয়ে সচেতন করা হবে বলে জানিয়েছেন বাঁকুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (শিল্প) যুগ্ম সম্পাদক প্রবীর সরকার। তিনি বলেন, “আমরা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগপতিদের সঙ্গে বৈঠক করে কর্মসাথী প্রকল্প নিয়ে সচেতন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকারের কটাক্ষ, “আগেও রাজ্য সরকার সাহায্য করার স্বপ্ন দেখিয়ে নানা প্রকল্পের কথা বলেছেন। সে সব কাগজে-কলমে হলেও বাস্তবে কেউই সুবিধা পাননি।’’ তবে জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরার দাবি, “কর্মসাথী প্রকল্পের সুবিধা সর্বস্তরের মানুষ পাবেন। বিজেপির নেতারা সমালোচনা বন্ধ করে আমাদের কাজ দেখুন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy