পিপিই নিয়ে অভিযোগের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে রামপুরহাটে ফুটপাতে বিক্রি হচ্ছে পিপিই। নিজস্ব চিত্র
এক নার্স করোনা-আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে বীরভূম ও রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার স্বাস্থ্যকর্মীদের। রবিবার ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকে এক নার্সের লালারসের টেস্টের রিপোর্টে করোনা-পজ়িটিভ ধরা পড়ার পরে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়েও স্বাস্থ্যকর্মীরা নানা প্রশ্ন তুলেছেন। তবে, স্বাস্থ্যকর্তাদের চিন্তায় রেখেছে, আক্রান্ত নার্সেরও করোনা-উপসর্গ না থাকার ঘটনা। গত দু’সপ্তাহে এমন একাধিক উপসর্গহীন করোনা-রোগীর সন্ধান মিলেছে জেলায়। সোমবার জেলার আরও দু’জনের করোনা-পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। এক জন দুবরাজপুর ব্লকের বাসিন্দা মহিলা, অন্য জনের বাড়ি নলহাটি ২ ব্লকে।
তবে এটা ঘটনা যে, সিউড়ি ও বোলপুর মহকুমা নিয়ে গঠিত বীরভূম স্বাস্থ্যজেলার তুলনায় রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলায় করোনা-আক্রান্ত সংখ্যা বেশি। জেলার মোট আক্রান্ত ১১ জনের মধ্যে দুবরাজপুর ব্লকের দু’জন। অন্য দিকে রবিবার পর্যন্ত রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৯ জন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার অধীন ৮টি ব্লকে হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র মিলিয়ে ১৬৫ জন নার্স থাকার কথা। আছেন ১২৮ জন। এই নার্সদের অধিকাংশই করোনা মোকাবিলায় সামনের সারিতে থেকে কাজ করছেন।
যে নার্সের শরীরে করোনার সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে, তিনি তাঁদেরই এক জন। তিনি ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের একটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত। রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার ডেপুটি সিএমওএইচ অমিতাভ সাহা জানিয়েছেন, ওই নার্সের সংস্পর্শে আসা পরিবারের লোকজন এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সহকর্মীদের লালারসের নমুনা নেওয়া হবে। আরও কাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন ওই নার্স, তা দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে স্বাস্থ্যকর্তারা জেনেছেন, ওই নার্স কোনও করোনা-আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসেননি। গত কয়েক মাসে জেলা ছেড়ে বাইরেও যাননি। তা হলে, সংক্রমণ হল কী ভাবে—এই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে স্বাস্থ্য কর্তাদের।
এ দিকে, সহকর্মী আক্রান্ত হওয়ার খবরে স্বাভাবিক ভাবেই রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রচণ্ড উদ্বেগে রয়েছেন। একই সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনায় করোনা মোকাবিলায় পরিকাঠামো নিয়ে অনেক ক্ষোভের কথাও তাঁরা জানাচ্ছেন। সুরক্ষার বিষয় নিয়েও তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁরা মূলত যে অভিযোগগুলি করেছেন, সেগুলি হল:
১) বীরভূম স্বাস্থ্যজেলায় নার্সদের সুরক্ষার জন্য যে পরিমাণ টাকা খরচ করা হয়েছে, রামপুরহাটে নার্স বা আশাকর্মীদের জন্য সেই পরিমাণ টাকা খরচ করা হয়নি।
২) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী এন-৯৫ মাস্ক বা থ্রি-লেয়ারড মাস্ক পর্যাপ্ত ভাবে স্বাস্থ্যকর্মীদের দেওয়া হয়নি। গ্লাভসের জোগানও অপ্রতুল। পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই), ফেস শিল্ডের মতো উপকরণ ছাড়া অনেক স্বাস্থ্যকর্মী ও আশাকর্মীরা দিনরাত কাজ করছেন।
৩) প্রতিটি ব্লক হাসপাতালে লালারস সংগ্রহ করার জন্য কিয়স্ক দেওয়া হয়নি। ফলে, স্বাস্থ্যকর্মীরা বিপদের ঝুঁকি নিয়েই লালারস সংগ্রহ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
৪) রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার অধীন নার্সিংহোমের কোভিড হাসপাতালের কিয়স্ক সঠিক ভাবে কাজ করছে না।
জেলায় বর্তমানে গর্ভবতী এবং শিশুদের টিকাকরণ কাজ শুরু হয়েছে। এই কাজে রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার ৮টি ব্লকে ফার্স্ট এএনএম এবং সেকেন্ড এএনএম-রা ফিল্ডে কাজ করছেন। আবার পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে করোনা সন্দেহভাজন রোগীর খোঁজ করছেন আশাকর্মীরা। এএনএম এবং আশাকর্মীরা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কাছে, তাঁদের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ দেওয়া হয়নি জানিয়ে লিখিত অভিযোগও করেছেন।
অভিযোগ মানতে চাননি ডেপুটি সিএমওএইচ অমিতাভবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘টিকাকরণ কর্মসূচি এবং করোনা মোকাবিলার জন্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী যা যা উপকরণ প্রয়োজন, তা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য জেলায় চারটি কিয়স্ক দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy