Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

‘দিদিকে বলো’ জনসংযোগ ঘিরে ‘দ্বন্দ্ব’ শাসকদলে

শুক্রবার পুরুলিয়া ২ ব্লকের সদর বোঙাবাড়িতে দিদিকে বলো কর্মসূচীকে সামনে রেখে জনসংযোগ কার্যালয় খোলে এক পক্ষ। ব্লক সভাপতি, জেলা পরিষদ সদস্য-সহ ব্লক নেতৃত্বের একাংশকে দেখা গিয়েছিল সেখানে।

আলাদা-আলাদা: (বাঁ দিক থেকে) শুক্রবার ও শনিবারে পুরুলিয়া ২ ব্লকে তৃণমূলের দু’পক্ষের কর্মসূচি। নিজস্ব চিত্র

আলাদা-আলাদা: (বাঁ দিক থেকে) শুক্রবার ও শনিবারে পুরুলিয়া ২ ব্লকে তৃণমূলের দু’পক্ষের কর্মসূচি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৯ ০২:১৫
Share: Save:

একের পর এক ভোটে পরাজয়ের ধাক্কার পরেও ‘দ্বন্দ্ব’ রোগ থেকে মুক্ত হল না পুরুলিয়া ২ ব্লকের তৃণমূল। সাংগঠনিক ফাঁকফোকর মেরামত করতে শুরু হওয়া ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতেও ফের ধরা পড়ল ওই ব্লকে দলের নেতা-কর্মীদের একাংশের সেই ফাটল। যা নিয়ে অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল

শুক্রবার পুরুলিয়া ২ ব্লকের সদর বোঙাবাড়িতে দিদিকে বলো কর্মসূচীকে সামনে রেখে জনসংযোগ কার্যালয় খোলে এক পক্ষ। ব্লক সভাপতি, জেলা পরিষদ সদস্য-সহ ব্লক নেতৃত্বের একাংশকে দেখা গিয়েছিল সেখানে। পরের দিন বোঙাবাড়ি কমিউনিটি হলে সেই একই কর্মসূচিকে সামনে রেখে বৈঠক করে দলের অন্য পক্ষ। ব্লকের কার্যকরী সভাপতি, প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্য, প্রাক্তন ব্লক সভাপতি-সহ হাজির ছিলেন দলের অন্য পক্ষ। একই কর্মসূচিতে দলের দুই গোষ্ঠীর পিঠোপিঠি অনুষ্ঠান দ্বন্দ্বেরই জের বলে মনে করছেন নিচুতলার কর্মীরা। কারণ দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।

নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘‘এই কর্মসূচিতে জনসংযোগ কেন্দ্র খোলার কোনও নির্দেশ নেই। দলের কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। এটাই বড় কথা। দলবিরোধী কাজের কোনও জায়গা নেই।’’

জেলা তৃণমূলের অন্দরের খবর, ২০১৬ সালে দলীয় দ্বন্দ্বের কারণে এই বিধানসভা কেন্দ্র হাতছাড়া হয়। পঞ্চায়েত ভোটের ফলও তৃণমূলের পক্ষে স্বস্তিদায়ক হয়নি। লোকসভা ভোটেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে এখানে।

বছরখানে আগে দ্বন্দ্ব এখানে এতটাই প্রকট ছিল যে বোঙাবাড়িতে পাশাপাশি দু’টি দলীয় কার্যালয় চলত। তা নিয়ে বিভ্রান্তি ছিল কর্মীদের মধ্যে। শেষে দলের তৎকালীন জেলা পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে একটি কার্যালয় বন্ধ হয়। এতদিন সে ভাবে চললেও দিদিকে বলো কর্মসূচিকে ঘিরে জনসংযোগ কেন্দ্র নামে বকলমে সেই বন্ধ কার্যালয় ফের চালু করা হয়েছে বলে দলের কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন।

শনিবার যাঁরা বোঙাবাড়িতে বৈঠক করেন, তাঁদের যুক্তি: ‘‘১০ অগস্ট বৈঠক করব বলে আমরা ৫ অগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তা জানতে পেরে ব্লক সভাপতি ঠিক তার আগের দিন আলাদা ভাবে এই কর্মসূচি করলেন।’’ ওই পক্ষের তরফে দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি কাঞ্চন দিগর প্রশ্ন তোলেন, ‘‘ব্লক সভাপতি এত দিন কেন ওই কর্মসূচির জন্য বৈঠক ডাকেননি? দলের অন্য কর্মসূচি করতেও তাঁকে দেখা যায়নি। ব্লক কার্যালয়েও তিনি কোনও দিন কেন বসেননি?’’ দলের জেলা কমিটির সদস্য সমীরণ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘কোনও নেতা যদি দলকে ঠিক মতো পরিচালনা করতে না পারেন, তাহলে কি আমরা বসে থাকব? তাই আমরাই এলাকায় দলের হাল ধরতে নেমেছি।’’

তাঁদের ওই সভায় হাজির ছিলেন প্রয়াত প্রাক্তন জেলা তৃণমূল সভাপতি কেপি সিংহ দেওয়ের ছেলে দিব্যজ্যোতি প্রসাদ সিংহ দেও। তিনিও অভিযোগ করেন, ‘‘এই ব্লকে দলের মধ্যে একটা ছন্নছাড়া অবস্থা চলছিল। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মতো কর্মসূচিগুলি ঠিকমতো পালিত হচ্ছিল না। লোকসভাতেও ফলও ভাল হয়নি। এই অবস্থায় দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে কর্মীদের ডাকা ওই সভায় গিয়েছিলাম।’’

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শুক্রবার জনসংযোগ কার্যালয় খুলে থাকা নেতারা। ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রভাস মাহাতোর দাবি, ‘‘রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশেই দিদিকে বলো কর্মসূচির সূচনা করেছি। কিন্তু অনেকেই সেই কর্মসূচিতে না এসে পরের দিন পাল্টা একই কর্মসূচি করে ঠিক করলেন না। দল আমাকে সভাপতি করেছে। আমাকে না মানা মানে দলকেই অমান্য করা।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে দলের জেলা সভাপতি বা পর্যবেক্ষকের কাছে নালিশ করতে পারে।’’

তাঁর তরফে জেলা পরিষদ সদস্য হলধর মাহাতো বলেন, ‘‘জনসংযোগের জন্য কোথাও একটা কার্যালয় দরকার। না হলে কোথায় মানুষ আসবেন? কারণ অন্য কার্যালয়টি অনেকেই এড়িয়ে চলেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Conflict TMC Didi Ke Bolo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy