ছবি: সংগৃহীত।
ভাইফোঁটার আগের দিনের সকাল। রামপুরহাট হাটতলার মাছবাজার এলাকা। এক মহিলা বিক্রেতা হাঁকছেন, ‘ইলিশ খান, ইলিশ। চারাপোনার দরে ইলিশ।’ বাজারের অন্য প্রান্ত থেকেও শোনা যাচ্ছে ডাক, ‘এ বার ইলিশেই সারুন ভাইফোঁটা।’
রামপুরহাট, নলহাটি, সিউড়ি, দুবরাজপুর, সাঁইথিয়া, বোলপুর সর্বত্রই ইলিশের দর ছিল কমবেশি এক। ২০০ থেকে ২৫০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। ২৫০– ৫০০ গ্রাম ওজনের দাম ঘোরাফেরা করেছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়। চারশো থেকে ছ’শো টাকায় বিক্রি হয়েছে ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ। তার উপরে বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়।
জেলার মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, বেশির ভাগ ইলিশই এসেছে পড়শি জেলা মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থেকে। সাঁইথিয়া পুর এলাকার ব্যবসায়ী নিমো দাস জানালেন, চলতি বছরে ইলিশের জোগান এত যে ডায়মণ্ডহারবারের ইলিশ শেষ না হতেই ফরাক্কার ইলিশ বাজারে এসে যাচ্ছে। ফলে বাজারে ইলিশের ঘাটতি পড়েনি। ভাল জোগান রয়েছে ভাইফোঁটার বাজারেও। তবে বোলপুর বাজারে দু’দিন হল ইলিশের জোগান আগের থেকে একটু কম বলে জানিয়েছেন সেখানকার মাছ ব্যবসায়ী বাবু দাস। বাবুর কথায়, ‘‘ভাইফোঁটার দিনে অবশ্য ভাইদের পাতে ইলিশের জোগানে কোনও অসুবিধা হবে না। জামাইষষ্ঠীর চেয়ে অনেক কম দরেই ভাইরা ইলিশ পেয়ে যাবেন।’’
তবে জোগান কম বড় ইলিশের। সেই সুযোগে ঢুকে পড়েছে একশো থেকে দেড়শো গ্রামের ইলিশ। নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও অবাধে বিকোচ্ছেও তা। প্রশাসনের বক্তব্য, কই কেউ তো কোনও অভিযোগ করেনি। রামপুরহাটের বাজারে গিয়ে দেখা গেল সেই ছোট ইলিশের দাম ঘোরাফেরা করছে ১১০-১২০ টাকায়। খুব সস্তায় হওয়ায় অনেকেই কিনছেনও। রামপুরহাটের ব্যবসায়ীরা জানালেন, ফরাক্কা থেকেই এমন ইলিশ আমদানি হচ্ছে। নলহাটি বাজারেও ছোট ইলিশের জোগান বেশি বলে জানালেন সেখানকার মাছ ব্যবসায়ী পরিমল ধীবর।
ইলিশের বাড়বাড়ন্তে বিক্রিবাটা কম অন্য মাছের। রামপুরহাট মাছ বাজারের ব্যবসায়ী উজ্জ্বল ধীবর জানালেন, বাজারে গত দু’তিন দিন ধরে ইলিশের জোগান হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় অন্য কোনও মাছ ক্রেতারা নিতে চাইছেন না। তা ছাড়া গ্রামেগঞ্জে ভাইফোঁটার দিন গ্রামের পুকুরে মাছ ধরার প্রবণতা থাকে। সেক্ষেত্রে আজ, ভাইফোঁটার দিনে বাজারে বড় সাইজের দিশি মাছের জোগান বাড়তে পারে।
কেনাকাটি সেরে খুশি অনেকেই। বাজারেই দেখা গেল, এক দিন আগেই অনেকে ভাইফোঁটার ইলিশ কিনে রাখছেন। কথা বলে জানা গেল, ভিড় আর দাম বাড়ার আশঙ্কা এড়াতে অনেকেই এই পথ নিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, ‘‘ভাইফোঁটাতেও ভাইয়ের পাতে সস্তার ইলিশ তুলে দিতে পারছি। আর কি চাই!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy