বিপদ সীমার কাছাকাছি বইছে দামোদর নদ। —ফাইল চিত্র।
ডিভিসি দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ায় দামোদর লাগোয়া বিষ্ণুপুর মহকুমার নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসন দুর্গতদের সরাতে শনিবার ত্রাণ শিবির খোলে। চালু করা হয় কন্ট্রোলরুম। এ দিন পাত্রসায়রের পাটিত গ্রামে উপানন্দ মণ্ডল নামে এক প্রৌঢ় স্থানীয় জোড় পেরিয়ে চাষের কাজ করতে যাওয়ার সময় জলের স্রোতে ভেসে যান।
এ দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দুর্গাপুর ব্যারাজে ৭০ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছিল। পরে তা কমিয়ে ৩০ হাজার করা হয়। তবে দামোদরে জল বেড়ে যাওয়ায় নদ লাগোয়া গ্রামগুলির বাসিন্দারা চিন্তায় পড়েছেন। সোনামুখীর দামোদরের চরের বাসিন্দাদের সরাতে শুরু করে প্রশাসন। বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘সোনামুখীতে ১০টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। দামোদর চর সংলগ্ন এলাকার মানুষদের সরানো হচ্ছে। পাত্রসায়র ও ইন্দাসে সতর্কতা জারি করা আছে।’’ তবে বড়জোড়ায় মানচরের বাসিন্দাদের এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সরানোর প্রয়োজন পড়েনি বলে জানিয়েছে বড়জোড়া ব্লক প্রশাসন।
এ দিন বেলার দিকে পাটিতের ৫৪ বছরের উপানন্দ মণ্ডল জোড়ের জল পেরিয়ে অন্য পারে জমিতে চাষ করতে যাচ্ছিলেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, জোড়ে জলের স্রোতে তিনি ভেসে যান। খবর পেয়ে প্রশাসন ও পুলিশ সেখানে যায়। পাত্রসায়রের বিডিও সুভাষ বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুর থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও ব্লকের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী স্পিড বোট নিয়ে জোড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে নিখোঁজের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’’
শুক্রবারের তুলনায় শনিবার বৃষ্টিপাত কিছুটা কমায় জমি ও লোকালয় থেকে জমা জল সরতে শুরু করেছে। কিন্তু আনাজের গোড়া পচার আশঙ্কা করছেন চাষিরা। সোনামুখীর নিত্যানন্দপুর, সমিতিমানা, কেনেটিমানার চাষিদের দাবি, অতিবৃষ্টিতে ডুবে থাকা ফসলের গাছ রোদ উঠলেই মরতে শুরু করে। স্থানীয় চাষি জয়ন্ত বিশ্বাস, তরুণ সরকার, উত্তম সরকারের দাবি, ‘‘অতিবৃষ্টিতে ডুবে যাওয়া ফসলের গাছ বাঁচানো যাবে না। বেগুন, পটল, ঘি করলা, লঙ্কা, লাউ সব শেষ।’’ একই অবস্থা সোনামুখীর ধুলাইয়ের বিভিন্ন এলাকাতেও।
জল নামলেও ক্ষতি করে দিয়ে গিয়েছে অতিবৃষ্টি। সোনামুখীর রাধামোহনপুর পঞ্চায়েতের ফকিরডাঙা গ্রামের কাছের পিচ রাস্তা ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ফকিরডাঙা, মেটেডাঙা, নিত্যানন্দপুর, বেলুয়া, পাণ্ডেপাড়া, সমিতিমানা ও কুলডাঙার মানুষজন যাতায়াত করতে পারছেন না। কাঁধে সাইকেল নিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন অনেকে। ইন্দাসের সোমসারে দেবখালের কড়ওয়েতে জল কমলেও স্বাভাবিক হয়নি যাতায়াত।
কোতুলপুরের লাউগ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকা এ দিন জলমগ্ন ছিল। কোতুলপুরের ডিঙ্গালখালের উপরে সেতু কয়েক বছর আগেই ভেঙেছে। এ বার বাঁশের সাঁকো ভেঙেছে। এলাকার প্রচুর জমি জলের তলায়। কোতুলপুরের বিধায়ক হরকালী প্রতিহার বলেন, “অতিবৃষ্টিতে কোতুলপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা যেন কৃষি দফতরে যোগাযোগ করেন। সরকারি নিয়মে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায় কি না, চেষ্টা করা হবে।’’ পুরুলিয়ার মধ্যে বৃষ্টি বেশি হয়েছে রঘুনাথপুর মহকুমা এলাকায়। বিভিন্ন এলাকায় জল নামতে শুরু করলেও রঘুনাথপুরের শ্রীপল্লি এ দিনও জলমগ্ন ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy