রাইপুরে ত্রাণ দিচ্ছেন বিধায়ক সমীর চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র
বন্যার জল নামতেই শুরু কেউ আক্রান্ত হচ্ছেন জ্বরে, কেউ আবার পেটের রোগে। পরিস্থিতি সামলাতে জেলার মানাচরগুলির উপরে বাড়তি নজর দিচ্ছেন প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। শুরু হয়েছে পানীয় জলের উৎস পরিশুদ্ধ করার কাজও।
ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবিত হয়েছিল জেলার সোনামুখী ও বড়জোড়া ব্লকের বিস্তীর্ণ মানাচর। বর্তমানে বন্যা পরিস্থিত অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। প্রশাসনের শিবিরগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে রবিবারই বড়জোড়ার পখন্না মানাচরের বড়মানা ও ব্রাহ্মণডিহা এলাকার প্রায় একশো জন জ্বর ও পেটের অসুখে আক্রান্ত হন। ওই দু’টি গ্রামেই স্বাস্থ্য শিবির চালু করা হয়েছে। এ দিন দুপুর পর্যন্ত দু’টি গ্রামের ৩৫টি নলকূপের জল পরিশুদ্ধ করা হয়েছে বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। বিডিও (বড়জোড়া) পঙ্কজ আচার্য বলেন, “ব্রাহ্মণডিহা ও বড়মানা এলাকায় জ্বর ও পেটের অসুখে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। পরিস্থিতি দেখে ওখানে স্থায়ী স্বাস্থ্য শিবির চালু করা হয়েছে। এ ছাড়া ব্লকের মানাচর এলাকার সার্বিক পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখেছেন স্বাস্থ্য কর্মীরা।” বাঁকুড়া জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রসূনকুমার দাস বলেন, “সোনামুখী ও বড়জোড়া ব্লকের যে সব এলাকায় বন্যা হয়েছিল সেগুলি আমাদের কর্মীরা পরিদর্শন করেছেন। অসুস্থদের চিকিৎসা করা হচ্ছে”। তিনি জানান, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর এবং গ্রামপঞ্চায়েতের সঙ্গে যৌথ ভাবে পানীয় জলের উৎস বিশ্বদ্ধকরণ করার কাজ চলছে। স্বাস্থ্য দফতরের কাছে পর্যাপ্ত ওষুধপত্র রয়েছে বলেও তাঁর দাবি।
এ দিকে বন্যা কবলিত গ্রামগুলিতে প্রশাসনের পাশাপাশি দলীয় ভাবেও ত্রাণ বিলি শুরু করেছে তৃণমূল। রবিবার রাইপুর ব্লকের পুর্ণাপানি গ্রামে যান বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী এবং তালড্যাংরার বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য সমীর চক্রবর্তী। এলাকা ঘুরে দেখে পুর্ণাপানির ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে চাল, ডাল, নুন আর আলুর প্যাকেট তুলে দেন তাঁরা। শনিবার রাইপুরের বারিকুল থানার হাতকাটা এলাকার প্রৌঢ়া সীতামণি মুর্মু (৫০) কংসাবতীর সেচ খালে স্নান করতে নেমে তলিয়ে যান। বিকেলেই তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। সেই ব্যাপারেও খোঁজখবর নেন অরূপবাবু ও সমীরবাবু। সমীরবাবু বলেন, “প্রশাসনের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো দলীয় ভাবেও আমরা দুর্গত মানুষজনের পাশে দাঁড়াচ্ছি।” অরূপবাবু বলেন, “যাঁদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁদের সবাইকে ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। সরকারি ভাবেও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।”
বাঁকুড়া জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানান, মানাচর এলাকাগুলির পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। পেটের রোগ বা কোনও অসুখ যাতে না ছড়ায় তার জন্য জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা পদক্ষেপ করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy