শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি হাট চত্বরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বর্জ্য থেকে শুরু করে প্লাস্টিক। হাট সংলগ্ন রিসর্টগুলির বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনের পরিকাঠামোও গড়ে তোলা হয়নি জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। সোমবার দুপুরে সোনাঝুরি হাট পরিদর্শন করার পরে সুভাষ জানান, প্রয়োজনে পরিবেশ আদালত ও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা বিশেষত আশপাশের গ্রামাঞ্চলের মহিলারা নিজের হাতে জামাকাপড় থেকে শুরু করে নানা অলঙ্কার, ঘর সাজানোর জিনিস-সহ বিভিন্ন সামগ্রী পসরা সাজিয়ে বসেন সোনাঝুরির হাটে। সেই হাট দেখতে ও কেনাকাটা করতে সারা বছরই পর্যটকেরা ভিড় করেন। যত দিন গিয়েছে, হাট ততই বড় হয়েছে। এখন সেই হাট শ্যামবাটির মোড় থেকে খোয়াই বন যাওয়ার রাস্তার ধারেও ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে জঙ্গলের পরিবেশ নানা ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ। কোথাও জঙ্গলের মধ্যে অবাধে পড়ে থাকছে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ও বোতন। কোথাও হাটে বসার জন্য গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। আবার হাটকে কেন্দ্র করে শয়ে শয়ে গাড়ি জঙ্গলে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
যে হাট এক সময় শুধুমাত্র শনিবার বসত, এখন সেটি সপ্তাহে ছ'দিন বসেছে। যার ফলে সোনাঝুরির জঙ্গলের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এ দিন সুভাষ দত্ত এসে হাটে বসা ব্যবসায়ী থেকে শুরু রিসর্ট মালিকদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। পরে ওই পরিবেশকর্মী বলেন, ‘‘এখানে এসে যা দেখলাম এবং যা হচ্ছে, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। আমি কুড়ি-পঁচিশ বছর আগে যে হাট দেখেছিলাম, আজ তা সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেখলাম গাছগুলোকে কী ভাবে মেরে ফেলা হয়েছে এবং সেই গাছ কেটে কাঠের জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার হচ্ছে।’’
তাঁর দাবি, কোনও এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এই হাট রোজ বসিয়ে দিয়েছেন। আজ সোনাঝুরি জঙ্গল দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। আগামী প্রজন্মের কাছে দেখার আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘দরকার পড়লে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যাব। শান্তিনিকেতনের প্রকৃতি ও পরিবেশকে বাঁচানোর জন্য যে লড়াই, তা আমাদের লড়তে হবে এবং জিততে হবে।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)