আশ্বাস মিলছে নানা রকম। কিন্তু ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনও কার্যত দিশাহারা জেলার চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা। আপাতত আন্দোলন জারি রেখে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর আশ্বাস ও এসএসএসির উপরেই তাকিয়ে সকলে।
জেলার এক চাকরিহারা শিক্ষিকা বিউটি সাহা বলছেন, ‘‘এসএসসি বলেছে যোগ্য-অযোগ্য তালিকা দেবে। সেটা যদি সার্টিফায়েড কপি হয় ও তার ভিত্তিতে রাজ্য সরকার রিভিউ পিটিশনে যায়, তাহলে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখছি।’’ আর এক চাকরিহারা শিক্ষক বিনয় কর্মকার বলছেন, ‘‘আশা রাখছি। কিন্তু যতক্ষণ না কিছু হচ্ছে নিশ্চিন্ত হতে পারছি না।’’
গত ৩ এপ্রিল দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীর। যোগ্য এবং অযোগ্য বাছা না যাওয়াতেই পুরো প্যানেল বাতিলের রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। চাকরি হারিয়ে দিশেহারাা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। জেলায় চাকরিহারার সংখ্যা ১০১৭। কেন অযোগ্যদের জন্য যোগ্যদের চাকরি যাবে, সেই প্রশ্নে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। শুক্রবার চাকরিহারা শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, যে তালিকা হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) জমা দিয়েছে সেটিই প্রকাশ করা হবে। আগামী দু সপ্তাহের মধ্যে আইনি পরমার্শ মেনে ওই তালিকা প্রকাশের কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তারপরই ক্ষীণ আশা দেখছেন অনেকে। কারও মনে অবশ্য সংশয়।
জেলায় চাকরিহারা শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ ও যোগ্য অযোগ্যের তালিকা প্রকাশ পেলে তাঁরা যে যোগ্য সেটা প্রকাশ্যে বলতে পারবেন। রিভিউ পিটিশনে আদালতের রায় যোগ্যদের পক্ষে যাবে বলে আশায় রয়েছেন অনেকে। তবে সংশয়ও রয়েছে। অনেকে বলছেন, ‘‘এসএসসির দেওয়া যে তথ্য বিশ্লেষণ করে হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট সন্তুষ্ট হতে পারেনি, সেই তথ্যই যদি সামনে আসে তাতে আদতে লাভ কিছু হবে কি?’’ চাকরিহারা এক শিক্ষক সুদীপ মণ্ডল বলছেন, ‘‘যতদিন না এই কাজগুলো ফলপ্রসূ হচ্ছে ততদিন কোনও কিছু হওয়ার নয়। ’’ চাকরিহারা এক শিক্ষক জয়দীপ দাস বলছেন, যা বলা হয়েছে তার মধ্যে আইনের বিষয় জড়িয়ে। কী হবে বুঝতে পারছি না।’’
তবে যত দিন না তাঁদের সসম্মানে স্কুলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তত দিন পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চাকরিহারারা। জানা গিয়েছে, কলকাতায় ধর্নামঞ্চে প্রতিদিন জেলা থেকে বেশ কয়েকজন সেখানে যোগ দিচ্ছেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)