Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বিষ্ণুপুর হাসপাতাল
Bishnupur Hospital

স্ট্রেচার পেতেই হয়রান পরিজন

এ দিন দেখা গিয়েছে, কিছু রোগীকে পরিজনেরাই কোনও রকমে লিফট পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়ে ওয়ার্ডে পৌঁছে দিচ্ছেন। তাঁদের এক জন বলেন, ‘‘এমন ভোগান্তি হবে ভাবিনি। বেশি কিছু বললে আবার যদি চিকিৎসা না হয়, সেই ভয় রয়েছে।

পাঁজাকোলা: শনিবার জরুরি বিভাগের পথে অসুস্থ বৃদ্ধ। নিজস্ব চিত্র

পাঁজাকোলা: শনিবার জরুরি বিভাগের পথে অসুস্থ বৃদ্ধ। নিজস্ব চিত্র

অভিজিৎ অধিকারী
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:৪৯
Share: Save:

দিনের বেলায় টাকা দিলে যদি বা দু’-একটা স্ট্রেচার মেলে, রাতে সব উধাও। এমনই অভিযোগ করছেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়া লোকজন। অভিযোগ উঠেছে, দালালদের উৎপাতের। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার তড়িৎকান্তি পালও বলেন, ‘‘কিছু লোক স্ট্রেচার লুকিয়ে রেখে ঘাটতি তৈরি করছে।’’এক অসুস্থ মহিলাকে হাসপাতালের লিফটের মেঝেয় শুইয়ে নিয়ে যাওয়ার ছবি শুক্রবার রাতে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় ছড়িয়ে পড়ে (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার)। দাবি করা হয়েছে, সেটি বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের। এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। শনিবার সকালে ধাদিকা থেকে রোগী নিয়ে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এসেছিলেন সুবল ঘোষ। স্ট্রেচার না পেয়ে কোলে করে রোগীকে জরুরি বিভাগে নিয়ে গিয়েছেন তিনি। সুবলবাবু বলেন, ‘‘রাতবিরেতে রোগীকে ডায়ালিসিস ইউনিটে নিয়ে যেতে গিয়ে খুব বিপদে পড়েছিলাম। কোনও স্ট্রেচারই এখানে পাওয়া যায় না।’’

এ দিন দেখা গিয়েছে, কিছু রোগীকে পরিজনেরাই কোনও রকমে লিফট পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়ে ওয়ার্ডে পৌঁছে দিচ্ছেন। তাঁদের এক জন বলেন, ‘‘এমন ভোগান্তি হবে ভাবিনি। বেশি কিছু বললে আবার যদি চিকিৎসা না হয়, সেই ভয় রয়েছে।’’কিছু রোগীর পরিজনেরা অভিযোগ করেছেন, হাসপাতাল চত্বরে দশ-বারো জন রয়েছেন। স্ট্রেচার পেতে হলে তাঁদের একশো-দেড়শো টাকা দিতে হয়। এ দিন হাসপাতালে উপস্থিত দুই মহিলা বলেন, ‘‘আমরা ক’টা পয়সা রোজগারের জন্য স্ট্রেচার ঠেলি। হাসপাতালে এখন মাত্র দু’টি স্ট্রেচার ব্যবহার হচ্ছে। বাকিগুলি ভেঙে গিয়েছে।’’ ভারপ্রাপ্ত সুপার তড়িৎকান্তিবাবুর দাবি, স্ট্রেচারের কোনও অভাব নেই। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে রাখা আছে। জরুরি বিভাগেও আছে একটি। ‘স্টোর’-এ রয়েছে নতুন আরও চারটি স্ট্রেচার। স্ট্রেচারের বিষয়টি তত্ত্বাবধান করেন এক জন সিস্টার-ইন-চার্জ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মী বলেন, ‘‘বাইরের কিছু লোক দিনে স্ট্রেচার ঠেলার নাম করে টাকা আদায় করে। রাতে ওরাই স্ট্রেচার লুকিয়ে রাখে।’’

স্ট্রেচার ঠেলার জন্য হাসপাতাল কাউকে রাখেনি বলে জানিয়েছেন সুপার। স্ট্রেচার নিয়ে দালালির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে হাসপাতালের তরফে এক বার তৎপরতা শুরু হয়। কিন্তু কিছু নেতার চাপে বেশি দূর এগনো যায়নি।’’ ওই হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য তথা তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কিছু মানুষ দলের নাম করে নিজেদের আখের গোছানোর চেষ্টা করছেন। সরকার ষোলো আনা পরিষেবা দিলেও তাই মানুষের কাছে তা পৌঁছচ্ছে না।’’তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি শ্যামল সাঁতরা বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bishnupur Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy