Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Potato

আলুসেদ্ধ, তোমার কি দিন ফুরোল?

নতুন আলু মাঠ থেকে না ওঠা পর্যন্ত আলুর দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। তাতে আরও প্রমাদ গুনছেন সাধারণ ক্রেতা।

অপেক্ষা: বাজারে অগ্নিমূল্য। সরকারি দামে আলু কেনার লাইন সুফল বাংলা কেন্দ্রে। বোলপুরে মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

অপেক্ষা: বাজারে অগ্নিমূল্য। সরকারি দামে আলু কেনার লাইন সুফল বাংলা কেন্দ্রে। বোলপুরে মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

বাসুদেব ঘোষ 
বোলপুর শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২০ ০০:২৫
Share: Save:

যত দিন যাচ্ছে, আলুসেদ্ধ খাওয়ার আগেও দশবার ভাবতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত থেকে গরিব মানুষজনকে। বাজারে আলুর দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে পকেটে টান পড়তে শুরু করেছে আম জনতার। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে দফায় দফায় দাম বেড়েছে আলুর। যে জ্যোতি আলু ক’দিন আগেও ৩৮ থেকে ৪০ টাকা কিলো দরে বিকিয়েছে, বীরভূমে বিভিন্ন বাজারে সেই আলুই এখন ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা!

মঙ্গলবার বোলপুর,সিউড়ি ও রামপুরহাট বাজারে জ্যোতির দাম ছিল এতটাই চড়া। ব্যবসায়ীদের দাবি, জোগানে ঘাটতি থাকার কারণেই আলুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছর আলু উৎপাদন কম হওয়ায় এই অবস্থা। বোলপুর বাজারে এ দিন জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা প্রতি কিলোয়। চন্দ্রমুখীর দাম ছিল ৫০ থেকে ৫২ টাকা প্রতি কেজি। রামপুরহাটে প্রতি কুইন্টাল আলু ৩৯০০ টাকা ছিল, যা কয়েক দিনে অনেকটাই বেড়েছে। শহরের কিছু বাজারে জ্যোতি ৪৮ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে। তুলনায় সিউড়ির বাজারে ৪২ থেকে ৪৪ টাকা কেজি ছিল জ্যোতির দাম।

মধ্যবিত্তের কথা চিন্তা করে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বিভিন্ন জেলায় সুফল বাংলার স্টলে ২৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করা হচ্ছে। তবে, চাহিদার তুলনায় তা পর্যাপ্ত নয়। ভোর থেকে উঠে ক্রেতারা লাইন দিচ্ছেন সুফল বাংলার স্টল গুলিতে। কয়েক ঘণ্টায় শেষ হয়ে যাচ্ছে সেখানকার আলু। তখনও পিছনে লম্বা লাইন।

নতুন আলু মাঠ থেকে না ওঠা পর্যন্ত আলুর দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। তাতে আরও প্রমাদ গুনছেন সাধারণ ক্রেতা। তাঁদের বড় অংশের অভিযোগ, জোগানে ঘাটতি আছে ঠিকই। তবে, এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কালোবাজারি করে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করার ফলেই বাজারে আলুর দাম এমন আকাশছোঁয়া। বোলপুরের বাসিন্দা মৌসুমী ঘোষ, অনামিকা দাস, সন্দীপ ঘোষরা বলেন, ‘‘অন্য বছর এই সময়েই আলু সবচেয়ে সস্তা থাকে। কিন্তু এ বছর আলুর দামেই যেন পেঁয়াজের ঝাঁঝ! এ ভাবে চললে এক সময় অতি প্রিয় আলুসেদ্ধ খাওয়ার আগেও ভাবতে হচ্ছে। আলুপোস্তর কথা তো ভাবাই ছেড়ে দিয়েছি!’’

খাওয়ার হোটেলগুলিও পড়েছে বিপাকে। আলুসেদ্ধ বা ভাজার দাম হুট করে তাঁরা বাড়াতে পারছেন না ক্রেতা হারানোর আশঙ্কায়। ফলে, অন্য উপুায় খুঁজছেন। বোলপুর সুপার মার্কেট এলাকার হোটেল মালিক বাবু মালিক, স্টেশন বাজারের সঞ্জয় দাস বলেন, ‘‘দুপুরের মেনুতে আলুভাজা ছিল মাস্ট। এখন আলুর দাম যে জায়গায় পৌঁছেছে, সেখানে আলুভাজা বন্ধ করে ক্রেতাদের বেগুনভাজা দিচ্ছি। বেগুনের গাম আলুর অর্ধেক এখন।’’ তাঁরা এও জানালেন, আগে রোজ আলুসেদ্ধ করা হত। বহু ক্রেতা আলুসেদ্ধ চাইতেন। এখন সপ্তাহে তিন দিন করে দেওয়া হয়েছে।

বোলপুরের আলু ব্যবসায়ী গোপাল প্রসাদ গুপ্ত কিংবা রামপুরহাটের আনাজ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি উমেশ প্রসাদ ভকত বলেন, “নতুন আলু উঠতে মাসখানেক দেরি। জোগান কম বলে দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে।’’ বীরভূম জেলা আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক দীনবন্ধু মণ্ডলও বলছেন, ‘‘এ সময়ে আলুর দাম এতটা থাকে না। জোগানে টানের জন্য এই ল্যবৃদ্ধিমূ।’’

অন্য বিষয়গুলি:

High price Potato
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy