ফাইল চিত্র।
করোনাভাইরাস আতঙ্কে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্বভারতীতে বন্ধ হয়ে গেল বুধবারের সাপ্তাহিক ব্রহ্ম উপাসনা। এর আগেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে প্রথমে বসন্তোৎসব, তারপর রবীন্দ্র ভবন এবং তারপর সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন পাঠন বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকারের স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। যাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য উপাসনা গৃহের দরজা বন্ধ হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টই বলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন স্থগিত রয়েছে, তাই সঙ্গত কারণেই উপাসনাও বন্ধ থাকবে পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ পর্যন্ত।
প্রবীণ আশ্রমিকেরা জানান, ঐতিহ্যবাহী এই সাপ্তাহিক উপাসনার ইতিহাস একশো তিরিশ বছরেরও বেশি প্রাচীন। রাজা রামমোহন রায়ের নেতৃত্বে ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১২৩৫ বঙ্গাব্দের ৬ই ভাদ্র, বুধবার। সম্ভবত সেই দিনটিকে সম্মান জানিয়েই প্রত্যেক বুধবার ব্রহ্ম উপাসনার আয়োজন হয়ে আসছে।
১৮৯১ সালে কাচ মন্দির তৈরি হওয়ার পরে নিয়মিত সাপ্তাহিক উপাসনা শুরু হয় এবং শান্তিনিকেতন বাড়ি থেকে ব্রহ্ম উপাসনা স্থল কাচ মন্দিরে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়। ১৯০১ সালে ব্রহ্মচর্যাশ্রম বা অধুনা পাঠভবন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে ছাত্র-ছাত্রীরাই বুধবারের সাপ্তাহিক উপাসনা পরিচালনা করে আসছে।
বিশ্বভারতীর এই সুদীর্ঘ ইতিহাসে বেশ কয়েকবার বুধবারের সাপ্তাহিক উপাসনা বন্ধ থেকেছে। গ্রীষ্ম বা পুজোর ছুটির সময়েও বন্ধ থাকে উপাসনা। তবে বিশ্বভারতীর কার্যালয় খোলা থাকাকালীন শেষ কবে উপাসনা বন্ধ থেকেছে তা মনে করতে পারেননি আশ্রমিকেরা।
এমনকি যখন রবীন্দ্র ভবন থেকে নোবেল পুরস্কার চুরি হয়েছিল, সেই অস্থির পরিস্থিতিতেও বুধবারের সাপ্তাহিক উপাসনা বন্ধ থাকেনি। কিন্তু গোটা বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে যার প্রভাব শান্তিনিকেতনেও পড়েছে। প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, “গোটা বিশ্ব জুড়ে তৈরি হওয়া মহামারির পরিস্থিতির মধ্যে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন বন্ধ, শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন, সেই পরিস্থিতিতে সাপ্তাহিক উপাসনা না হওয়াটাই তো স্বাভাবিক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy