Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

কেন ডুবল শহর, তর্জা

বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খান বলেন, ‘‘ওই রিজার্ভার নদীর গতিপথে বাধা দিচ্ছে। এর ফলে জল উপচে পড়ছে। রিজার্ভার গড়ার সময়ে প্রশাসনের অনুমতি দেওয়াই উচিত হয়নি।’’

বাঁকুড়া-দুর্গাপুর বাইপাস। সতীঘাট ছিন্নমস্তা মন্দির এলাকায়। নিজস্ব চিত্র

বাঁকুড়া-দুর্গাপুর বাইপাস। সতীঘাট ছিন্নমস্তা মন্দির এলাকায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৮ ০৩:২৮
Share: Save:

শহর জলের তলায়।

সোমবার ভোর থেকেই বাঁকুড়া শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে জল ঢুকতে শুরু করেছিল। একতলা ডুবে যাওয়ায় অনেকেই জিনিসপত্র নিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন দোতলা বা ছাদে। শহরের গা ঘেঁষে বয়ে যাওয়া গন্ধেশ্বরী উপচে চলে এসেছে বাইপাসে। জলের নীচে চলে গিয়েছে সতীঘাটের কজওয়ে।

আর এতেই উঠছে প্রশ্ন। কেন শহর বানভাসি? কেশিয়াকোল সংলগ্ন এলাকায় গন্ধেশ্বরীর উপরে একটি রিজার্ভার গড়েছে বাঁকুড়া পুরসভা। বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খান বলেন, ‘‘ওই রিজার্ভার নদীর গতিপথে বাধা দিচ্ছে। এর ফলে জল উপচে পড়ছে। রিজার্ভার গড়ার সময়ে প্রশাসনের অনুমতি দেওয়াই উচিত হয়নি।’’ বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত অবশ্য মানছেন না। তিনি বলেন, ‘‘রিজার্ভারের ফলে ওই এলাকায় ভাঙন রোধ হচ্ছে। নদীর গতিতে কোনও বাধা হয়নি। তা ছাড়া প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই ওখানে রিজার্ভার গড়া হয়েছিল।’’ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর) অসীমকুমার বালা।

প্রশ্ন উঠছে শহরের নিকাশি নিয়েও। বাঁকুড়া শহরের লালবাজার এলাকার বাসিন্দা বিপ্লব বরাট বলেন, ‘‘নালাগুলির জল ধারণ ক্ষমতা বলতে কিছুই নেই। দীর্ঘ কাল সংস্কার হয়নি। এলাকার প্রতিটি ঘরে জল ঢুকে পড়েছিল।’’

শহরের স্কুল়়ডাঙার কলাপুকুর সংলগ্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। এলাকার বাসিন্দা সাকিনা বিবি, আমিনা বিবি, আজমিরা বিবিদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে জল চলে এসেছে। তাঁরা বলেন, ‘‘কলাপুকুরটি দীর্ঘকাল হল সংস্কার করা হয়নি। অল্প বৃষ্টিতেই উপচে পড়ে জল। আমরা বারবার পুকুর সংস্কারের দাবি তুলেছি। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুকুরটি ব্যক্তি মালিকানার।

শহরের দশ নম্বর ওয়ার্ডের মুক্তি সিনহা লেন এলাকায় রাস্তার উপরে পুকুরের পানা জলের স্রোতে বয়ে চলে আসে। এ দিন দুপুর পর্যন্ত ওই রাস্তার উপর থেকে জল নামেনি। স্থানীয় বাসিন্দা অনুপ চৌধুরী বলেন, ‘‘এলাকার বহু মানুষেরই ঘরের ভিতর জল ঢুকে পড়েছিল।’’

শহর সংলগ্ন এলাকায় গড়ে ওঠা নতুন নতুন পল্লিগুলিতে জল জমেছে। বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ির একতলা জলের তলায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কয়েক বছর ধরে ওই এলাকায় প্রচুর মানুষ বসবাস করলেও নির্দিষ্ট নিকাশি গড়ার ব্যাপারে প্রশাসন গা করেনি। এ দিন বোট নিয়ে উদ্ধার কাজে নামে প্রশাসনের কুইক রেসপন্স টিম। বেলা একটু গড়াতেই বৃষ্টি ধরে আসে। দুপুরের মধ্যেই শহরের বেশিরভাগ ওয়ার্ডের জল নেমে গিয়েছে বলে পুরসভার দাবি।

বাঁকুড়া জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমি নিজে কেশিয়াকোল এবং জুনবেদিয়া এলাকায় গিয়েছিলাম। প্রশাসনের পাশাপাশি দলীয় ভাবেও মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছি আমরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Contention Water Clog Bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE