Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Tigress Zeenat

টোপে মোষ, শুয়োর থেকে ছাগলও

সকালের দিকে বার দুয়েক ট্র্যাকারে হদিস মেলে। তার পরে দীর্ঘ অপেক্ষা। বেলার দিকে ফের ঘাঘরার জঙ্গল থেকে কম-বেশি ২ কিলোমিটার দূরে রাইকা পাহাড়ের জঙ্গলে জ়িনতের সন্ধান মেলে।

বাঘিনির ভয়ে আতঙ্কিত ঝাড়গ্রাম।

বাঘিনির ভয়ে আতঙ্কিত ঝাড়গ্রাম। —প্রতীকী চিত্র।

রথীন্দ্রনাথ মাহাতো
বান্দোয়ান শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:২৪
Share: Save:

‘জিপিএস ট্র্যাকার’-এ টানা নজরজারি। মাঝে গিয়ে টোপ হিসেবে মোষ, শুয়োর, ছাগল দিয়ে আসা। বাঘিনি জ়িনতকে কব্জা করতে রবিবার দিনভর বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়ের জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় যুদ্ধকালীন তৎপরতা দেখা গেল বনকর্মীদের নানা দলের মধ্যে। চলল উৎসাহী মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরানোর কাজও।

ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ির জঙ্গল পেরিয়ে বছর তিনেকের পূর্ণবয়স্ক বাঘিনি ভোরে ঢুকেছে জেলার জঙ্গলে। খবর পেতেই সকাল সকাল বান্দোয়ানের যমুনা বনাঞ্চলের ঘাঘড়া গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে এসে পৌঁছয় ঝাড়খণ্ড বন দফতর ও ওড়িশার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের বনকর্মীদের দল। আসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন থেকে বিশেষ দল। ছিলেন কংসাবতী (দক্ষিণ) বন বিভাগের আধিকারিকেরা।

সকালের দিকে বার দুয়েক ট্র্যাকারে হদিস মেলে। তার পরে দীর্ঘ অপেক্ষা। বেলার দিকে ফের ঘাঘরার জঙ্গল থেকে কম-বেশি ২ কিলোমিটার দূরে রাইকা পাহাড়ের জঙ্গলে জ়িনতের সন্ধান মেলে। এক বনকর্তা বলছিলেন, “জঙ্গলে নেটওয়ার্কের সমস্যা অর্থাৎ ‘শ্যাডো জ়োন’ থাকায় সব সময় বাঘিনিকে নজরে রাখা যাচ্ছে না।” সন্ধ্যার দিকে এক বার বাঘিনির সন্ধান মিললেও অবস্থান বিশেষ বদলায়নি।

পরে, বাঘিনির অবস্থান অনুযায়ী ফাঁদ পাতার ব্যবস্থা হয়। শুরুতে দু’টি মোষ আনা হলেও পরে বিকেলের দিকে দু’টি শুয়োর, ছাগল নিয়ে জঙ্গলের ভিতরে ঢোকেন বনকর্মীরা। সঙ্গে ছিল খাঁচাও। রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বনপাল (পশ্চিম চক্র) সিঙ্গরম কুলন্দাইভেল বলেন, “যে জঙ্গলে বর্তমানে বাঘিনিটির ‘লোকেশন’ রয়েছে, সেখান থেকে ঝাড়খণ্ড বেশি দূরে নয়। মনে করা হচ্ছে, সে দিকেও চলে যেতে পারে।” তিনি আরও জানান, খাবার টোপ দিয়ে বাঘিনিটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে কাবু করার চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে বনকর্মীরা কাজ করছেন।

এ দিকে, বাঘ আসার খবর ছড়াতেই জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় ভিড় জমতে শুরু করে। রাজেন হাঁসদা, ক্ষুদিরাম টুডুরা বলেন, “ভয় তো লাগছেই। তবে কখনও কাছ থেকে বাঘ দেখিনি। যদি একটু দেখতে পাওয়া যায়, সেই আশায় এসেছি।” জঙ্গলের পাশের জমিতে ধান চাষ করা ডুঙ্গরিডি গ্রামের মুখি সরেনের কথায়, “বন দফতরের গাড়ি গ্রাম দিয়ে ঢুকতে দেখেছি। ভয় তো লাগছেই। তার মধ্যেও কাজ করতে হচ্ছে।” রাইকা পাহাড়ের জঙ্গল লাগোয়া কেশরা গ্রামে হোম-স্টে চালানো সঞ্জয় ভকতও জানান, শনিবার পর্যটকেরা বেরিয়ে গিয়েছেন। তবে ২৪ ডিসেম্বর থেকে বুকিং রয়েছে। আতঙ্ক রয়েছেই।

বনকর্তাদের একাংশ জানান, শেষ ‘লোকেশন’ অনুযায়ী পাতা ফাঁদের একশো মিটারের মধ্যে বাঘিনি রয়েছে। এই মুহূর্তে তিনটি দল ঘুমপাড়ানি গুলি নিয়ে জঙ্গলে তৎপর রয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ‘থার্মাল ইনফ্রারেড’ ড্রোন ক্যামেরাও। ওড়িশার দলের সঙ্গে থাকা কংসাবতী (দক্ষিণ) বনবিভাগের ডিএফও পূরবী মাহাতো, পুরুলিয়া বনবিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহেরা জানান, সব রকম সচেতনতামূলক পদক্ষেপ করা হচ্ছে। জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় প্রচার চালানো হয়েছে। ১৫টি দল কাজ করছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Tigress Banduan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy