এই গাড়িরই উদ্বোধন হল বৃহস্পতিবার। বোলপুরে। —নিজস্ব চিত্র।
‘ওয়াল অফ হেল্প’ এর পরে এ বার চলমান গাড়ি ‘ফিরে দেখা’। বীরভূম জেলা পুলিশের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বিকেলে এই চলমান গাড়িটির উদ্বোধন হয় বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে।
‘ফিরে দেখা’ একটি চলমান গাড়ি। যাতে গৃহস্থালির সামগ্রী, জামা-কাপড়, খেলনা সামগ্রী, ওষুধ, শিক্ষা সামগ্রী জমা করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। গাড়ি ভর্তি হয়ে গেলে জমা হওয়া প্রত্যেকটি জিনিস নির্দিষ্ট সময় অন্তর চাহিদা অনুযায়ী দুঃস্থ মানুষদের বিলি করা হবে। জমা হওয়া ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দুঃস্থ রোগীর কাছে কিংবা দাতব্য চিকিৎসালয়ে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। যদিও নগদ টাকা কিংবা খাবার জিনিস এই চলমান গাড়ির মধ্যে জমা করতে নিষেধ করা হয়েছে। বোলপুর সহ সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন স্কুল, ক্লাব, সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দায়িত্বে পাঁচ থেকে সাত দিন করে গাড়িটি থাকবে।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, এমন সাধু উদ্যোগের নেপথ্যে রয়েছেন বোলপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অম্লানকুসুম ঘোষ। তিনি বদলি হয়ে চলে যাচ্ছেন কোচবিহার জেলায়, অতিরিক্ত জেলা পুলিশের পদেই। বোলপুরে কাজের শেষ দিনে চালু করেন চলমান গাড়িটি। বছর চারেক আগে বোলপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন অম্লানকুসুমবাবু। পরে পদোন্নতি হয়ে বোলপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হন। অনেকেই মনে করেন, শহরের উন্নয়নমূলক অজস্র কাজ করেছেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশতেও তাঁর জুড়ি ছিল না।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়িটি প্রায় তিন কুইন্টাল ওজন নিতে পারবে। জল ঢুকবে না, জিনিস বাইরে থেকে বের করা যাবে না। কোন খাপে কী দেওয়া যাবে তা স্পষ্ট করে উল্লেখ করা আছে। গাড়ির ভিতরে আলাদা বাক্স রয়েছে, যাতে জিনিসগুলি মিশে না যায়। তবে গাড়িটির যাতে কোনও ভাবেই অব্যবহার কিংবা অপব্যবহার না হয় সেই দায়িত্ব নিতে হবে শহরবাসীকে। বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয়কুমার সাধু বলেন, ‘‘এ রকম অনেক জিনিস রয়েছে যেগুলি না রাখার, আবার না ফেলার। সেই সব জিনিস এই গাড়িতে দিলে সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন হবে। আজ থেকে যাত্রা শুরু হল। সবাইকে পাশে থাকতে হবে।’’
বোলপুর মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক অরিত্র চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘সকলে মিলে একসঙ্গে এই প্রকল্প চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তবেই এই উদ্যোগ সফল হবে।’’ জেলা পুলিশের এই প্রকল্পকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে ছাত্রছাত্রী সকলেই। পড়ুয়া ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়, শেখর রায়, ঝিনুক সাহারা বললেন, ‘‘চেষ্টা করব এই দায়িত্ব যাতে ঠিক করে সামলাতে পারি।’’ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তৎকালীন জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী এবং প্রশাসনের উদ্যোগে উদ্বোধন হয়েছিল ‘ওয়াল অফ হেল্প’। বর্তমানে একটি সংস্থা সেটির তত্ত্বাবধান করে। খাবার ছাড়া প্রায় প্রত্যেকটি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস সেখানে মানুষ দিয়ে যান। এই একই কাজ করবে ‘ফিরে দেখা’ নামের চলমান গাড়িটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy