বাংলার বাড়ি প্রকল্পে দ্রুত কাজ শুরু করতে ‘চাপ’ দিচ্ছে প্রশাসন। এ দিকে পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে বালি। এক ট্রাক্টর বালির দাম চার হাজার থেকে সাত হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বালির সরকারি দাম নির্ধারণের দাবি তুলল জেলা কংগ্রেস। ১ মার্চ জেলা জুড়ে এক ঘণ্টার প্রতীকী পথ অবরোধের ডাক দিল কংগ্রেস। শনিবার জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো বলেন, ‘‘বালির কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করে বিক্রি নিয়ে যথেচ্ছাচার চলছে। বালির দাম নিয়ে বিভ্রান্ত মানুষজন। দাম নির্ধারণ করে দিক সরকার।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘বালিঘাট নিয়ে নতুন পদ্ধতি চালু হয়েছে। এখন নিলামে ঘাটের ইজারা দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাজার দরের ভিত্তিতে তিনি বালির দর ঠিক করেন।’’
জানুয়ারিতে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার জেলায় এসে বালির অত্যাধিক দাম নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন। তাঁরা জানিয়েছিলেন, বালির চড়া দাম থাকায় বাংলার বাড়ি প্রকল্পের এক লক্ষ ২০ হাজার টাকায় কী ভাবে বাড়ি তৈরি করা যাবে? মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ফিরে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে তিনি যথাস্থানে কথা বলবেন।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপালের প্রশ্ন, ‘‘সেই বৈঠকের পরে তিন সপ্তাহ পেরিয়েছে। বালির দাম নাগালে আসা দূরঅস্ত্, উল্টে দাম বেড়ে যাচ্ছে।’’
তাঁর দাবি, জেলার বালি ঘাট এক কোটি থেকে তিন কোটি টাকায় নিলাম হচ্ছে। যিনি তিন কোটিতে বালিঘাটের ইজারা পাচ্ছেন, তিনি ইচ্ছামতো বালির দাম নির্ধারণ করছেন। যে কারণে বিভিন্ন জায়গায় বালির দাম বিভিন্ন। কোনও ইজারাদার নিজের ইচ্ছা মতো কেন বালির দাম বেঁধে দেবেন? কেন সরকারি নিয়ন্ত্রণ থাকবে না? নেপালের দাবি, ‘‘যাঁরা বালি কিনছেন তাঁদের থেকে রয়্যালটি বাবদ টাকা নেওয়া হলেও রসিদ দেওয়া হচ্ছে না। তার বদলে টোকেন দেওয়া হচ্ছে। সেখানেই বিভিন্ন দাম লেখা হচ্ছে। নির্দিষ্ট রসিদ কেন দেওয়া হবে না? প্রশাসনের কাছে সদুত্তর না পেয়ে পথে নামছি। তাতে প্রশাসনের সাড়া না পেলে আদালতের দ্বারস্থ হব।’’
জেলা পরিষদের বন ও ভূমি বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ জয়মল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কোথাও যাতে চড়া দামে বালি বিক্রি না হয়, সে দিকে প্রশাসন নজর রাখছে। আমরা ফের প্রশাসনকে বিষয়টি জানাব।’’ তবে বালির সরকারি দাম নির্ধারণ নিয়ে তিনি
মন্তব্য করতে চাননি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)