কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেও খারিজ হয়ে গেল রাজ্যের আর্জি। সোমবার বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানাল, ধর্মতলায় পূর্বনির্ধারিত দিন পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভ চালাতে পারবেন চিকিৎসকেরা। সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বহাল রাখল তারা। তবে সিঙ্গল বেঞ্চের দেওয়া শর্ত একটু কড়া করল ডিভিশন বেঞ্চ। তারা জানাল, ২০০ জনের পরিবর্তে অবস্থানে উপস্থিত থাকতে পারবেন ১০০ জন। সেই সঙ্গে চিকিৎসকদের রাজ্যের প্রস্তাব বিবেচনা করে আদালতকে জানাতে বলেছিল ডিভিশন বেঞ্চ। চিকিৎসকদের আইনজীবী জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের কর্মসূচির পরিবর্তন করা যাবে না।
বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ ধর্মতলায় ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চিকিৎসকদের অবস্থান বিক্ষোভ করার অনুমতি দিয়েছিলেন। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে সওয়াল করে জানান, ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন। ওই সময়ে পার্ক স্ট্রিটে মানুষের ভিড় হয়। ধর্মতলা দিয়ে বহু মানুষ যাতায়াত করেন। সে কারণে ২৪ এবং ২৫ ডিসেম্বর ধর্মতলায় অবস্থান বন্ধ রাখা হোক। ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার জানিয়ে দেয়, সিঙ্গল বেঞ্চ যে রায় দিয়েছে, তা-ই বহাল থাকবে। পাশাপাশি, তারা চিকিৎসকদের বলেছে, দু’দিন অবস্থান বন্ধ রাখার জন্য রাজ্য যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা বিবেচনা করে আদালতকে জানানো হোক। সেই মতো আদালত পরবর্তী নির্দেশ দেবে। চিকিৎসকদের আইনজীবী আদালতে জানিয়ে দেন, তাদের কর্মসূচি দিন-রাতের। তাঁরা এই কর্মসূচির কোনও পরিবর্তন করবেন না।
আরও পড়ুন:
আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় ৯০ দিন পেরিয়ে গেলেও চার্জশিট দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচারের দাবিতে নতুন করে আবার পথে নেমেছেন চিকিৎসকেরা। সিবিআই চার্জশিট দিতে না-পারায় এই মামলায় ধৃত আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের জামিন মঞ্জুর করে আদালত। এরই প্রতিবাদে ধর্মতলায় ধর্না কর্মসূচি করতে চেয়েছিলেন প্রতিবাদী চিকিৎসকদের একাংশ।
ধর্নার অনুমতি চেয়ে জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে ইমেল করেছিল। পুলিশ অনুমতি দেয়নি। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছিল, ডোরিনা ক্রসিংয়ের মতো জায়গায় এই ধরনের কর্মসূচির জেরে যানজট সৃষ্টি হতে পারে। প্রাক্ বর্ষবরণ এবং বড়দিনের কারণে ধর্মতলায় প্রচুর ভিড় হয়। ধর্মতলার মতো ব্যস্ত জায়গায় তাই ধর্না কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। এর পরই ধর্নার অনুমতি চেয়ে হাই কোর্টে যায় জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স। সিঙ্গল বেঞ্চ অনুমতি দিয়েছিল। এ বার সেই রায় বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ।