আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বিবাদেই জড়ালেন বোলপুরের তৃণমূল সাংসদ অনুপম হাজরা। ক্ষুব্ধ অনুপম জানিয়েছেন, লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন তাঁকে দু’দিন এখানে এনে বসিয়ে রাখার জন্য রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে লোকসভার স্পিকারের কাছে নালিশ জানাবেন তিনি। এমনকী আনতে পারেন স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগও। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাঁর সঙ্গে কোনও ধরনের অন্যায় হয়েছে বলে মানতে নারাজ।
সাত দিনের মধ্যে কাজে যোগ দেওয়ার চরমপত্র পাঠিয়েও কাল নানা যুক্তি দেখিয়ে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সঞ্জীব ভট্টাচার্য তাঁকে ফিরিয়ে দেন। তাঁকে জানান, ‘‘একজন সাংসদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কাজ করতে পারেন কিনা, মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে তা জানতে চাইব। মন্ত্রকের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তাঁকে অপেক্ষা করতে হবে।’’ তাতেও আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দোষ দেখতে পাননি অনুপমবাবু। সব দায় চাপিয়েছিলেন বিশ্বভারতীর কাঁধে।
কিন্তু বিবাদ বাধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তটা রেজিস্ট্রারকে লিখে দিতে বললে। কাজে যোগ দেওয়ার জন্য অনুপমবাবু যে চিঠি লিখেছেন, তার প্রাপ্তি স্বীকারে রাজি হলেও মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের পরামর্শ চাওয়ার কথা লিখে দিতে রাজি হননি সঞ্জীববাবু। শেষে চাপাচাপিতে বলেন, সংশ্লিষ্ট সবাই বসে এ ব্যাপারে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। গত কাল তা আর সম্ভব নয় বলে পাশ কাটাতে চান রেজিস্ট্রার। যোগদান অথবা যোগ না দিতে পারার ব্যাপারটা লিখিতভাবে না পেলে তিনি যে শিলচর ছাড়ছেন না, রেজিস্ট্রারকে জানিয়ে দেন অনুপমবাবু। এবং শেষপর্যন্ত ওই চিঠির জন্য আজ থেকেই গিয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আজ বেলার দিকে মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করে অনুপমবাবুকে লিখিতভাবে জানায়, মন্ত্রকের পরামর্শের জন্য তাঁর বিষয়টিকে পাঠানো হয়েছে।
এরপরই অনুপমবাবুর প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ মন্ত্রকের পরামর্শ নিয়ে তাঁকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল কিনা? অন্যদের লিয়েন শেষে যোগদানের জন্য পরামর্শের প্রয়োজন না পড়লে তাঁর বেলায় কেন সেই পরামর্শ জরুরি? সাংসদ বলেই এত জটিলতা হলে অধ্যক্ষের কাছে চিঠি না পাঠিয়ে সরাসরি কেন অধিবেশন চলাকালীন তাঁকে ডেকে আনা হল? কেন তাঁকে লোকসভার অধিবেশন থেকে দু’দিন সরিয়ে রাখা হল? আগেই মন্ত্রকের সঙ্গে পরামর্শ করা হলে তাঁকে যে অধিবেশন ফেলে শিলচরে এসে বসে থাকতে হতো না, তা তিনি বারবার উল্লেখ করেন।
তাঁর অভিযোগ, বিশ্বভারতীরই কোনও এক চক্রের চাপে রেজিস্ট্রার তাঁকে কাজে যোগ দিতে দিচ্ছেন না। একের পর এক পরস্পরবিরোধী কথা বলে চলেছেন। কখনও বলছেন, সাংসদ হওয়ার কথা বিশ্ববিদ্যালয় জানে না। আবার বলা হচ্ছে, সাংসদরা শিক্ষকতা করতে পারেন কিনা তা দেখতে হবে। বিশ্বভারতীর সঙ্গে তাঁর লড়াইয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সাংসদ অনুপমবাবু শোনান, আরেকটা সুশান্ত পর্ব হতে চলল দেখছি!
রেজিস্ট্রার সঞ্জীব ভট্টাচার্য অবশ্য ও সব কথা গায়ে মাখতে চান না। তিনি বলেন, ‘‘জটিলতা দেখা দেওয়ায় মন্ত্রকের পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। আজই সমস্ত কাগজপত্র চলে গিয়েছে।’’ তিন-চার দিনের মধ্যেই জবাব মিলবে বলে তিনি আশা করছেন। সঞ্জীববাবুর কথায়, তাঁরা যা বলবেন, সেটাই আমরা মেনে নেব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy