তাঁদের বন্ধুরা রামনবমীর মিছিলে হাঁটবেন। এই চড়া রোদে তাঁদের যদি গলা শুকিয়ে আসে, সেই কথা ভেবে শরবতের ব্যবস্থা করেছিলেন সাহিল আনসারি, রাজু আনসারি, রাজা আনসারি, ফিরোজ আনসারি, ফারুক আনসারিরা। রামের নামে ধ্বনি তুলতে তুলতে মিছিলে হাঁটার মাঝে মুসলিম বন্ধুদের হাত থেকে জল খেয়ে তৃপ্ত হলেন তাঁদের হিন্দু বন্ধুরাও। রবিবার, আড়শা থানার সিরকাবাদে রামনবমীর মিছিলে এ ভাবেই মিলেমিশে এক হয়েছে দুই সম্প্রদায়। আক্ষরিক অর্থেই যেন সম্প্রীতির উৎসব উদ্যাপিত হল ধর্মীয় ভেদাভেদ মুছে।
সিরকাবাদ সদর পাড়ার বাসিন্দা সাহিল, ফিরোজ, রাজুরা। ছোট থেকে তাঁরা যেমন পাড়ার হনুমান মন্দিরের পুজোর প্রসাদ খেয়েছেন, তেমনই তাঁদের হিন্দু বন্ধুরাও ইদের পরবের পায়েসের জন্য অপেক্ষা করে থেকেছেন বছর ভর। পড়শিদের মাঝে ধর্ম কোনও দিন পাঁচিল তুলতে পারেনি বরং হয়ে উঠেছে সম্প্রীতির সেতু। সাহিলের কথায়, “আমাদের বন্ধুদের উদ্যোগেই এলাকায় রামনবমীর শোভাযাত্রা হয়েছে এ দিন। আমরাও আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। প্রচণ্ড গরমের কথা ভেবেই শরবতের ব্যবস্থা করি ওদের জন্য।” নাজির আনসারি বলেন, “ইদের সময়ে আমাদের হিন্দু বন্ধুরাও সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন।”
সিরকাবাদ রামনবমী উদ্যাপন কমিটির এক সদস্য চিত্তরঞ্জন মাঝি বলেন, “এই যুবকদের উদ্যোগ প্রশংসনীয়।” সিরকাবাদের বাসিন্দা তথা শিক্ষক সলিল মাঝির মতে, “এই দৃশ্য় সম্প্রীতির নজির। ভবিষ্যতেও দুই সম্প্রদায় পারস্পরিক সহযোগিতায় এ ভাবেই সমস্ত উৎসব পালন করুক।” বলরামপুর স্টেশন রোডে রামনবমীর শোভাযাত্রায় জলের বোতল বিলি করেন স্থানীয় সমাজকর্মী তথা তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের বলরামপুর ব্লক সভাপতি রফিক আনসারি-সহ এলাকার হামিদ আনসারি, আসিফ আনসারিরা। উৎসব সকলের, এই বার্তাই যেন দিতে চান তাঁরা।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)