E-Paper

বৈঠকে গরহাজির সাত কর্মাধ্যক্ষই

এ দিন বৈঠকে সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো, সহ-সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও কর্মাধ্যক্ষ প্রতিমা সোরেন উপস্থিত ছিলেন।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:০৯
Share
Save

জেলা পরিষদে তৃণমূলের সংসারে অশান্তির ছায়া! তা-ও আবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফরের প্রাক্কালে। সোমবার জেলা পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ অর্থ স্থায়ী সমিতির বৈঠক ৯ কর্মাধ্যক্ষের মধ্যে ৭ জনই এড়ালেন। সূত্রের দাবি, গরহাজির থাকা কর্মাধ্যক্ষদের কয়েকজন পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য এ দিন পৃথক বৈঠকও করেছেন।

তবে জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো দাবি করেন, ‘‘কিছু কর্মাধ্যক্ষ একশো দিনের শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করার শিবিরে ছিলেন। কয়েকজনের পারিবারিক কাজ থাকায় তাঁরাও সভায় আসতে পারেননি।”

কেন এই অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখে সবাইকে নিয়ে দল আলোচনায় বসবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া।

৪৫ আসনের জেলা পরিষদে মাত্র দু’টি বিজেপির। বাকি সবই তৃণমূলের।অর্থ সংস্থা, উন্নয়ন ও পরিকল্পনা জেলা পরিষদের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থায়ী সমিতি। জেলা পরিষদের উন্নয়নমুখী নানা প্রকল্প তৈরি ও তার রূপায়ণ নিয়ে সেখানে আলোচনা হয়। জেলা পরিষদের সভাধিপতি সমিতির চেয়ারম্যান, সহ-সভাধিপতি ভাইস চেয়ারম্যান, বাকি ৯ কর্মাধ্যক্ষ সমিতির সদস্য।

এ দিন বৈঠকে সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো, সহ-সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও কর্মাধ্যক্ষ প্রতিমা সোরেন উপস্থিত ছিলেন। শেষবেলায় আসেন আর এক কর্মাধ্যক্ষ জয়মল ভট্টাচার্য। তবে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হংসেশ্বর মাহাতো, মহিলা সংগঠনের সভানেত্রী তথা প্রাণিসম্পদ কর্মাধ্যক্ষ সুমিতা সিং মল্ল, নারী ও শিশু কল্যাণের কর্মাধ্যক্ষ শিবাণী মাহাতো, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের কর্মাধ্যক্ষ নীলাঞ্জনা পট্টনায়েক, শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ স্মরজিৎ মাহাতো, খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ নমিতা সিং মুড়া, কৃষি কর্মাধ্যক্ষ অজিত বাউরি অনুপস্থিত ছিলেন। সূত্রের দাবি, তাঁদের কয়েকজন এ দিন জেলা পরিষদে এলেও স্থায়ী সমিতির বৈঠক এড়িয়েছেন।

দলের অন্দরের খবর, এমনটা যে হতে চলেছে, সে ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল। জেলা পরিষদ পরিচালনা নিয়ে সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতির সঙ্গে ক্রমশই তৃণমূলের কর্মাধ্যক্ষদের একাংশের মতানৈক্য তৈরি হচ্ছিল। শনিবার দলের জেলা কার্যালয়ে বরফ গলাতে একপ্রস্থ বৈঠকও হয়। কিন্তু সমাধানসূত্র বার হয়নি। এ দিন বৈঠক এড়িয়ে সেই ক্ষোভ প্রকাশ্যে নিয়ে এলেন সংখ্যাগরিষ্ঠ কর্মাধ্যক্ষেরা।

বিক্ষুব্ধ কর্মাধ্যক্ষদের অভিযোগ, একনায়কের মতো জেলা পরিষদ চালাচ্ছেন সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি। উন্নয়নমূলক কাজকর্ম নিয়ে কর্মাধ্যক্ষদের সঙ্গে আলোচনা করেন না তাঁরা। কয়েক জন কর্মাধ্যক্ষের অভিযোগ, ‘‘জেলা পরিষদে দুর্নীতি শুরু হয়েছে। কর্মাধ্যক্ষদের কোনও গুরুত্বই দেওয়া হচ্ছে না।” অসম্মানিত বোধ করায় নির্দিষ্ট বার্তা দিতেই স্থায়ী সমিতির বৈঠক তাঁরা কার্যত বয়কট করেছেন।

পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হংসেশ্বরের অভিযোগ, ‘‘বিভিন্ন স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষেরা গুরুত্ব পাচ্ছেন না। উন্নয়নমূলক কাজের পরিকল্পনা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনাই করা হচ্ছে না। অনেকেই অসন্তুষ্ট।’’

এই সূত্রেই বিজেপির রাজ্য নেতা বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতেই তৃণমূল সীমাহীন দুর্নীতি করছে। এ বার জেলার পরিষদের ওদের দ্বন্দ্বে তা সামনে এল। প্রশাসন দুর্নীতির নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি।’’

অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে সহ-সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘উন্নয়নমূলক কাজে স্বচ্ছতার সঙ্গে দরপত্র আহ্বান না করে দুর্নীতিকে প্রশয় দেওয়ার দাবি করছেন কিছু কর্মাধ্যক্ষ। তা না মানায় তাঁদের ক্ষোভ হয়েছে।” একনায়কতন্ত্র চালানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে সুজয়ের দাবি, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী সভায় গৃহীত কোনও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কর্মাধ্যক্ষরা ভোট দিতেই পারেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য গৃহীত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট দিলে তা খারিজ হয়ে যাবে। তা হলে কর্মাধ্যক্ষেরা এই গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মধ্যে না থেকে সভা এড়িয়ে কোন যুক্তিতে একনায়কতন্ত্রের অভিযোগ তুলছেন?’’ তবে সাত কর্মাধ্যক্ষ অনুপস্থিত থাকলেও এ দিনের সভা হয়েছে। সুজয় জানান, নিয়ম অনুযায়ী মোট সদস্যের এক চতুর্থাংশ সদস্য উপস্থিত হলেই কোরাম গঠিত হয়ে সভা হবে। সেই সংখ্যক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সহ সভাধিপতি সুজয়ের দাবি, ‘‘পরপর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকলে কর্মাধ্যক্ষদের জেলা পরিষদের সদস্য পদই খারিজ হয়ে যাওয়ার নিয়ম আছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

purulia TMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।